somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কালের প্রতিশোধ ! কালের প্রতিশোধ ! কালের প্রতিশোধ

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কালের প্রতিশোধ ! কালের প্রতিশোধ ! কালের প্রতিশোধ



চাচা কেমন আছেন?

এই বাবা আল্লাহ্‌ রাখছে কোন রকম। তুমি কেমন আছো?

এই তো ভাল আছি।

দেশের খবর কিছু রাখো? দেশটা জাহান্নাম হয়ে গেছে। নাক টিপলে দুধ বের হয় পোলা পাইনরা নাকি কি বিচার করব। যতসব।

সাহেদ চুপ থাকে। এমনিতেই হাজারো কাজের চাপে মাথাটা স্থির রাখা দায় । তার উপর মোল্লা চাচার এই অসংলগ্ন কথা বার্তাতে সে আরও অস্বস্তি বোধ করে। মোল্লা চাচার পুরা নাম কাসেম মোল্লা। মোল্লা নামেই সবাই চিনে। বাড়ি সিলেটে। অনেক আগেই বিলেতে এসেছেন। লম্বা দাড়ি বেশ ধুপ দুরস্তর স্বাস্থ্যবান মানুষ। বেশ কিছুদিন হল সাহেদ এই এলাকায় এসেছে। মাঝে মধ্যে মোল্লা চাচার এই রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে । সাহেদ দেশ থেকে এসেছে আজ সাড়ে ৫ বছর। স্কলারশিপ নিয়ে এসেছিল। সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এম এস করে এখন পি এইচ ডি শেষ করল। মাঝারী উচ্চতার চমৎকার মেধাদীপ্ত একজন সুপুরুষ। আপাতত লেকচারার হিসেবে কেমম্ব্রিজ ইউনিভারসিটির স্কুল অফ টেকনোলজিতে পার্ট টাইম জব করছে। সেই সাথে একটি বড় কোম্পানিতে সফটওয়ার ডেভেলপিং- অ্যান্ড নেটওয়ার্কিং এর কাজ করছে। বলতে গেলে সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং নিয়ে কাজ করা ওর নেশা। ক্রিয়েটিভ একটি জায়গা। বেশ ভাল লাগে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই শাহেদ প্রচুর আয় করে ফেলেছে। বিভিন্ন সফটওয়্যার কোম্পানি গুলোতে তার বেশ কদর। অনেক কোম্পানি তাকে বেশ লোভনীয় অফার দিয়েছে স্থায়ী ভাবে কাজ করার জন্য। কিন্তু সে তাতে রাজি হয়নি। চাকরি মানেই ওদের দাস হয়ে যাওয়া। মুক্তমনা সাহেদের এই শৃঙ্খল ভাল লাগেনা। আর ক্রিয়েটিভ কাজ গুলোতে শৃঙ্খল থাকলে কাজের মান ভাল হয়না। আত্ম তৃপ্তি থাকেনা। তাই এখন কন্ট্রাক্ট ভিক্তিতে কাজ করছে কয়েকটি সফটওয়্যার কোম্পানির সাথে। এখন যে কাজটি হাতে নিয়েছে তা বড় একটি পোশাক বিক্রেতা কোম্পানি। পুরা ইউরোপ জুড়ে এদের প্রায় 12 হাজার স্টোর। সেই সাথে আছে শিপিং, ফিশারি, ডেইরী, ব্যাংকিং সহ অনেক প্রতিষ্ঠান। সারা পৃথিবী জুড়ে ওদের অফিস। ব্যবসার পরিসর বাড়ায় এবং আগের সফটওয়্যার ও নেটওয়ার্কিং এ কিছু মারাত্মক সীমাবদ্ধতা ধরা পড়ায় নতুন করে সব ঢেলে সাজানো হচ্ছে। তার উপর প্রাথমিক ভাবে সাহেদের একটি ডেমো ওদের খুব পছন্দ হওয়ায় ওরা সাহেদের ঐ কন্ট্রাক্ট কোম্পানিকে কাজ দিল। ঐ দিনই এই গ্রুপ অফ কোম্পানির প্রেসিডেন্ট মিস্টার সায়মন বেলুচ-এর সাথে পরিচয়। বয়স প্রায় ৭০ কিন্ত বুঝা যায় না। বিশাল দেহের সুদর্শন একজন ব্যক্তি। কিন্তু অসম্ভব বদ মেজাজি। ওনার সিস্টেমে কিছু ডেমো দেখাতে গিয়ে ওনার বার বার ফোন আসছিল আর সে কি কথার বাহার। এত অশ্লীল গালি গালাজ শুনে সাহেদের কান গরম হয়ে যেত। তখনই বুঝতে পারল ভদ্র লোক পাকিস্থানি বংশদ্ধুদ।ইংলিশ আর উর্দুতে সমানে গুষ্টি উদ্ধার। অসম্ভব অহংকারী। কথা বার্তায় মনে হত সারা পৃথিবী উনার আর পৃথিবীর সব মানুষ তার দাস। সাহেদ বুঝে উঠতে পারত না এত বদ মেজাজি লোক এত সম্পদের মালিক হয় কিভাবে যদিও এইটি একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি, আরও অনেক পার্টনার আছে। পরে উনার প্রোফাইল দেখে জানল উনি একজন পাকিস্থানি উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। উনারই অবৈধ অর্জিত সম্পদ সব ফুলে ফেঁপে আজ এই অবস্থা। কাজের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাহেদ জানল বাংলাদেশও এদের অফিস আছে এবং বাংলাদেশ থেকে ওরা প্রচুর পোশাক এবং মাছ আমদানি করে। আর এই অফিসেও কয়েকজন বাঙালি ছেলে কাজ করে বেশ ভাল পজিশনে। কিন্ত এইখানে সমস্যা হল ভারতীয় আর পাকিস্থানিরা কেন জানি বাঙ্গালিদের হেয় চোখে দেখে। বাঙালি মানেই এদের চোখে নিচু স্তরের প্রাণী। উঁচু পদের পাকিস্থানি বা ভারতীয় কর্মকর্তারা শুধু অজুহাত খুঁজে কিভাবে বাঙ্গালিদের গালিগালাজ করা যায়। শাহেদ অনেক সময় নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা। মাঝে মাঝে মন বেশ বিদ্রোহী হয়ে উঠত। সেই ছোট বেলা থেকেই তার আত্ম সম্মান বোধ টনটনে। কিন্ত তার ঠাণ্ডা মাথার জন্য যথেষ্ট সুনাম আছে। যাই হোক সাদা লোকদের কল্যাণে তারপরেও বাঙ্গালিরা ঠিকে আছে। সাদা লোকেরা বাঙ্গালিদের দক্ষতা আর কাজের একাগ্রতা জানে। তাই তারা তাদের বেশ সম্মান দেয়। এদিকে কাজ করতে গিয়ে সাহেদের সাথে সায়মনের একটি সহজ সম্পর্ক গড়ে উঠল। সাহেদের ব্যক্তিত্বকে সে বেশ সমীহ করে। সাহেদের কম্পানি তার বিষয়ে আগেই সায়মণকে অবহিত করেছে। তার উপর সাহেদকে রেফার করেছে ISO থেকে যারা তাদের প্রতিষ্ঠানের স্ট্যান্ডার্ড দেকভাল করে । সাহেদ বর্তমান সময়ের ইউরোপের একজন চোখস সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ওর গুরুত্বের কথা জেনে সায়মন তাকে একটু বেশি সমীহ করেন। তার উপর যে যে বিষয়ে দক্ষ না সে ঐ বিষয়ের মানুষদের প্রয়োজনে একটু বেশি সমীহ করেই।

