মসজিদের দেয়ালের গায়ে ভেসে উঠেছে ৭ বছর আগে কবর দেয়া এক লাশের প্রতিচ্ছবি। মসজিদের পাশে রয়েছে একটি মুরগীর খামার। এই খামারে আবর্জনা স্তুপ হয়ে মসজিদটির পাশে। এই আবর্জনা থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদের দেয়ালে প্রতিচ্ছবি আকৃতির ছাপ ফেলতে পারে। কিংবা দাবি অনুযায়ী হতেও পারে লাশের প্রতিচ্ছবি। যা দেখতে ভিড় হাজার মানুষের ভিড় জমেছে চৌদ্দগ্রামে।
কুমিল্লায় আজকের সকল পত্রিকায় এ সংবাদটি ছেপেছে। নাইমূল ইসলাম খানের দৈনিক আমাদের কুমিল্লার লিংক- Click This Link
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মৃত্যুর সাত বছর পর এক হাক্কানী আলেমের লাশের প্রতিচ্ছবি মসজিদের দেয়ালে ভেসে উঠেছে, এই প্রচারনায় দৃশ্যটি এক নজর দেখার জন্য গত দুই দিনে ওই স্থানে নারী-পুরুষসহ লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মধ্যম মানিকপুর গ্রামের জামে মসজিদে। এই নিয়ে এলাকায় মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
গতকাল সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মধ্যম মানিকপুর কবরস্থান সংলগ্ন জামে মসজিদের উত্তর পাশের দেয়ালে লাশের আকৃতির প্রতিচ্ছবির দাগ। তা এক নজর দেখার জন্য পার্শ্ববর্তি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় করছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার জোহরের নামাজের পর মুসল্লীরা মসজিদের দেয়ালে লাশের এই প্রতিচ্ছবি দেখতে পান। মূহর্তের মধ্যে ঘটনাটি জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিষয়ে স্থানীয় সূত্র ও মানিকপুর দারুছসুন্নাত বালিকা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ আবদুল জলিল মিয়াজী জানান, ২০০২ সালের ৯ জানুয়ারি বুধবার এই গ্রামের মাওলানা কাজী নুরুল ইসলামের মৃত্যুর পর তাকে ওই মসজিদের পাশে কবরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি উপজেলার ছুপুয়া ছফরিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় শিক্ষক ছিলেন। এর আগে তিনি প্রথমে মৌকরা দারুছসুন্নাত মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। তখন তিনি মৌকরা মরহুম পীর মাওলানা ওয়ালী উল্লাহর মুরিদান ও খলিফা ছিলেন।
এলাকাবাসীরা জানান, মৃত্যুর পরে কবরস্থানের উপরে তার ছেলে মোঃ আবু মিয়া ও জাফর মিয়া একটি পল্ট্রি ফার্ম তৈরি করেন। এর ফলে কবরস্থানে বিভিন্ন আর্বজনায় র্দুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় নামাজের ব্যাঘাত ঘটায় দিন দিন মসজিদে মুসল্লি সমাগম কমতে থাকে। এছাড়াও মসজিদের দ্বিতল ভবনের সিঁড়িটি মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলামের কবরের উপর নির্মিত হয়। এই দুটি উনাকে অসম্মান করার কারণে তিনি তাদেরকে সর্তকতা করার জন্য লাশের প্রতিচ্ছবির মধ্য দিয়ে মসজিদের দেয়ালে ভেসে উঠছেন। মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আবু মিয়া ও জাফর মিয়ার জানান, পল্ট্রি ফার্মের কারণে নয়, আমার বাবার কবরের উপরের দিয়ে সিঁড়ি নির্মান হওয়ায় লাশের এই প্রতিচ্ছবি দেখা দিতে পারে।
এলাকাবাসী কবরস্থানের জায়গা থেকে দুগন্ধযুক্ত পল্ট্রি ফার্মটি সরিয়ে ফেলতে জোর দাবি জানান। লাশের প্রতিচ্ছবি সম্পর্কে ওই মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা তাজুল ইসলাম জানান, বুধবার জোহরের নামাজের পর মুসল্লিরা মসজিদের উত্তর পাশের দেয়ালে ঠিক কবরের উপরে একটি লাশের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেয়ে আমাকে জানালে আমিও তা দেখতে পাই। খবর পেয়ে মিয়াবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলামের ছাত্র মাওলানা আবদুল মতিন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের প্রতিচ্ছবি দেখে এক পর্যায়ে তিনি মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলামের সম্মানে ওই লাশের প্রতিচ্ছবি ডেকে রাখার ব্যবস্থা করেন। এ সময় উপস্থিত হাজার হাজার উৎসুক জনতা তা সরিয়ে ফেলে। মাওলানা আবদুল মতিন সাংবাদিকদের জানান, মরহুম মাওঃ কাজী নূরুল ইসলাম ছিলেন একজন হাক্কানী আলেম ও আল্লাহর ওলি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলাম ছিলেন একজন আল্লাহর ওলি, এতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ আমি উনার ছাত্র। উনি জীবত থাকা অবস্থায় একাধিকবার হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে স্বপ্ন দেখেছেন বলে আমাদেরকে বলেছেন।
তিনি বলেন, আমরা উনাকে যথাযথ সম্মান না করায় তিনি আমাদেরকে স্মরন করিয়ে দিচ্ছে। তবে ওই স্থানটি ডেকে দেওয়া উচিত হয়নি। এটা মরহুম মাওলানা কাজী নূরুল ইসলামের লাশের প্রতিচ্ছবি এতে কোনো সন্দেহ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



