ছবি:-(ফেসবুক)
মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে দেশ এখন তোলপাড়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ২৫ মার্চ রাতে তাড়া খেয়ে এবং পরে আগরতলা, কলকাতা কিংবা মেঘালয়ের রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা মুক্তিযোদ্ধা নই আমি। আমি দেশের ভেতরে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা। আমি আমাকে এবং আমার সন্তানদের মেধাহীন মনে করি না। এজন্য কোটা চাই না। ১৯৯৬ সালের আগে এদেশে অনেক মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা ছাড়াই মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছেন। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধ থেকে শত হাত তফাতে ছিল, তারা অনেকেই এখন মুক্তিযুদ্ধ কোটা নিয়ে নাকি কান্না কাঁদছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেধার ভিত্তিতে প্রতিযোগিতায় টিকবে না এবং এ জন্য তাঁদের বিশেষ সুযোগ দিয়ে চাকরি পাইয়ে দিতে হবে, এটা যারা ভাবেন, তারা আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করছেন। যেহেতু তাঁদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি, ওই সময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করেছেন, পরীক্ষা দিয়েছেন, হলে থেকেছেন, তারা এটা ভাবতেই পারেন। একটা বিষয় ভাবুন। যুদ্ধের সময় যে কৃষক আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন, ভাত রেঁধে খাইয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান কলকাতার রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা কিংবা ওই সময় ক্লাস করা বা পরীক্ষা দেওয়া মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে কি কম?।তার সন্তান তো কোটার সুবিধা পায় না? দেশ যদি সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধারা চালাতেন, তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। দেশ তো চালায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা। কিছু কিছু ধান্দাবাজের মুখে শুনি, মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরোধিতা না কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করা। বাড়ি, চাকরি, পদোন্নতি, এসবের জন্য কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? তখন কে বলেছিলেন -
একটি চাকরি পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করি!
দু'বছর সিনিয়রিটির জন্য যুদ্ধ করি!
মাসোহারা পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করি!
পরিত্যাক্ত একটি বাড়ি পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করি!
আমি তো এ রকম ভাবিনি? সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধারা এ রকম ভাবতে পারেন না।
মহিউদ্দিন আহমদ এর
ফেসবুক পোস্ট
#স্যালুট
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৯