somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেঁচে থাকা

১৪ ই মার্চ, ২০১২ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু সংখ্যক শক্ত সামর্থ্য নপুংসক আবশ্যক
যোগাযোগঃ +৮৮০১১১৯১১২০৫০০৫৪২
ছোট্ট কিন্তু আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপনটিতে চোখ আটকে গেলো। বিজ্ঞাপনটার সাদামাটা ভাবটাও আকর্ষিক হতে পারে। তবে সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো ছোট বিজ্ঞাপনটা কারো চোখে পড়ার কথা না এবং আমি নপুংসক না হওয়া সত্বেও আমার চোখে পড়েছে। আমার হন্টন জীবনে এমন অসংখ্য বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অসংখ্য বিজ্ঞাপনকে এড়িয়ে যেতে হয়েছে। কারন আমি বিজ্ঞাপন খুঁজে বেড়াই। একটা সহজলভ্য বিজ্ঞাপন। এই সাদামাঠা বিজ্ঞাপন আমার মনে কোনো পরিবর্তন না আনলেও তাকে রেখে দেওয়ায় যুক্তিযুক্ত মনে করলো অস্থিতিশীল মনটা। তাই তার স্থান পরিবর্তনে সময় নেয়নি খুব একটা। তাকে পকেটে পুরে হাঁটছি শহরটা। প্রিয় এবং ক্রমশ অচেনা হয়ে যাওয়া শহরটা পরিভ্রমন আমি উপভোগ করি। মাঝে মাঝে আমার সাথে কয়েকটা কানাগলিতে সঙ্গ দেয় আমারি মত অচ্ছুৎ কোনো সারমেয়। মাঝে মাঝে সোনালি পাখা মেলে উড়ে যায় কোনো বাজ যেনো বলতে চাই সতর্ক থেকো আমার মত। সতর্কতা কিংবা অসতর্কতা নিয়ে আগে ভাবতাম, তাতে পুড়তাম এখন আর সেটা হয় না। তাই তারস্বরে চেঁচিয়ে সাহায্য প্রার্থনারত কোনো চক্রযানকে আবদ্ধ অবস্থায় দেখে আহ্লাদিত হই। উপভোগ করতে চাই তীব্র কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা আবদ্ধ আত্মার শীৎকার। কিংবা কয়েক ঘা লাগিয়ে দেয় জনতার হাতে ধৃত অর্ধমৃত মানুষ নামক প্রাণীটিকে যে কিনা একটু আগেই বহিস্কৃত হয়েছে নিজের স্বজাতী থেকে। আমিও উল্লাসিত হই তাকে তার প্রাপ্যতা বুঝিয়ে দিতে পেরে কিংবা মর্মাহত হই তার প্রতি অপ্রতুল আপ্যায়নের জন্য। বৈচিত্রময় জীবনটা উপভোগ করি চলতে চলতে। সাথী কেউ নেই, কেউ থাকেনা। মাঝে মাঝে সহানুভুতি জুটে কিন্তু সেটা নিজস্ব হয়ে উঠে না, তবে তিরস্কার নিজস্ব সম্পত্তি হতে সময় নেয়না। হয়তোবা মানুষ সবসময় নেতিবাচতাকে আপন করতে পারে সহজেই তার নেতিবাচক স্বত্তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই। আমি এসব জানি না জানতেও হয়না। আমার দরকার বেঁচে থাকা, আছি বেঁচে। সেটা যেভাবেইই হোক। মাঝে মাঝে যে বেঁচে থাকাটা অর্থবহ করতে মন চাই না সেটা নই, তবে সেটার সীমাবদ্ধতা হইতোবা নির্জনে মৈথুনান্দ পর্যন্তই। তার জন্য আগে আমি হইতো আমার প্রেমিকাকে দোষারপ করতে পারতাম কিংবা অসংরক্ষনশীল অর্থটাকেও। কিন্তু এখন আর কাউকেও করিনা, করতেও পারিনা কিংবা পারা হয়ে উঠে না। শুধুমাত্র দিনের আলোয় খুঁজে ফিরি বর্নালী বিজ্ঞাপন আর সুখস্বপ্নে বিভোর হই রাতের নিঃস্তব্ধতায়। ওহ! যা ভুলে গিয়েছিলাম বিজ্ঞাপনটির কথা। পকেট হাতড়িয়ে অসংখ্য অসীমতার মাঝখান থেকে তুলে নিয়ে আসি বিজ্ঞাপনটিকে। সাদামাঠা কিন্তু আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন খুবি কম দেখেছি কিংবা দেখতে হয়েছে। জীবিকার তাগিদে না দেখাটাও শ্রেয় মনে হয়েছে কিংবা সুখস্বপ্ন বাধা দিয়েছে পরক্রমতার সাথে। একটা বাক্য এবং একটা যোগাযোগযন্ত্রের কিছু অবিনস্ত্য সংখ্যা। পকেটে যোগাযোগ যন্ত্রের জন্য কার্যকরি কিছু সঞ্চিত তাম্র প্রলুব্ধ করছে আমাকে আবার রাতের সুখের ক্রিয়া স্বপ্রনোদিত হয়ে বাধা দিচ্ছে। তারপরো লোভকে পরাস্ত করার মত ক্ষমতা অর্জন করতে না পারার দরুণ এগিয়ে যেতে হয় সন্নিকটে অবস্থিত যোগাযন্ত্রের বুথের দিকে। কারন আমাকে বেঁচে থাকতে হবে সেটা যেভাবেই হোকনা কেনো। বেঁচে থাকাটাই আসল আর স্বপ্ন সুখ সবকিছু অলীক একটা ভ্রম ছাড়া কিছুই নই। আমার আমি দিয়েই সবকিছু পরিবর্তন সম্ভবপর নই ভেবে দূরে ঠেলে দেই আমার নায়কদের যাদেরকে অনুসরন করবার কথা ছিলো আমারো। বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা হত্যা করে অনেক কিছুই, সেটা জীবনের একটা বহু এবং অবসম্ভাবি প্রয়োজনীয় অঙ্গ হলেও।