প্রায় পাঁচ মাস কাজ করার পর সাহেদ বেশ গুছিয়ে নিয়ে আসল। তার নেটওয়ার্কিং- এ নতুন সফটওয়্যার পরীক্ষা মূলক ভাবে সফলতার সাথে অফিস সারা বিশ্বে কাজ শুরু করেছে। কিছু টুকটাক সমস্যা ছিল তাও শেষ করে এনেছে। এখন বস তার টেবিল থেকেই সারা বিশ্বে তার ব্যবসার সব কিছু দেখতে পান, অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন খুব সহজে। বয়স হয়েছে তাই এই সব সিস্টেমের জটিল ব্যাপার গুলো মাথায় ঢুকত না। বস বেশ খুশি নতুন সিস্টেমে। খুব সহজ এবং ব্যবহার বান্ধব। বদরাগী হলেও সায়মনকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলেনি।


বেশ কয়েকদিন ধরে সাহেদের দেশের কথা খুব মনে পড়ছে। সকাল বেলা থেকেই মন বেশ আনচান করছে। নেট এ দেখল আজ প্রহেলা ফাল্গুন। সারা দেশ আজ নতুন সাজে সেজেছে। ঢাকায় আজ হলুদের মেলা। বুয়েটে পড়ার সময় প্রতি বছর চারুকলায় বসন্ত বরন উৎসব মিস দিত না। মেয়েরা হলুদ সারি আর গাদা ফুল পড়ে যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যেত মনে হত এক ঝাঁক পরীর দল ঢাকার পথে নেমে এসেছে। তার উপর গত ৯ দিন ধরে তরুণদের মধ্যে যে অহিংস জাগরণ তা তাকে যেন টানছে। স্লোগান গুলো শুনলে পেশী গুলো টান টান যায়। ছলকে উঠা রক্তে যেন একাত্তরের ডাক শুনতে পায়। তারুণ্যের জোয়ারে পুরো দেশ একাত্ম। সেই জোয়ারের ধাক্কা এসে লেগেছে ইউরোপ আমারিকা সহ বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের বাঙ্গালির হৃদয়ে। যেন বাঙ্গালি আজ খুঁজে পেয়েছে তার আত্ম পরিচয়। নিজেকে স্থির রাখতে পারেনা সাহেদ। মনে মনে ভাবছে আর কয়েকদিন পরেই তো কাজ শেষ। একটু ঘুরে আসলে কেমন হয়।

