পেশাগত পরিচয় নিয়ে বিপদে আছি। দুর্মূল্যের বাজারে বেতন সর্বস্ব ডাক্তারের বহুত যন্ত্রণা। চড়ি পাবলিক ট্রান্সপোর্টে, আই মিন লক্কড়-ঝক্কর মার্কা সিটি সার্ভিসে, সীট না পেলে ঝুলতে ঝুলতে যাই। তাতে আমার তেমন সমস্যা নেই, কিন্তু পাশের লোক যদি উৎসুক হয়ে কি করি জিজ্ঞেস করে, বিপদে পড়ে যাই। ডাক্তার পরিচয় দিলে তিনরকম সমস্যা দেখা দেয়, এক শ্রেণীর লোক আছে, তারা ডাক্তার মানেই টাকার খনি মনে করে। যখনি ডাক্তার পরিচয় দেই, এমন দৃষ্টিতে তাকায় যেন, 'ধুর, কিসের ডাক্তার, মনে হয় ওয়ার্ড বয় অথবা স্বাস্থ্য সহকারি হবে। ডাক্তার আবার এইসব বাসে চড়ে নাকি!' আরেক শ্রেণীর লোক আছে, ডাক্তার শোনা মাত্র রোগী হয়ে যায়। বাতের ব্যাথা থেকে শুরু করে খাদ্যে অরুচি, ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার রোগের সমাধান দিতে দিতে মেজাজ নষ্ট হয়ে যায়। তাদের কেউ কেউ আবার সর্বজ্ঞানী। আমার চিকিৎসা শোনার পরে তারা সেই চিকিৎসা মডিফাই করা শুরু করে বিভিন্ন ডাক্তারের রেফারেন্স দিয়ে কেন এই ঔষধ সেই ঔষধের থেকে বেশি কার্যকর, সেই ব্যাপারে আমাকে বেশ কিছু জ্ঞান বিতরণ করে, আমি মাথা ঝাকিয়ে সায় দিয়ে যাই। সবচেয়ে বিরক্তিকর হল তৃতীয় শ্রেণী। এরা দ্বিতীয় শ্রেণীর-ই উপশ্রেনী বলা যায়, তারা ডাক্তার পরিচয় পাওয়া মাত্র কেন এলপ্যাথির চেয়ে হোমিওপ্যাথি অধিক কার্যকর সে ব্যাপারে ব্যাপক জ্ঞান বিতরণ শুরু করে। আশে পাশের মানুষ সবাই তার সাথে একমত হয়ে যায়। দু-তিনজন বেরিয়ে যায় যারা বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন, এলপ্যাথিক চিকিৎসায় কোন ফল পাননাই, অথচ হোমিওপ্যাথি খেয়ে এখন সম্পুর্ণ সুস্থ্য। সবশেষে সবাই মিলে আমার সামনেই বিভিন্ন হুজুরের পানি পড়া, পাগলা মলম, কবিরাজি ঔষধ ইত্যাদি কেন এলপ্যাথিক্র চেয়ে ভাল, সেই বিষয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু করে। সেই আলোচনা শেষ হবার আগেই আমি গন্তব্যে পৌঁছে যাই, এবং সবার অজান্তে মুখ লুকিয়ে বাস থেকে নেমে পড়ি। এসব অভিজ্ঞতার কারণে আমি কখনোই যাত্রাপথে ডাক্তার পরিচয় দেই না। বলি, আমি ছোটখাট সরকারি চাকুরি করি, কেউ আর ঘাটায় না। হাসপাতাল থেকে ফোন আসলে এমন আস্তে আস্তে কথা বলি যেন পাশের কেউ শুনতে না পায়। আজ সেলবাজারের এড দ্যাখে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড ক্যামকর্ডার কিনলাম। যার থেকে কিনলাম, সে জানতে চাইল আমি কি করি। আমি বললাম, ভাই, আমি একটা প্রাইভেট ব্যাঙ্কে চাকুরি করি। সে দিব্যি মেনে নিল। অথচ দেশের সাধারণ জনগন জানেনা, একটা সরকারী ডাক্তারের বেতনের চেয়ে একটা প্রাইভেট ব্যাঙ্কের কর্মকর্তার বেতন কয়েকগুণ বেশি। এই ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজিয়ে উঠা প্রাইভেট মেডিকেলের ভুড়ি ভুড়ি ডাক্তারের দেশে 'ডাক্তা্রি' একটি নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশায় পরিণত হয়েছে। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর জোগাড়।
আলোচিত ব্লগ
ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।
১ম ধাপঃ
দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি
গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জানা আপুর আপডেট
জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।
বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন
বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।
এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন
অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!
দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন