somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকার ৮০০ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস

০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার চারশ’ বছর উদযাপনে ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে গেছে আরও চারশ’ বছর
ইতিহাস গ্রন্থের অনুপস্থিতি, লিখিত সূত্রের অপ্রতুলতা, যথাযথ গবেষণার অভাব আর প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোকে ইতিহাস বিনির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবহার না করাতে আমাদের আজকের রাজধানী ঢাকার অতীত গৌরব অনেক ক্ষেত্রে মলিন হয়ে যাচ্ছে। অতি সাম্প্রতিককালে বাংলার তথা আমাদের রাজধানী ঢাকার ইতিহাস নিয়ে যেসব প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যপ্রমাণভিত্তিক বাস্তবসম্মত গবেষণা করা হচ্ছে তাকে অনেকটা বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণাকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দাঁড় করাতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

এখানে বলা হচ্ছে সতের শতকের গোড়ার দিকে মোগলদের পূর্ববাংলা দখল ও ঢাকায় রাজধানী স্থাপনের মধ্য দিয়েই গৌরবের নগরী ঢাকার যাত্রা শুরু। ভ্রান্ত হলেও এই প্রচলিত ধারণাকে উপজীব্য ধরে সঠিক ইতিহাস বাদ দিয়ে রাজধানী ঢাকার চারশ’ বছর উদযাপনের এক উত্সবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীকালে আমাদের দেশের মূল ধারার মধ্যযুগ ও ঢাকা বিষয়ক গবেষক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহ্য সচেতন নাগরিকরা এর বিরোধিতা করলে চাতুরির আশ্রয় নিয়ে সুন্দরভাবে বলা হয় ঢাকার চারশ’ বছর। বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাসের ক্ষেত্রে এই দৃশ্যায়ন ক্ষতির কারণ হলেও তা অনেক ক্ষেত্রে করপোরেটসহ নানা দিকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। আর আমরা এখন একটু বোঝার চেষ্টা করি যদি এই করপোরেট দুনিয়ার সহায়তালাভের মানসে আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে তা জাতির জন্য কতটা অপমানজনক। তবে এর দ্বারা আমরা পথ পেয়েছি মূল বাস্তবতা বোঝার, যার আলোকেই ঢাকার প্রাচীনত্বকে একটু খুটিয়ে দেখা। এটিই মূলত আমাদের ইতিহাসের মূল বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংসের হটকারী সিদ্ধান্তকে প্রতিবাদ করার পথ দেখিয়েছে।

সুলতানি শাসন পর্বের পূর্বে ঢাকার ইতিহাস
ইতিহাস বিচার করতে গেলে আমরা দেখি ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দের দিকে ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ প্রথমত বাংলায় একজন স্বাধীন সুলতান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। আর তাঁর হাত ধরেই সোনারগাঁওয়ে শুরু হয় দুইশ’ বছরব্যাপী বাংলার স্বাধীন সালতানাতের যাত্রা, যা দিল্লির সালতানাত হতে ছিল পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন, এক কথায় বিদ্রোহী। এই সময়কাল থেকেই একটি ছোট্ট শহর হিসেবে ঢাকার অস্তিত্ব ইতিহাসের সূত্রে পাওয়া যায়, যা কালেক্রমে বিকশিত হয়ে আমাদের আজকের রাজধানী শহর এই যানযট, আবাসন সঙ্কট আর নানা সমস্যায় জর্জরিত হলেও সবার গর্বের ঢাকা। ইতিহাসের সূত্রের দিকে দৃষ্টি দিতে গেলে সতের শতকের শুরুতে অর্থাত্ ঢাকায় মোগল অধিকার প্রতিষ্ঠার পূর্বে বাহারিস্তান-ই-গায়েবীতে মির্জা নাথান ঢাকার যে অবস্থার বর্ণনা করেছেন তা অনেকটা এমন—বুড়িগঙ্গার পূর্ব তীরে প্রতিষ্ঠিত একটি সুন্দর নগরী ছিল, যা ছিল অনেক জাঁকজমকে পরিপূর্ণ। ইতিহাসকে ভিত্তি করে এর অবস্থান নির্ণয়ের চেষ্টা করা হলে বর্তমান বাবুবাজারের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে কয়েক মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই সুন্দর নগরীটি, যাকে আমরা ঢাকা নামে চিনি। আমরা মুসলিম আগমনপূর্বে সেন আমলের কথা ভাবলে দেখি বর্তমান পুরনো ঢাকার অনেক স্থান-নাম হিন্দু নামে দীর্ঘকাল ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, যা এখানে প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু বসতি ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে স্থানটির পরিচিতি প্রদান করে। ইতিহাস ও সাহিত্যিক সূত্রেও এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। ঢাকা বিষয়ক অন্যতম চিন্তাবিদ ও ঢাকা জাদুঘর প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের গুণী ব্যক্তি হাকিম হাবিবুর রহমান উর্দু ভাষায় লেখা তাঁর ‘ঢাকা আজ সে পচ্চিশ বরাস প্যাহলে’ গ্রন্থে বলেছেন, বিক্রমপুর যখন সেন রাজাদের রাজধানী তখন থেকেই ঢাকার দক্ষিণাংশে হিন্দু বসতি গড়ে উঠতে শুরু করে যা প্রচলিত ধারার ইতিহাস চর্চাকারীদের চিন্তাধারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তত্কালীন সময়ের স্মৃতি হিসেবে আমরা বর্তমান রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার নামকরণ লক্ষ্য করি। এসব অঞ্চলের নামকরণের কারণ অনুসন্ধানে ইতিহাস বিশ্লেষণ, প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যবেক্ষণ কিংবা জাতিতাত্ত্বিক অনুসন্ধান প্রভৃতি ঢাকার প্রকৃত প্রাচীনত্বের যে সূত্রের সন্ধান দেয় তা বহুল আলোচিত ঢাকার চারশ’ বছর পালনকারীদের উত্থাপিত দাবিকে একাংশে নাকচ করে দেয়। এক্ষেত্রে আমরা উদাহরণ হিসেবে লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, সূত্রাপুর, জালুনগর, বানিয়ানগর, গোয়ালনগর, তাঁতীবাজার, সুতারনগর, কামারনগর, পাটুয়াটুলি, কুমারটুলি ইত্যাদি এলাকার নামকরণের কথা বলতে পারি। এই নামগুলো মোগল-পূর্ব যুগে হিন্দু নিয়ন্ত্রিত নানা পেশাজীবীদের অবস্থানও নিশ্চিত করছে। রাজধানী সোনারগাঁওয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় বাণিজ্য অঞ্চল বিস্তার করতে গিয়ে ঢাকার এই অঞ্চলে ক্রমে নাগরিক জীবনের বিস্তার ঘটে। সোনারগাঁও থেকে ঢাকার নগরায়ণের পথ প্রশস্ত হয় নদীপথের যোগাযোগ থাকায়। প্রাক-মোগল যুগে ঢাকার দক্ষিণ ও পূর্ব সীমা নির্ধারণ করে যথাক্রমে বুড়িগঙ্গা ও দোলাই খাল। সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাবে প্রাক-মোগল ঢাকার পশ্চিম সীমানা নির্ধারণ করা কঠিন। ১৬১০ সালে সুবাদার ইসলাম খাঁ বারো ভূঁইয়াদের পরাজিত করে ঢাকায় মোগল রাজধানী প্রতিষ্ঠা করার আগেই বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগার অঞ্চলে ‘ঢাকা দুর্গ’ নামে একটি দুর্গ ছিল। দুর্গের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা তীরের ঘাটটির নাম ছিল চণ্ডিঘাট। বাহারিস্তান-ই-গাইবীর বক্তব্য অনুযায়ী এই অংশে তখন দুটি অঞ্চলের বিকাশ ঘটে। এই চণ্ডিঘাটটিই পরে চকবাজার নামে পরিচিত হয়। দুর্গ থেকে চণ্ডিঘাট পর্যন্ত বাজারের বিস্তার ছিল। ঢাকা নগরীর বিস্তারের যুগে ইসলাম খান (১৬০৮-১৬১৩ খ্রি.) এখানে রাজধানী স্থাপন করেন এবং সম্রাটের নাম অনুসরণে এর নাম রাখেন জাহাঙ্গীরনগর (অনফঁষ কধত্রস, উযধশধ ঃযব গঁমযধষ ঈধঢ়রঃধষ, উধপপধ, অংরধঃরপ ঝড়পরবঃু ড়ভ চধশরংঃধহ, ঢ়. ২)। এক শতকের চেয়ে সামান্য বেশি সময় ঢাকা প্রাদেশিক রাজধানীর মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত ছিল। এ সময় প্রশাসনিক বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিকাশ অব্যাহত থাকে।

সুলতানি যুগে ঢাকা
ঢাকার প্রাশাসনিক গুরুত্বের প্রাচীনত্ব অনুসন্ধান করতে হলে সোনারগাঁওয়ের দিকেই ফিরে তাকাতে হয়। সেন শাসন যুগে বিক্রমপুর যখন রাজধানী তখন ঢাকার কাছাকাছি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল সোনারগাঁও। সোনারগাঁও কেন্দ্রের অবস্থান শীতলক্ষ্যা নদীর আনুমানিক আট কিলোমিটার পূর্বে। বখতিয়ার খলজীর হাতে নদীয়া পতনের আগে সোনারগাঁও ছিল সেনদের অন্যতম শাসন কেন্দ্র। নদীয়া থেকে বিতাড়িত লক্ষ্মণ সেন বিক্রমপুরে চলে আসার পরও সোনারগাঁও গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে পরিচিত ছিল। ফারসি গ্রন্থ তবকাত-ই-নাসিরির লেখক মিনহাজ-ই-সিরাজের বর্ণনা অনুযায়ী ১২৬০ খ্রিস্টাব্দেও ‘বঙ্গ’ লক্ষ্মণ সেনের উত্তরসূরিদের শাসনাধীনে ছিল। তবকাত-ই-নাসিরিতে সোনারগাঁওয়ের নাম উল্লিখিত হয়। মধ্যযুগের শুরু থেকেই সোনারগাঁও ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ শাসন কেন্দ্র। ঢাকা যে ফখরউদ্দিন মুবারক শাহের শাসনকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ শাসন কেন্দ্র হিসেবে নিজ অবস্থান তৈরি করেছিল তা ঢাকা নগরীতে প্রাপ্ত দুটি শিলালিপি সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। যদিও শিলালিপিতে উত্কীর্ণ তারিখ ফখরউদ্দিনের সময়কালের শতাধিক বছর পরের। কিন্তু লিপি বক্তব্যের সূত্রে পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহের (১৪৩৬-১৪৫৯ খ্রি.) সময় উত্কীর্ণ এই শিলালিপি দুটির একটি থেকে স্পষ্টতই ধারণা করা যায় ঢাকা তখন ‘ইকলিম মুবারকাবাদের’ অন্তর্গত ছিল। ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ স্বাধীনতা ঘোষণার পর সোনারগাঁও রাজ্যের অন্তর্গত ‘ইকলিম মুবারকাবাদ’ নামটি ব্যবহৃত হতে থাকে। মুবারকাবাদের অবস্থান সম্পর্কে এইচ ই স্টাপলটন যে ধারণা দিয়েছেন তার উদ্ধৃতি পাওয়া যায় ড. আহমদ হাসান দানীর বক্তব্যে। দানীর বক্তব্যে পূর্ব বাংলার একটি বড় প্রশাসনিক অঞ্চল ছিল মুবারকাবাদ। সুলতানি বাংলার শিলালিপিতে দুটি ইকলিম অর্থাত্ প্রদেশের নাম পাওয়া যায়। একটি ইকলিম মুয়াজ্জমাবাদ যা বর্তমান সোনারগাঁওয়ের পূর্ব-উত্তরে মহজমপুর থেকে শুরু করে ময়মনসিংহ অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর অন্যটি ইকলিম মুবারকাবাদ। ইকলিম মুবারকাবাদ নামাঙ্কিত শিলালিপিটি পাওয়া গেছে বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারের কিছুটা পশ্চিমে গিরিদাকিল্লা নামের মহল্লায় নাসওয়ালা গলি মসজিদের সামনের একটি তোরণের গায়ে। মসজিদ আর তোরণের অস্তিত্ব এখন নেই। শিলালিপি সূত্রে জানা যায়, মসজিদটি ৮৬৩ হিজরি অর্থাত্ ১৪৫৯ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সরকারি উদ্যোগে নির্মিত হওয়ায় সমকালীন সুলতান নাসির উদ্দিন মাহমুদ শাহের নাম উত্কীর্ণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হিসেবে খাজা জাহান নাম লেখা হয়েছে। আর নির্মাণ অঞ্চল হিসেবে লেখা হয়েছে ‘ইকলিম মুবারকাবাদ’। অর্থাত্ পনের শতকের মাঝপর্বে পুরনো ঢাকা ইকলিম মুবারকাবাদের রাজধানী ছিল এবং গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন খাজা জাহান উপাধিধারী কেউ।

বার ভূঁইয়াদের সময়কালে ঢাকার গৌরব
বাংলায় স্বাধীন সালতানাতের অবসান ঘটে ১৫৩৮ সালে। এ সময় শেষ স্বাধীন সুলতান গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ শাহ মোগল সম্রাট হুমায়ুনের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু বাংলায় মোগল আধিপত্য সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। হুমায়ুন গৌড় অধিকার করে মাত্র ছয় মাস টিকে থাকতে পেরেছিলেন। এ পর্যায়ে বিহার অঞ্চলের আফগান শাসক শের খান হুমায়ুনের বিরুদ্ধে সৈন্য পরিচালনা করেন। ১৫৩৯ সালের জুলাইয়ে হুমায়ুন বিতাড়িত হন। এভাবে বাংলা আফগান শাসনের অধীনে চলে আসে আর দিল্লির মোগল শাসন যুগে বাংলা বিচ্ছিন্ন হয়ে এক ধরনের স্বাধীন অঞ্চলে পরিণত হয়। এভাবে দীর্ঘকাল বাংলা মোগল অধিকারের বাইরে থেকে স্বাধীনভাবে শাসন পরিচালনা করছিল। ভাটি বা নিচু অঞ্চল বলে পূর্ববাংলা বরাবরই বিচ্ছিন্ন থাকার সুযোগ পেয়েছে। স্বাধীন সুলতানি যুগের পরেও তাই পূর্ববাংলা তার স্বাধীন সত্তা নিয়ে টিকে ছিল। এই পর্বে পূর্ববাংলায় একক কোনো রাজ্য গড়ে ওঠেনি। অনেক বড় বড় জমিদারের অধীনে বিভক্ত ছিল বাংলার এ অংশটি। এঁরা সাধারণভাবে ‘বারো ভূঁইয়া’ নামে পরিচিত। এই বারো ভূঁইয়ারা একযোগে মোগলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। সম্রাট আকবরের আমলে বারো ভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈসা খান মসনদ-ই-আলা। মোগল সুবাদার ইসলাম খানের ঢাকা দখলের সাধারণ কারণ বারো ভূঁইয়াদের চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা। মোগলরা উত্তরে তাণ্ডা থেকে পূর্ব বাংলার দিকে অগ্রসর হয়েছিল। পথে অনেক জমিদার মোগল বশ্যতা স্বীকার করে। বারো ভূঁইয়াদের শেষ ঘাঁটি শীতলক্ষ্যা নদীতে। সোনারগাঁওয়ের কাছে কাতরাবোতে ছিল মুসা খাঁর শাসন কেন্দ্র। বর্তমান নারায়ণগঞ্জ শহরে অবস্থিত মোগল জলদুর্গ হাজিগঞ্জ দুর্গ শীতলক্ষ্যার তীরে অবস্থিত। হাজিগঞ্জ দুর্গ বরাবর নদীর পূর্ব পাড়ে নবীগঞ্জ। এখানেই ছিল মুসা খানের সামরিক ছাউনি। আর শীতলক্ষ্যা নদীতে ছিল বারো ভূঁইয়াদের রণতরী। তাই বারো ভূঁইয়াদের শেষ শক্তিতে আঘাত করার জন্য এর কাছাকাছি অঞ্চল ঢাকাকে বেছে নিতে হয়েছে মোগল সুবাদারকে। মোগল আগমনের আগে ঢাকার নাগরিক জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ এখানে উল্লেখ করা যায়। আগেই বলা