somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাঝে মাঝে স্ত্রীর কাছ থেকে আইডিয়া ধার নিলে পুরুষত্ব বৃদ্ধি পায়, কমে না

০৮ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
If You Don't Fight For What You Want, Don't Cry For What You've Lost







১৪ সেপ্টেম্বরে ভারতের তৃতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি যোগি আদিত্যনাথের রাষ্ট্র উল্টো প্রদেশের হাথরাসে ১৯ বছরের একজন নিম্নবর্ণের হিন্দু তরুনী গরুর খাবার আনার সময় উচ্চ বর্নের ঠাকুর গোত্রের চার জন পুরষ- সন্দীপ, রামু, লব কুশ, এবং রবি আক্রমন এবং ধর্ষনের স্বীকার হয়। এটা নতুন ঘটনা না। হাথরাসে এর আগে অনেক এবং পরেও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা হয়েছে। তবে এই ঘটনাটি ঘটনাক্রমে ভাইরাল হয়ে যায়।




ধর্ষণে বাধা দিলে ঐ চার যুবক ক্রমাগত মেয়েটির গলা টিপে শ্বাস রোধের চেষ্টার সময় মেয়েটির ঘাড় ভেঙে যায়। পিটুনিতে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগে । পরে ঐ যুবকরা মেয়েটির জিভ কেটে ফেলে। মেয়েটিকে প্রথমে আলীগড়ের জহরলাল নেহেরু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরবর্তীতে অবস্থা বেশি খারাপ হলে তাকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুচিকিৎসা পেলেও আজীবন মেয়েটিকে পঙ্গু হয়ে বাঁচতে হত। মেয়েটির কপাল ভালো, সে ২৯ সেপ্টেম্বর মারা যায়।


ঘটনা ঘটার পর ঐ দিনই স্থানীয় থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে পুলিশ দুর্ব্যবহার করে ভিকটিমের পরিবারকে বের করে দেয়। পরে ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর ২০ সেপ্টেম্বর পুলিশ কমপ্লেন রেজিস্ট্রেশন করে। অভিযুক্ত সন্দীপ রামু লব কুশ এবং রবি দীর্ঘদিন ধরে মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল, পুলিশ কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয় নি।

মেয়েটি মারা যাবার আগে একটি স্টেটমেন্টে ঐ চার যুবকের অত্যাচারের কথা বলে যায়।





মেয়েটি মারা যাওয়ার পর ঐ দিন রাত দুটোর সময় পুলিশ পাহারায় ডিজেল দিয়ে মেয়েটির দেহ দাহ করা হয়। মেয়েটির পরিবার প্রচলিত ধর্মানুসারে দিনের আলোয় দাহ করার জন্য পুলিশের কাছে কাকুতি-মিনতি করেছিলো। পুলিশ মেয়েটির বাসা ঘিরে রেখে রাতেই দেহ দাহ করে।









সরকারী ডাক্তারেরা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট লিখেছে কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। কোন জিভ কাটার ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (বাংলাদেশের ডিসির অনুরূপ) ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা মেয়েটির পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে এবং এর পর ধমক দিয়ে মেয়েটির পরিবার কে বলে গেছে করোনায় মেয়ে মরলে তো কোনো টাকা পেতে না, এত লাফানোর দরকার কি?







ঘটনা ভাইরাল হবার পর বিরোধীদল অভিযুক্ত ভিকটিমের ফ্যামিলির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে এলাকায় ঢোকার আগেই পুলিশ বিরোধীদলের গাড়ি বাহিনী আটকে দেয়। এরপর ওনারা হেঁটে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ ঐ গ্রাম বেরিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে।








ঘটনার পর ওই এলাকার একজন এমপি বলেছেন মেয়েদেরকে ভালো শিক্ষা দেওয়া হলে ধর্ষন হবে না। আরেকজন বলেছেন এই ধরণের চরিত্রের মেয়েদের দেহ ক্ষেতেই পাওয়া যায়। উনি আরো দাবি করেছেন নির্দোষ ছেলেদের এভাবে হাজতে রাখলে তাদের মানসিক ক্ষতি হয়।












উত্তর প্রদেশের পুলিশ বলেছে যোগী আদিত্যনাথ এর সরকারের প্রতি এটি একটি ষড়যন্ত্র। (ষড়যন্ত্র থিওরি অবশ্য নতুন না, এটার পেটেন্ট আমাদেরই আছে)।
যোগী আদিত্যনাথ এর সরকার ড্যামেজ কন্ট্রোল এর জন্য পিয়ার ক্যাম্পেইনে ঘোষণা দিয়েছে।





এই ঘটনা থেকে অনেকগুলো শিক্ষা নেয়া যায়ঃ
১) মেয়েদের ভালো শিক্ষা দিলে মেয়েরা ধর্ষিত হবে না।
২) ভিক্টিম মারা গেলে সাক্ষী একজন কমে যায়, ক্ষেত্র বিশেষে আর কেউ থাকেনা।
৩) মৃতদেহ যদি তাড়াতাড়ি দাহ করে ফেলা হয় তাহলে নতুন করে পোস্টমর্টেমের সুযোগ থাকে না। দাহ করার কাজটা যত সম্ভব গোপনে করতে পারাটাই ভালো।
৪) পোস্টমর্টেম রিপোর্ট যদি বলা হয় ধর্ষণ হয়নি ব্যাপারটা এখানেই মিটে গেল।
৫) যারা ইংরেজি বা ডাক্তারি পরিভাষা পড়তে পারে না মোস্ট মর্টেম রিপোর্ট তাদের দেখানোর কোনো মানে হয় না
৬) থানায় অভিযোগ করতে পারাটা একটা প্রিভিলেজ, কোন রাইট না।
৬) ধর্ষনের ঘটনা ঘটে গেলে ভিক্টিমের পরিবার যাতে আর কারো সাথে কথা বলতে না পারে তা নিশ্চিত করা জরুরি।
৭) অভিযুক্ত যদি পালিয়ে না যায়, নিজ বাসা বা হোস্টেল বা হল বা মেসেই থাকে তবে ধরে নিতে হবে সে নির্দোষ।
৮) ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত 'নির্দোষ' ব্যক্তি হাজতবাস করলে তার মানসিক ক্ষতি হলে দায় অভিযোগ কারির।
৯) অভিযুক্তদের যৌবনের ক্ষতি হয়, এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া যাবে না। (*কৃতজ্ঞতা- ভুয়া মফিজ ভাই)
১০) এর পরেও কোনভাবে ঘটনা ভাইরাল হয়ে বাইরে আসলে ধরে নিতে হবে এটি ষড়যন্ত্র।
১১) সরকারের ইমেজ নষ্ট হয়ে থাকলে তবে তা পিয়ার ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে তা ঠিক করার সুযোগ তো আছেই।

আরো কোনো পয়েন্ট খুঁজে পেলে সাজেস্ট করবেন প্লিজ, অ্যাড করে দেবো।

জগতের সকল স্বামী-স্ত্রী একজন আরেকজনের সাথে আইডিয়া শেয়ার করুক, ঝামেলা বিহীন জীবন গড়ুক।

(সকল খবরের কাগজের কাটিং দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার।)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১:৫৪
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×