গেলাম কামারের দোকানে ছুরি, চাকু কিনতে। ভাবলাম কিছু কাজ আগেই সেরে রাখি। দেখলাম ছোট দাড়ি ওয়ালা এক হুজুর ইয়া বড় একটা চাকু ধার করাতে এসেছেন। ভয়ে ভয়ে তাকে বললাম, "হুজুর এই চাকুটা আপনার হাতে অনেক বড় দেখাচ্ছে, এটা দিয়ে আপনি কি করবেন?"
হুজুর লাল দাঁতে হেসে আমাকে বললেন,"আরে ভাই, জবাই কইরা দিলেই তো ১০০টাকা।" ভয় পেয়ে মনে মনে বললাম,"হুজুর কি কোরবানীর দিন বাদেও জবাই করেন? হুজুর কি কি জবাই করেন?"
তারপর থেকে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে খালি চাক্কুসহ ঐ হুজুরকে দেখি আর গায়েবি আওয়াজ শুনি, "দিমু চাক্কু চালাইয়া, চালাইলেই ১০০ টাকা।"
পুরো শহর জুড়ে কোন শব্দ পাই না। কোন লোকের চিৎকার নাই। কোন চেঁচামেচি নাই। শুধু দুইটা শব্দ আমার কানে আসছে শুধু। একটা হাম্বা আর একটা ম্যা। আর মাঝে মাঝেই রাস্তায় জ্যাম, কি ব্যাপার, বাস থেকে গলা বের করে দেখি।
ট্রাফিক ভাইজানকে দেখলাম গাড়ী থামিয়ে গরু আর ছাগল পার করার দায়িত্ব নিয়েছেন। ভাবখানাই তার আলাদা। তার হাসিতে কেমন একটা বীরত্ব ভাব দেখলাম। মানুষের চেয়ে এখন গরু আর ছাগলের দামই বেশী। দৃশ্যটা অনেকটা এমন যেন, গহীন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে যাওয়া রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে একটা প্যাকার্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়ে যেমন, "টাইগার ক্রসিং"।
যাইহোক, আমিও যাই আবারো হাটের দিকে। দেখা যাক আমার ভাগ্যে কি আছে।
সবলা জানোয়ার গুলো ঢাকা ছাড়ছে আর অবলা জানোয়ার গুলো ঢাকায় ভীড় করছে। এই আসা আর যাওয়ার নিয়েই চলছে এখন ঢাকা শহরের যত ব্যাস্ততা। আসলেই ওরা যে জানোয়ার তার প্রমান রাখে ওদের কাজে। সৃষ্টিকর্তা ওদের মাথায় কোন শুভবুদ্ধি দেয়নি। তাইতো রাস্তায় দেখি, একটি ষাঁড়ের উপরে আরেক ষাঁড় ছুটে এসে সঙ্গমভঙ্গিতে উঠে পড়ে। কারণ ওরা লিঙ্গের ভেদাভেদ জানে না চেনে না।
কিন্তু আমরা মানুষ, সৃষ্টিকর্তা আমাদের শুভবুদ্ধি দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন, কিন্তু আমরা এমন কিছু কাজ করি যেগুলো পশুকেও ছাড়িয়ে যায়।
সবাই ভালো থাকুক, আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। মানুষ গুলো মানুষ হোক।
ঈদ মোবারক।
[আমার লেখা এই ৩টি পর্ব রঙ্গ করে লেখা, এটার সাথে বাস্তবে কারো কোন মিল নেই]
সমাপ্ত
প্রথম পর্ব
Click This Link
দ্বিতীয় পর্ব
Click This Link