কিছু সংখ্যক শক্ত সামর্থ্য নপুংসক আবশ্যক
যোগাযোগঃ +৮৮০১১১৯১১২০৫০০৫৪২

হুম! বিজ্ঞাপনটা দেখে খুশি হয়ে উঠি আমি। বিজ্ঞাপনটা এরকমই আশা করছিলাম। কাউকে বিশ্বাস করার দিনটা পার করেছি বহু আগে। এখন অবিশ্বাসের দুনিয়া। আলোকময় শহরের আলোকউজ্জলতার মাঝেও কিছু আঁধার আছে তার মাঝখান থেকে বাঁচতে হবে। কারন বেঁচে থাকাটাই মুখ্য। আর বেঁচে থাকতে হলে হতে হয় পরক্রমশালী। আর পরক্রমশালী হতে হলে অন্য পরক্রমশালীদের অনুপস্থিতিটা বড়ই জরুরী। তাই নপুংসক তৈরীর ভাবনা হাতে নিয়েছি। খুব বেশি সময় নেবে না এটা সফল হতে আমি জানি। কারন লোভনীয় বিজ্ঞাপন তৈরীতে আমার জুড়ি মেলা ভার। তার প্রমাণ আমি ইতিমধ্যে পেয়ে গেছি। পেয়ে গেছি অসংখ্য দিশাহীন নপুংসকদেরকে। তাদের কাজ হলো নিজের জীবনটাকে নপুংসতার সাথে উপভোগ করে আমার জীবনটাকে উপভোগ্য করে তোলা। তাই বলতে বাধা নেই আজ আমার বিজয়টা খুব কাছাকাছি। শুনেছি অল্প কিছু সারমেয় আছে যারা বীর্যপাত করতে সম্ভবপর এবং অল্প কিছু মানুষ আছে তবে তাদের মানুষ নামক ক্যাটাগরী থেকে নাম উঠিয়ে নিয়েছে আমার অনুসরিত নপুংসকেরা। এদের কিছু করার নেই, আটকে আছে বেঁচে থাকা নামক অদ্ভুত মায়াময় জালে। সেখান থেকে বের হওয়া এত সোজা নয়। বেঁচে থাকাটাই লোভনীয় বিজ্ঞাপন সেই বিজ্ঞাপন থেকে আজ আমার এত প্রতিপত্তি। এত মসৃন চলার পথ। যে পথ সবসময় পরিষ্কার থাকে, চলতি পথে অসংখ্য নপুংসক দ্বারা আবৃত থাকে, চলে অভ্যর্থনায় সিক্ত করার প্রতিযোগ কিংবা ত্যাদের অস্পষ্ট কিস্তিখেউড়েও। যেটাও অস্পটতার দরুন আমার কাছে মধুর সংগীতের মতনি। তবে আমি জানি আমার উপস্থিতি তাদেরকে নতজানু হতে বাধ্য করে। আমার কথামতোই শহরের রাতদিন হয় আমার কথামতনি শহরের পূর্ব পশ্চিম ঠিক হয়। অস্বীকারকারিরা জলন্ত কড়াইয়ের তেলে সিক্ত হয়ে উচ্চস্বরি সারমেয়দের নিশ্চুপতার উপলক্ষ্য হয়ে উঠে। হ্যা, আমি ভালো আছি, বেঁচে আছি। একমাত্র বীর্যবান হয়ে বেঁচে থাকার মমার্থই আলাদা অসংখ্য নপুংসকের মাঝে। তারাই এখন আমাকে পরামর্শ দেয় কিভাবে সারমেয়দের চুপ করিয়ে রাখতে হয়, কিভাবে নামহীন, গোত্রহীন, অন্ধকারে থাকা অচ্ছুৎদের মাঝে লোভনীয় বিজ্ঞাপন সরবরাহ করতে হয়। তাদের অনুমেয় পরিকল্পনা নিয়ে বেঁচে থাকাটা অর্থবহ হয়ে উঠে কিংবা অর্থবহ ভেবে নিতে হয়। এভাবেই বেঁচে আছি, এভাবেই বেঁচে থাকতে হয়। বেঁচে থাকাটাই যেখানে মুখ্য সেখানে মস্তিস্ক নামক অপ্রয়োজনীয় অঙ্গের শূণ্যতাবোধ অর্থহীন নামক শব্দটার মাঝেই সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:৩৬
৩৭টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×