somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছবির বৈভব

১১ ই মে, ২০২২ রাত ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পেশাগত কারণে এক সময় আমাকে মন্ত্রী, এমপি, বিরোধী দলীয় নেতা, ব্যবসায়ী, সচিব, পুলিশ কর্মকর্তা, সংস্কৃতিকর্মী ইত্যাদি সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বাড়িতে যেতে হয়েছে। দু-তিনবারের ব্যতিক্রমের কথা বাদ দিলে আমি কখনো কারো সঙ্গে ছবি তুলিনি, তৈলমর্দনের তো প্রশ্নই আসে না। আমার বোনের মতে আমার বিষয়বুদ্ধি নেই, একজন লেখকের জন্য তা খুব জরুরীও নয়, এই বিষয়বুদ্ধি নেই বলে আমি কখনো কোনো মন্ত্রী বা সচিবের কাছে খ্যাপের কাজের জন্য আবদারও করিনি। কারণ আমার সময় নেই, লেখার ক্ষতি হবে।

ছবি তোলা এবং ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার একটা সামাজিক মূল্য আছে, আমার পরিচিত এক ছেলে ভিড়ভাট্টার মধ্যেও কোনো নেতার সঙ্গে ছবি তুললে সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করে এবং এলাকায় গেলে এমন গালগল্প ফাঁদে যেন সেইসব নেতার কতো কাছের মানুষ সে! এরপর এলাকার লোকজন তো চাকরি বা বদলীর জন্য তাকে ধরে, কিন্তু সে না পারে চাকরি দিতে, না পারে বদলী করে দিতে। কিন্তু অনেকেই তাকে প্রভাবশালী ভাবে, তার দিকে আগে চেয়ার এগিয়ে দেয়। ওই যে বললাম সামাজিক মূল্য, কোথাও না কোথাও ছবি তোলার পরিশ্রমের মূল্যটা পাওয়া যায়।

ব্যতিক্রমের কথা বলি, একবার ক্যামেরাম্যান বলে- ‘আসেন ভাই স্যারের সাথে ছবি তুলি।’ আমি পড়ি বিব্রতকর অবস্থায়, সিনিয়র নেতা এবং সাবেক মন্ত্রীর সামনে বলে ফেলেছে, না দাঁড়ালে তিনি কী মনে করেন তাই সবার সাথে দাঁড়াই। এরকমই আরেকবার হয়েছিল আরেক মন্ত্রীর বাসায়। আমাদের অফিসেই একবার টিমের সবাই ছবি তুলেছিলাম সুলতানা কামাল আপার সঙ্গে। সুলতানা আপার সঙ্গে ছবি তুলতে আমার কোনো অসুবিধা নেই, তিনি যদি সরস্বতীর মতো দাঁড়ান আমি তার পায়ের কাছে হাঁসের মতো বসেও ছবি তুলতে রাজি! আমার কাছে সুলতানা কামাল অন্য মানুষ, বাংলাদেশে এইরকম মেরুদণ্ডওয়ালা নারী এই একজনই। মাসে এক-দুবার তো সুলতানা আপার সঙ্গে কথা হয় ফোনে, কিন্তু কখনো এই কথাটি বলা হয়নি আমি তাকে কী চোখে দেখি, তাকে হৃদয়ের কোনখানটায় রাখি। আমার যা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কোনোদিন তা বলতেও পারব না।

এই যে আমি সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের সঙ্গে ছবি তুলি না, তাই আমি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি, এ কি আমার অহংকার? আবার নিজেই বলি- তাই বা কী করে হয়, আমি তো রাস্তার কুকুর-বিড়ালের সঙ্গেও ছবি তুলি, পথচলতি কোনো অখ্যাত বাউলকে ডেকে তার গান শুনি, ছবি তুলি।

এবার নিচের ছবিটার প্রসঙ্গে আসি, শ্রীলংকার পদকপ্রাপ্ত একজন সাংবাদিক, বিদ্রোহীরা হাতের কাছে তাকে পেয়ে আচ্ছামতো ঠেঙিয়েছে! ছবিটা দেখার পর কী যে শান্তি লাগছে আমার, নিজের বুদ্ধির তারিফ করে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়াচ্ছি! কে বলে আমার বিষয়বুদ্ধি নেই? ঢের আছে! ওই যে যেসব শ্রেণিপেশার মানুষের কথা বললাম তারা তো এক পা দিয়ে রেখেছে বেগমপাড়া, বিবিপাড়াসহ নানা পাড়ায়, নির্বাচনের সময় বিমানের টিকিটের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়। আমার তো গ্রামের ভিটে ছাড়া যাবার জায়গা নাই। ভাইরে, চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়, আগামী দিনের কথা কে বলতে পারে!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০২২ রাত ৩:৪৮
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×