হয়েছে, বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় একটি দুর্গ ছিল। আফগানদের বা স্থানীয় জমিদারদের গড়া এই দুর্গ। ঢাকা দুর্গ নামে পরিচিত এই দুর্গ সংস্কার করে এখানে সুবাদার ইসলাম খাঁর আবাসস্থল বানানো হয়। এই দুর্গ মোগল অধিকারের আগে ঢাকার নাগরিক জীবনের কথাই মনে করিয়ে দেয়। ঢাকা অধিকারের পর ইতিমাম খাঁ ও মির্জা নাথানকে ডেমরা খালের মোহনার দুই পাশে অবস্থিত বেগ মুরাদ খাঁর দুর্গ দুটির দায়িত্ব গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। এই বর্ণনায় ঢাকার অভ্যন্তরে ঢাকা দুর্গ এবং উপকণ্ঠ ডেমরায় দুটি দুর্গের অবস্থানও বারো ভূঁইয়াদের সময় ঢাকার গুরুত্বকে নির্দেশ করে।

স্বাধীনতার অবসান ও মোগল নিয়ন্ত্রণে ঢাকা
তিনটি প্রাদেশিক কাঠামো বা ইকলিমের মধ্যে ১৩৩৮ সালে সোনারগাঁয়ে স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলা দিল্লির নিয়ন্ত্রণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। শুরু হয় বাংলায় স্বাধীন সুলতানি শাসন। দিল্লির শাসন কাঠামো থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন থাকার পরও এই কালপর্বেই বাংলায় শিক্ষা, শিল্প-সংস্কৃতি ও সাহিত্যের সার্বিক বিকাশ ঘটে। সুলতানি পর্বে পূর্ববাংলায় সোনারগাঁও ও উত্তর বাংলার গৌড় বা লখনৌতি ছিল স্বাধীন সুলতানি বাংলার রাজধানী। গোটা বাংলায় সুলতানি যুগে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল গড়ে উঠেছিল। ঢাকা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহের বারবাজার, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রভৃতি অঞ্চলে পাওয়া সুলতানি স্থাপনা ও লিপিসাক্ষ্য এর প্রামাণ্য দলিল হয়ে আছে। দীর্ঘ বিরতির পর ১৬০৮ থেকে ১৬১০-এর মধ্যে মোগল সুবাদার ইসলাম খাঁর হাতে ঢাকার পতন এই স্বাধীনতার চূড়ান্ত অবসান ঘটায়। বাংলা পরিপূর্ণভাবে মোগল সুবার অন্তর্ভুক্ত হয়। সুবাদার ইসলাম খাঁ ঢাকাকে বাংলা সুবার রাজধানী করেন। সম্রাটের নামে ঢাকার নাম রাখেন জাহাঙ্গীরনগর। এভাবে প্রায় আড়াইশ’ বছর পর বাংলা আবার দিল্লির প্রদেশে পরিণত হয়। আর দ্বিতীয়বারের মতো প্রাদেশিক রাজধানীর মর্যাদা পায় ঢাকা।

রাজধানী ঢাকার ৪০০ বছর’ নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি
ইতিহাসকেন্দ্রিক বাণিজ্য ইতিহাসের বিভ্রান্তিকর ব্যবহার ও প্রয়োজন অনুযায়ী দৃশ্যায়ন পৃথিবীতে বিরল নয়। যা নতুন করে পথ খুঁজে নেয় ২০০৭’র দিকে যেখানে আমরা দেখি বর্তমান গবেষণা থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু প্রচলিত পুরনো ধারার ইতিহাসবিদ দাবি করে বসেন ঢাকা নগরীর বর্তমান বয়স রাজধানী হিসেবে ৪০০ বছর। অতিরিক্ত ব্যস্ততা কি সদিচ্ছার অভাব কিংবা অধিক সুযোগ-সুবিধার হেতু এরপর থেকে আর তাঁদের পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা, এমনকি খোদ সরকারি তহবিল থেকে অর্থ সঙ্কুলান তাদের জন্য খুব একটা কঠিন হয়নি। প্রচলিত প্রাচীন অপর্যাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই আবর্তিত হতে থাকে তাদের কর্মকাণ্ড। পরবর্তীকালে দেখা যাচ্ছে এদেশের, ইতিহাস ঐতিহ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ঢাকার কয়েকটি সংগঠন প্রথমে ‘ঢাকা