আদালত তথা বিচারক নিজস্ব বিবেক বিবেচনা থেকে কোন রায় দিতে পারে না।
আদালত রায় দেয় বাদি বিবাদি পক্ষের উকিলদের উত্থাপিত যুক্তি, প্রমান, দাবি ইত্যাদি শুনে বিবেচনা করে সেই অনুযায়ী রায় দেয়া হয়।
কোন একটি পক্ষ ঢিলেমি করলে, বা অনুপস্থিত থাকলে একতরফা রায় হয়।
তবে এখানে সব পক্ষই কঠিনভাবে যুক্তি তুলে ধরেছে।
বিচারকদের রায়ে ১০৪৫ পৃষ্ঠার রায়ে যা বলা হয়েছে।
যে জমিতে বাবরি মসজিদ, ২ দশমিক ৭৭ একর বিরোধপূর্ণ জমিতে মন্দিরের জন্য হিন্দুত্তবাদিদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষনে বলা হল “যেহেতু বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে জমির মালিকানা ঠিক করা সম্ভব নয়, তাই আইনের ভিত্তিতেই জমির মালিকানা ঠিক করা উচিৎ।" তারপর রায় দিলেন আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টকে কেন্দ্র করে যার মূলকথা ছিল মসজিদ যেখানে নির্মিত হয়েছে সেখানে কিছু স্থাপনা ছিল, কিন্তু তা যে কোনো উপসনালয় ছিল তার কোনো প্রমান মিলেনি;
বাবরি মসজিদ ভাঙাকে নিন্দনিয় ও বেআইনি বলেছে।
বাবর কোন পয়গম্বর বা নবী ছিলেন না। উনি ফাঁকা জমির ওপর মসজিদ বানায় নি। সেখানে আগেও কিছু ছিল এবং সেটা মুসলিম স্থাপত্য নয়।
মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের আগেও (মুসলিম শাসন কালে) সেখানে হিন্দুরা উপাসনা করত এই প্রমান পাওয়া গেছে।
ওই জমির ওপর সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড তাদের অধিকার প্রমান করতে পারেনি।
হিন্দুদের বিশ্বাস যে ওখানে রামচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেছেন। আদালত এখানে বিশ্বাসটাকে সত্যি বলেন নি বলেছেন বিশ্বাসটা হিন্দুদের মধ্যে আছে
এর আগে বিচারকেরা বলেছেন বাবরি মসজিদের জায়গাতেই নামাজ পড়তে হবে এই ধরণের কোন দাবি ইসলাম ধর্মে সমর্থন পাওয়া যায় নি। মুসলিমরা যেহেতু হিন্দুদের মত পৌত্বলিক নন, ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর অদৃশ্য। এই ধর্মে স্থাপনা ভিত্তিক পুজা হয় না। তাই বাবরি মসজিদ অন্য জায়গাতে গড়ে দিলে তাদের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত লাগার কথা না।
কিন্তু হিন্দুদের ক্ষেত্রে যেহেতু পৌত্তলিকতা স্থাপনা পুজা আছে সেখানে স্থানের গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত বেশি।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নই।
মসজিদ যেখানে নির্মিত হয়েছে সেখানে কিছু স্থাপনা ছিল, কিন্তু তা যে কোনো উপসনালয়/মন্দির ছিল তার কোনো প্রমান মিলেনি; রামমন্দিরের তো দুরের কথা।
ষোড়শ শতাব্দীর মসজিদ ওটা নামাজের জন্য বিখ্যাত ছিল না। বিতর্কের কারনে প্রায় ২০০ বছর কোন নামাজ পড়া হয় নি। এখন আংশিক ভেংগে ফেললেও এটিকে একটি প্রাচীন পুরাকীর্তি একটি স্থাপত্য হিসেবে বিবেচনা করি।
রায়ে হিন্দুত্ববাদিদের ও মুসলমানদের কাউকেই না দিয়ে না দিয়ে প্রাচীন পুরাকীর্তি হিসেবে পর্যটন স্পট হিসেবে রাখা হলে খুসি হতাম।
আর ধার্মিক হিন্দু বা মোসলমানদের উপাসনার জন্য জনগনের করের টাকায় রাষ্ট্র জমি দেবে কেন?
ধার্মিকরা যার যার ব্যাবস্থায় চাঁদা তুলে কিনে বানিয়ে নিবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:০৫