সকাল বেলাতেই এমন একটি কাহিনী হয়ে যাবে ভাবেনি সাহেদ। নাস্তা করতে এসেই এই লঙ্কা কাণ্ড। রেস্টুরেন্টে ডুকেই দেখল মোল্লা চাচার চিৎকার চেঁচামেচি। উনার এখানে যারা কাজ করে তাদের বেশির ভাগই নিরীহ প্রকৃতির বাঙালি ছাত্র। অনেকই চুরি করে কাজ করে দুই পয়সা আয়ের জন্য। তাদেরই গালি দিচ্ছিল। কিছু হয়ত ভুল করেছিল। নতুন ছেলে, দেখলেই মায়া লাগে। কেমন অসহায় ভাবে দাড়িয়ে আছে, ভঁয়ে আতঙ্কে চোখ ছলছল করছে। সাহেদ পাশেই ছিল। ছেলেটির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল – থাক চাচা মাপ করে দেন, ছোট মানুষ।
সাহেদের কথা শুনে মোল্লা আরও তেলেবেগুনে জ্বলে উঠল – মাপ করে দিব? বেটা বদমাইস,মুক্তিকা আওলাদ, বীরাঙ্গনার বাচ্চা.........
.....................আইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই.............. সাহেদ ধিক বিধিক জ্ঞান শূন্য হয়ে কি করল জানেনা। শুধু “টাস” করে একটি শব্দ হল। গমগম করা রেস্টুরেন্ট সেই শব্দে স্থব্ধ হয়ে গেল। সবাই ফিরে তাকাল তাদের দিকে। অসুরের শক্তি যেন তার হাতে। মোল্লার গালে এমন চষে তাপ্পড় দিবে মোল্লা স্বপ্নেও ভাবেনি। গালে হাত দিয়ে সে ফ্যাল ফ্যাল করে হতবুদ্ধি হয়ে সাহেদের দিকে তাকিয়ে আছে। রক্ত লাল চোখে সাহেদ গজ গজ করে মোল্লার পাঞ্জাবির কলার ধরে বলল – হারামজাদা তুই রাজাকার আর কক্ষনও কোন বাঙ্গালিকে এই গালি দিলে তোকে কবর দিয়ে আমি জেলে যাব। সাহেদ ফুঁপাতে ফুঁপাতে বেরিয়ে গেল। হতবিহ্বল মোল্লা গালে হাত দিয়ে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।

সকালের সেই ঘটনা থেকেই সাহেদের মাথা গরম হয়ে আছে। স্বভাব বিরুদ্ধ একটি কাজ করেছে আজকে। জীবনে কারু গায়ে ও হাত তুলেনি। বাপের বয়সী একটা লোকের গায়ে হাত তুলল আজ জীবনে এই প্রথম। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার কোন অপরাধবোধ হল না। বরং নিজেকে খুব হাল্কা লাগছে, একটি কর্তব্য পালনের পর যে রকম স্বস্তি বোধ হয়। দীর্ঘ সময় ধরে কেউ প্রতিবাদ না করায় এরা একটি মিথ্যা বার বার বলে তা সত্যে পরিণত করে ফেলেছে। সীমা আতিক্রম করতে করতে অন্যের সীমায় ঢুকে পড়েছে। তাই শক্তি প্রয়োগ না করলে এরা নিজের সীমানায় ফেরত যাবে না। তার উপর তার গায়ে বইছে মুক্তিযোদ্ধার রক্ত। নিজের দেশ নিয়ে এইরকম বাজে কথা শুনে যার রক্ত জাগে না সে তো নিজেকে বাঙালি ভাবতে পারেনা।