নগরীর ৪০০ বছর এবং পরে কিছুটা সংশোধন করে ‘রাজধানী ঢাকার ৪০০ বছর’ শীর্ষক আনুষ্ঠানিকতাতে এক কথায় মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে। যেসব ইহিহাসবোদ্ধা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছেন তাদের চোখে মোগল আগমনের আগে ঢাকার নাগরিক জীবনের তেমন বিকাশ ঘটেনি। তারা এক অর্থে ধরেই নিয়েছেন মোগল সুবাদার ইসলাম খান ১৬১০ সালে ঢাকা অধিকারের পর সর্বপ্রথম ঢাকা রাজধানী শহরের মর্যাদা পায়। এই শহর তখন থেকে তার ঐতিহ্যের যাত্রা শুরু করে। এই ধারণা থেকেই মোগল শাসনপর্বকে ঢাকার ঐতিহ্যের সূচক মনে করে তিন বছরব্যাপী উত্সব করে যাচ্ছে অনেক সংগঠন। আর চটকদার এই খবর ফলাও করে প্রকাশিত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায়। যার ফলে একদিকে যেমন ইতিহাস বিকৃতি ঘটছে, পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত হচ্ছে ইতিহাসের মূল সত্য আর উপস্থাপনিক বাস্তবতার মধ্যে ফারাক খুঁজতে গিয়ে। আর নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হচ্ছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কিছু মূল্যবান অংশ থেকে, যা তাদের জাতির জন্য অবশই একটি গৌরবের বিষয়। অতি সাম্প্রতিককালে লেখার তুলনায় ততোধিক সমালোচিত কবি নির্মলেন্দুর একটি আর্টিক্যাল পড়লাম প্রথম আলোতে। তিনি বরাবরের মতোই নির্বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তার ক্রিকেট বিষয়ক প্রবন্ধ লেখার শুরু করেন অনেকটা এভাবে—বাঙালি জাতির আছে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আমাদের ঢাকা শহরও প্রায় চারশ’ বছরের পুরনো। আমরা কি একবারও ভেবে দেখেছি বাণিজ্যিকীকরণ ও গবেষণার সীমাবদ্ধতা এই দুয়ে মিলে আমাদেরকে দিনের পর দিন ইতিহাসের মূল বাস্তবতা থেকে কতটা দূরে ঠেলে দিচ্ছে। আর আমরাও অনেকটা স্রোতের পানিতে গা ভাসিয়ে আমাদের কবিরত্ন গুণধরের মতো উক্তি করতে থাকি তবে আমাদের ঐতিহ্যের খেরোখাতায় কি করুণ কালিমা পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তরুণ প্রজন্মই পারে এ বিভ্রান্তিকর বাণিজ্যিক ডামাডোল থেকে জাতির ইতিহাসকে কলঙ্কমুক্ত করতে। পারে নিজেদের সত্যিকার ইতিহাসকে সবার সামনে তুলে ধরতে। একটি জাতির উন্নয়নের ভিত রচিত হয় একটি শক্ত ও নির্ভরযোগ্য ইতিহাসের বুনিয়াদের ওপর। আর আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ধামাচাপা দিয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থ উদ্ধারের মানসে যদি কেউ কাজ করে তবে একজন স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। আমাদের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হওয়া।

বর্তমান গবেষণার বাস্তবতায় মূল ইতিহাস
প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণনির্ভর সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে আমরা যে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি তার আলোকে দেখতে গেলে প্রায় ৮০০ বছর আগেই ঢাকায় নাগরিক জীবনের সূচনা ঘটেছিল এবং লিপিসাক্ষ্যে স্পষ্ট প্রায় ৬০০ বছর আগে সুলতানি যুগে স্বাধীন সুলতানি বাংলার একটি ইকলিম বা প্রদেশের রাজধানী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকায়। কিন্তু