আমি স্বনামে নিজের সাম্প্রতিক ছবিতে ও বর্তমান পেশাগত পরিচয়ে ব্লগে আছি। গালাগাল করার অভ্যাস ও রুচি না থাকলেও মাঝে মাঝে অন্যায়ভাবে গালি শুনতে হয়। খুব খারাপ লাগে।
ব্লগে লেখা পত্রিকায় লেখার মতো। ছদ্মনামে কলাম লেখার একটা প্রচলন আছে বটে, কিন্তু পত্রিকার কোন কলাম লেখক এখন আর আর ছদ্মনামে লিখেন না, আমি যতদূর জানি। আর কোন রিপোর্টারই ছদ্মনামে রিপোর্ট করে না। অতএব, ছদ্মনামে, কিম্ভুতকিমাকার ছবিতে ব্লগিং করার বিষয়টি আমার কাছে কোনক্রমেই গ্রহনযোগ্য মনে হয় না।
প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পরিচয় সহকারে ব্লগিং করা হলে অশালীন গালি দেয়ার প্রবণতা থাকবেনা। ব্লগ যদি হয় কমিউনিটি ইন্টারেকশানের ফোরাম বা ডিজিটাল আড্ডাস্থল তাহলে নাক-মুখ বেধে কথা বলার মতো এই তথাকথিত নিক-সংস্কৃতির নিতান্ত অভদ্রজনোচিত গালি-চর্চার কী মানে হতে পারে?
চট্টগ্রামের লোক-সংস্কৃতির প্রভাবে ছোট বেলায় গ্রামে থাকতে যে ধরনের গালি-চর্চা করতাম, সামু ব্লগে এসে পরিত্যক্ত সেই পুরনো অভ্যাস আবার ফিরে আসার দূর্বল হলেও খানিকটা আশংকাবোধ করছি। কারন, মানুষ প্রায়শঃ যা শুনে, দেখে, ব্যক্তি নিজেও অজান্তে খানিকটা সে রকমের হয়ে পড়ে। আপনি অপছন্দের কোন ফালতু গান সবসময়ে আশে পাশে শুনলে, দেখবেন, কখন জানি আপনি মনের অজান্তেই সেই গান গেয়ে উঠছেন।
তাই, সামু’র গালি-চর্চার এই ধারা বন্ধ করার জন্য স্বনামে, নিজের সাম্প্রতিক ছবি ও সংক্ষেপে হলেও ব্লগারের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশের নিশ্চয়তা দাবী করছি। গালাগালি বন্ধ করার এরচেয়ে বেশী ফলপ্রশু কোন পদ্ধতি আপনার জানা থাকলে বলতে পারেন।
অবশ্য, যারা গালি-চর্চা করেন, তাঁরা কোন মন্তব্য করবেন না। গালি দেয়ার যে দারুণ মজা তা ছোটবেলার অভিজ্ঞতা হতে বুঝতে পারি। অন্ধকারে কাউকে আচ্ছা মতো গালি দেয়ার মতো, যে কোন বিরোধী মতামতদানকারীকে যে কোন লেংথ-এ গালি দেয়ার এ সুযোগ বন্ধ হোক - গালিবাজরা কখনো চাইবে না। তাই এই পোস্টে তাঁদের মন্তব্য অনভিপ্রেত। আমি চাই, সামু-ব্লগ এ ধরনের বিকৃত গালি-চর্চা হতে বের হয়ে আসুক।
আমার কাছে ব্যক্তি-স্বাধীনতার আইকন হলেন ভলটেয়ার। যিনি বলেছিলেন, আমি তোমার মতের বিরোধীতা করলেও তোমার মত প্রকাশের অধিকার রক্ষার জন্য জীবন দিতে প্রস্তত।
কোন অবস্থাতেই যেন কোন অশ্লীল শব্দ কারো পোস্টে না আসে। আসলে যদি সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হয় তাহলে এ ধরনের শব্দ প্রয়োগের প্রবণতা কমতে বাধ্য। লক্ষ্য করেছি, সেইফ থেকে জেনারেলে ডিমোশন পাওয়াকে সবাই বেশ ভয় করে।
যে ধরনের বাক্যালাপ আমরা সামনা-সামনি করিনা, ব্লগে কেন সে রকম করব? এ’ ক্ষেত্রে পত্রিকার কথা বলে লাভ নাই। কোন পত্রিকায়ই ছদ্মনামে এ ধরনের গালি-চর্চার কোন নজির নাই - যদিও সকল পত্রিকার স্বতন্ত্র ‘সম্পাদকীয় নীতি’ থাকে।
কেউ যদি মনে করেন, গালি-থেরাপি দিয়ে বিরোধীদের তাড়ানো যাবে - এটি ভুল। কাজ যা হবে, এবং সামু ব্লগে যা হচ্ছে, ভদ্ররাও গালি-চর্চায় জড়িয়ে পরবে।
চাই, রুচিশীল ও পরিচ্ছন্ন ব্লগ যা হবে শিক্ষা, যোগাযোগ ও নির্দোষ বিনোদনের মাধ্যম।