somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শূন্যভুবনের মেহেদী
চারপাশের সব অসাধারণ প্রতিভাবানদের ভিড়ে অতি সাধারন একজন। ভালোবাসি বৃষ্টিতে ভিজে বৃষ্টিকে অনুভব করতে, ভালোবাসি কোন এক জোছনা রাতে আঁধারে মিশে যেতে, ভালোবাসি বন্ধুত্ব, প্রান খোলা হাসি, গান, কবিতা আর আঁধারে হারিয়ে যাওয়া একাকী।

'উধাও' হয়ে যাওয়া শুদ্ধধারার দেশি থ্রিলার! (সিনেমা রিভিউ)

০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০১৩ সালের শেষ দিকে অমিত আশরাফ নামের এক স্বপ্নবাজ তরুণ বানালেন 'উধাও' নামের একটি সিনেমা। তার সাথে শব্দ পরিচালনার কাজ করেছেন কেনেথ এল জনসন; যার আছে দ্য লাস্ট সামুরাই, দ্য ইতালিয়ান জব, মিশন ইম্পসিবল থ্রি এর মত বিখ্যাত ও সফল সিনেমায় কাজ করার অভিজ্ঞতা। স্বভাবজাত মুন্সিয়ানা দিয়ে তিনি 'উধাও' এর প্রতিটি দৃশ্যে এমনভাবে শব্দ গেঁথেছেন, আপনি না চাইলেও আপনাকে মুগ্ধ হতে হবে। আর ভিডিও সম্পাদনা করেছেন ডেভিড ডাইপারস্টেইন। পরিচালনা করেছেন নিউইয়র্ক থেকে 'সিনেমা' নিয়ে পড়াশোনা করে আসা অমিত আশরাফ নিজেই। সবাই মিলে যে গল্পটা বলেছিলেন সেটা কুড়িয়ে এনেছিল ৭টি আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড। তখনকার সময়ের দেশীয় প্রেক্ষাপটে এবং দেশীয় দর্শক মানসিকতা, টেকনিক্যাল ক্রুটি আর হাজারখানেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও 'উধাও' ছিল একটি ভিন্ন কিন্তু শক্তিশালী প্রচেষ্টা। সেই সময় 'উধাও' কে বলা হয়েছিল একটি শুদ্ধধারার দেশি থ্রিলার!
খুবই আফসোসের বিষয়, অসাধারণ এই সিনেমাটি তার নামের মতোই যেন 'উধাও' হয়ে গেছে। মুক্তি পেয়েছিল সিনেপ্লেক্স সহ মাত্র ৫টি হলে। তারকাসমৃদ্ধ না হওয়াটাও মনে হয় কম হল পাওয়ার একটি কারণ ছিল। এছাড়া প্রযোজক-পরিবেশকদের প্রচারণার অভাবও হয়তো এই সিনেমাটি 'উধাও' হওয়ার আরেকটি কারণ।
অনেকদিন পর সিনেমাটা একটা অনলাইন স্ট্রিমিং সাইটে দেখলাম। সাথে সাথে মনে হল, এই সিনেমাটাকে আরেকবার 'উধাও' হতে দেওয়া যাবে না। তাই সারাদিনের ব্যস্ততার ক্লান্তি থাকা সত্ত্বেও লিখতে বসলাম।


গল্প সংক্ষেপ: সিনেমা শুরু হয় পায়ে শিকল বাঁধা আর গলায় সিমেন্টের ঢালা ঝুলানো এক যুবককে দিয়ে। গ্রামে নিজের স্ত্রী-সন্তানকে রেখে শহরেই আঁটকে আছে লোকটা, তাই তার পরিবারের কাছে সে উধাও। সে পালাতে গিয়েও পালাতে পারে না, স্কুল-ভ্যান চালক বাবু তাকে ধরে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। স্বেচ্ছায় উধাও হওয়া এই মানুষগুলোকে ধরে বেঁধে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াই যেন তার কাজ। কেন বাবু এই কাজ করছে? এর পেছনে তার নিজের গল্পটাই বা কী? ঘটনার স্রোতে বাবু কিডন্যাপ করে ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আকবর রহমানকে। ভয়ংকর সব অপরাধের সাথে যুক্ত আকবর সামনের নির্বাচনের জন্য আপাতত অপরাধ থেকে দূরে আছে। তার ইচ্ছে নির্বাচনে জিতে নতুন উদ্যমে সে আবার সবকিছু শুরু করবে। বাবু এই ভয়ংকর লোকটাকে কেন কিডন্যাপ করলো? কী চায় সে আকবরের কাছে? আর বাবুর উদ্দেশ্যের সাথে সাথেই এগোতে থাকে 'উধাও' নামের শ্বাসরুদ্ধকর সিনেমাটি।
গল্পটা স্লোপেসড, কঠিন আর টুইস্টেড হলেও নির্মাণ আর প্রেজেন্টেশনে আছে নির্মাতার সাবলীলতার নিপুণ ছাপ। প্রতিটা অভিনেতার পরিপাটি অভিনয়ে ডায়লগও ছিল অনেক সুন্দর আর সহজ। বাংলাদেশের কাশেম শাহবাজি আর বৃটিশ চিত্রগ্রাহক কায়েল হাসলপ- দুজন মিলে সিনেমাটোগ্রাফিতে প্রাণ দিয়েছেন। সাউন্ড ডিজাইনার কেনেথ জনসন ও মিউজিক ডিরেক্টর জ্যাকব জোফি কম্বো 'উধাও' এর মিউজিককে করেছেন প্রাণবন্ত আর দেশি। দুই হলিউডি মিলে এই সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ডে তবলা, সেতার, ঢোল, বাঁশি ইত্যাদি দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের এমন ব্যবহার যে আপনাকে একবার হলেও বলতেই হবে - বাহ!
অসাধারণ এই সিনেমাটা দেখে নিতে পারেন। মাত্র দেড় ঘণ্টার সিনেমার প্রতিটি মুহূর্ত আপনি উপভোগ করবেন।
সেইফ ও সিকিউরড অনলাইন ওয়াচ লিংক: এখানে
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×