সমাজে পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখেছে আসিফ । চিকিৎসাবঞ্চিত মানুষের কষ্টের খবরগুলো ব্যথিত করেছে তাকে দিনের পর দিন । কারো অকাল মৃত্যুর খবরে স্বজন হারানোর যন্ত্রণা পেয়েছে সে । তাই ছাত্রজীবনেই আসিফ সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসক হয়ে চিকিৎসাবঞ্চিত মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করবে । লক্ষ্য পূরণে ভর্তি হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে । অথচ বাস্তবতা বড়ই নির্মম । মেডিকেল কলেজের ছাত্র হলেও কখনো ভাবেনি ঘুন পোকার মতো তার এ শরীরে বাসা বেধেছে 'Mandibular Sarcoma' নামক cancer । যার কারনে আসিফকে আজ নিজের চিকিৎসার জন্যে অন্যের সহায়তার দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে । মেধাবী ছাত্র আসিফের চরম চিকিৎসা সংকট কালে এমন-ই অভিব্যাক্তি তার স্কুল কলেজের একাধিক শিক্ষকের। তাঁদের মূল্যায়ন "পড়াশোনা সহ সব ভালোকাজে আসিফ ছিলো সবার সেরা"। তানভীর মোঃ আসিফ মুজতবা ওরফে আসিফের বন্ধুরা জানায়,"অসম্ভব প্রতিভাগুনে ছাত্রজীবনেই আসিফ শিক্ষাঙ্গনে হয়ে ওঠে খ্যাতিমান । অনেকের মাঝে সে ছিলো অসহ্য রকমের মেধাবী"। ধারাবাহিক ভাবে ক্লাসের এক নম্বর আসনটি দখলে রাখতে নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষাতেও ছিল সবার সেরা । যুক্তির মাঝে মুক্তি খুজতো সে । বিতার্কিক হিসেবে একাধিকবার জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় চুয়াডাঙ্গার প্রতিনিধিত্ব করেছে আসিফ । চুয়াডাঙ্গা জেলা স্কুলে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বরাবরই প্রথম স্থান ছিলো আসিফের দখলে । পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হয়েছিলো কেন্দ্রে অংশগ্রহণকারি সকল পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম । অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হয়েছিলো সারাজেলায় সেরা । এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পেয়েছিলো জিপিএ-৫ । বর্তমানে সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের M.B.B.S. প্রথম বর্ষের ছাত্র । নিজ আচরণ ও মেধার গুণে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক সবার প্রিয় আসিফ । সহপাঠীরা প্রিয় বন্ধুকে ফিরে পেতে নিজেরাই তহবিল সংগ্রহের কাজে নেমে পড়েছে ।
চুয়াডাঙ্গার পলাশপাড়ার বাসিন্দা,চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখার অফিস সহকারী সাফায়েতুল ইসলাম ও গৃহবধূ ফিরোজা ইসলাম দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আসিফ বড় । একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এই দম্পতির ছিল অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা;কিন্তু Mandibular Sarcoma এর কারনে ওই দম্পতির চোখে এখন ঘন কুয়াশা ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা চলাকালে ২০১০ সালের জুন মাসে প্রথম রোগটি ধরা পড়ে । রাজশাহী মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর সে ভারতের মুম্বাই এর টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে । অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে বর্তমানে ঢাকার ধানমন্ডি আহমেদ মেডিকেল সেন্টারে রেখে Chemotherapy দেয়া চলছে । অপারেশনের আগে নির্ধারিত ৬ টি Chemotherapy এর মধ্যে ২ টি দেয়া হয়েছে (১৮.০২.২০১০ অবধি)। বাকি ৪ টি Chemotherapy দেয়ার পর তাকে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হবে । আসিফের আরো উন্নত ও প্রয়োগসাধ্য চিকিৎসার জন্য নিতে হতে পারে সিংগাপুর,প্রয়োজন ৪০-৪৫ লক্ষ টাকার,এ মুহুর্তে যা তার পরিবারের একার পক্ষে ভাবাটাও দুঃসাহসিকতারই নামান্তর।
এদিকে সাফায়েত-ফিরোজা দম্পতি একমাত্র ছেলের চিকিৎসায় নিজেদের সহায় সম্বল সব বিক্রয় করার পাশাপাশি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে । এ অবস্থায় বাকি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার বিষয়টি তাদের ভাবিয়ে তুলেছে । আসিফের চিকিৎসার জন্য দুটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে । সমাজের বিত্তবানসহ সকলের প্রতি সাধ্যমতো সহায়তা দিতে আসিফের পরিবারের পক্ষ থেকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হয়েছে ।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা :
মোঃ সাফায়েতুল ইসলাম,সঞ্চয়ী হিসাব নং-১৩৫১৫,সোনালী ব্যাংক,চুয়াডাঙ্গা শাখা ।
অথবা
মোঃ সাফায়েতুল ইসলাম,সঞ্চয়ী হিসাব নং-১৬৮.১০১.৮৬৩৬০,ডাচ বাংলা ব্যাংক,কুষ্টিয়া শাখা।
এবং তথ্যের জন্য :
০১৭৩২৩০৩০০৩,০১৯১৫০০৭৫৭৬,০১৬৭৫৪৪৪১০০
ঢাকায় অসুস্থ সন্তানের শয্যাপাশে বসে থাকা আসিফের মা ফিরোজা ইসলাম নাড়িছেড়া ধন, প্রিয় সন্তানের পাশে থেকে আসিফকে বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, সেই সাথে নিজেও আশায় বুক বাঁধছেন,ছেলে সুস্থ হয়ে আবার বাড়ি ফিরবে,ঘরকে করবে আলোকিত । মেধাবীছাত্র আসিফের এ সংকটকালে জনপ্রিয় গায়ক ভুপেন হাজারিকার সুরেই বলতে হয় " মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য,একটু সহানুভূতি কী আসিফ পেতে পারে না...”
(বিঃ দ্রঃ লেখাটি চুয়াডাঙ্গার দৈনিক মাথাভাঙ্গা (http://www.mathabhanga.com) হতে সংগৃহীত ও অনুলিখিত।)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