বর্তমান কালের গবেষণার সঙ্গে সংযুক্তি না থাকা আর ভুল বিবৃতি প্রদানের পরেও জেনে-শুনে কেবল আত্মসম্মান রক্ষার্থেই বেশকিছু দেশের পুরনো ধারায় গবেষণাকারী প্রথম শ্রেণীর ঐতিহাসিক গোঁয়ারের মতো বলে যাচ্ছেন, রাজধানী ঢাকার চারশ’ বছর। পরে তাদের প্রদত্ত বিবৃতিতে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়। একটু ভণিতার আশ্রয় নিয়ে বলা হয়, ঢাকার চারশ’ বছর। কিন্তু আমাদের অতীতের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের ইতিহাস বিকৃতির দায় আমাদেরই। দুর্ভাগ্য আমাদের যে আমরা আমাদের ইতিহাসচর্চায় তেমন কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারিনি। প্রচুর তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বে্ও মধ্যযুগচর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটা ভুল ব্যাখ্যাকে নির্ভর করে কূপমণ্ডূকতায় আবর্তিত হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যের ঢাকা নগরী। তাই আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্যকে শুধু আমাদের অজ্ঞানতার কারণেই ৪০০ বছর একটি কাফন দিয়ে মুড়িয়ে বাকি চারশ’ বছরকে মাটিচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। স্বাধীন সুলতানি পর্ব ও বারো ভূইয়াদের সময়ের প্রায় আড়াইশ’ বছরের অব্যাহত স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল মোগলরা। ফলে ৪০০ বছর আগে এদেশ দিল্লির অধীনে একটি প্রদেশে পরিণত হয়। এ কারণে ৪০০ বছর আগের ঢাকা যতটা উত্সবের তার চেয়ে বেশি স্বাধীনতা হারানোর দিন। কোনো ঐতিহ্যপ্রিয় সভ্য জাতি তার ঐতিহ্যিক শহরের উত্স সন্ধান না করে বিভ্রান্ত তথ্যে রাজধানীর উত্স খুঁজে বেড়ায় এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় নেই। আর এই ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যপ্রমাণনির্ভর করপোরেট বাণিজিকতার নানা উত্সব ঐতিহ্য বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে এদেশের মানুষকে। সেইসঙ্গে আমাদের মাথা হেঁট হবে বিশ্বদরবারে। ৮০০ বছরের গৌরব নিয়ে ঢাকা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহরের মর্যাদা পেতে পারে। আর তার ফলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ দাঁড়াতে পারবে মাথা উঁচু করে। আজ একুশ শতকের অঙ্গীকার আমাদের মাথা নোয়াবার নয় বরং মাথা উঁচু করে বাঁচার চ্যালেঞ্জ জানানোর। তাই এখনই সময় জানতে হবে সত্যিকারের ইতিহাস, বুঝতে হবে নিজেদের অতীতের গৌরবোজ্জ্বল সোনালি অতীতকে। সব বিভ্রান্তিকর চিন্তাধারাকে ঝেড়ে ফেলে দীপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। আসুন সত্যকে অনুসন্ধান করি, সত্যকে লালন করি, মিথ্যাকে রুখে দিয়ে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলি সোনার বাংলাদেশ। যেন সবাই বুক ফুলিয়ে বলতে পারি, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, আমার দেশ আমার গর্ব, আমার প্রাণের বাংলাদেশ।

এই লেখাটি হুবহু কপি পেষ্ট করা হয়েছে। আসল লেখাটি নিচের লিংকে
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১২:০২
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×