যাই হোক আজ কাজটির শেষ দিন। ও দ্রুত মাথা ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করল। ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসল। সায়মনের সিস্টেমে সব কাজ শেষ এখন শুধু সামান্য কিছু বুঝিয়ে দেওয়ার পালা। তাই সায়মনের জন্য সায়মনের সিস্টেমের সামনে বসে অপেক্ষা করতে লাগল। যাই হোক একটু পরেই সায়মন আসল। কিন্তু এসেই চিৎকার চেঁচামেচি। এ কই ও কই। মুহূর্তেই সারা অফিসে যেন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। এক চলমান আতঙ্ক। এরই ফাকে এক ভারতীয় এসে বসকে কি যেন বলল। সাথে সাথে যেন বজ্রপাত হল। বেটা বাংলির বাচ্চাকে এখনি ডাক। এক মিনিট সময় দিলাম। ভারতীয় দৌড়ে গিয়ে বাঙ্গালি ভদ্রলোকটিকে নিয়ে আসল। শুরু হল মানসিক অত্যাচার। অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ। বাইরের একজন লোক যে তার সামনে বসে আছে তা গ্রাহ্যই করলনা। সাহেদ চুপচাপ কাজ করে গেলেও তার কান আবার গরম হতে লাগল। ইংলিশ গালি শেষ এবার শুরু হল উর্দুতে। বাঙালি ভদ্রলোক মাথা নিচু করে চুপ থাকলেও সাহেদ সহ্য করতে পারছিল না। অশালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। টগবগ করে ফুটছে সাহেদের রক্ত। এমনিতেই লোকটাকে ভাল লাগত না। তার উপর ঐ দিন যখন বলল ৭১-এ তার ডিউটি পরেছিল পূর্ব পাকিস্থানে তখন তার আর কিছু বুজতে বাকি রইল না। তারপরেও পেশাদারিত্ব বলে কথা। শুনেও না শুনার ভান করছিল। এইবার বাঙ্গালি ভদ্রলোক আত্মপক্ষ সমর্থন করে কিছু বলতে চাইল – সাথে সাথে হুঙ্কার – U bloody bangali – ৭১ রে তোর বাংলা মায়েরে আমি.....................তুই তো সেই মায়ের সন্তান............।

সাহেদ কান চেপে ধরে “ও মাগো” বলে আর্তনাদ করে সজোরে টেবিলে ঘুসি দিয়ে -----“ Haaaaaaaiiiii man You Shut Up …..enough enough its enough “ সাহেদের তর্জনী কখন সাইমনের মুখের সামনে চলে এসেছে সাহেদ খেয়াল করেনি। চোখ শিকারি বাঘের মত জ্বলজ্বল করছে। মনে হল এখুনি সায়মণকে থাবা দিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিবে। গলা দিয়ে গরগর শব্দ হচ্ছে – যেন টগবগ করে গরম পানি ফুটছে। ঐভাবেই সে ল্যাপটপটি হাতে নিয়ে সজোরে রুমের দরজা বন্ধ করে ঝড়ের বেগে লিফটের দিকে চলে গেল। এরকম বাঘের গর্জনে সায়মনের আত্মা কেপে উঠল। বিকট শব্দে যেন মাথা ঝিম ঝিম করছে। তার মত একজন জাঁদরেল সেনা কর্মকর্তার মুখের উপর কেউ এ রকম হুঙ্কার দিতে পারে তা সে বিশ্বাস করতে পারলনা। বোকার মত কিংকর্তব্য বিমুড় হয়ে সে দাড়িয়ে রইল। সারা অফিসে পিন পতন নিরবতা। অবাক হয়ে সবাই বসের দিকে তাকিয়ে আছে। যেন বাজ পড়ে সবাই মুহূর্তেই বোবা হয়ে গেল।


সাহেদ বাসায় আসতে আসতেই তার কাজ দাতা কোম্পানিকে ফোনে বলে দিল এই লোকের কাজ ও আর করবেনা। আর ও যা টাকা নিয়েছে তা ফেরত দিবে। কোম্পানির সি ই ও তো মাথায় হাত। এত বড় কন্ট্রাস্ট। তার উপর তার কোম্পানির সুনাম। অনেক বুঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সাহেদ অনড়। আত্মা বিক্রি করে অসম্মানের টাকা কামানোর মত অযোগ্য সে নয়। যাদের টাকার দরকার তারা তা করুক তাতে তার কিছু বলার নাই।


সারা বিকেল সন্ধ্যা নদীর পাড়ে হাটাহাটি করল সাহেদ। নদীর দুই পাশে অসংখ্য বিজলী বাতির আলো এসে পড়েছে নদীতে। সাহেদ সেদিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। মাকে বিষণ মনে পড়ছে। দেশের জন্য মন আনচান করছে। চোখের কোনে এক ফোঁটা জল চিক চিক করছে। সকাল বেলা থেকে দুইটি বিস্ফোরণের পর মন এখন অনেকটা শান্ত। ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় ঢুকল। দেখল জানালার বাইরের দিকে কাছের ভিতর থেকে একটা মা বিড়াল ছটফট করছে। গত কয়েকদিন হল একটা বাচ্চা বিড়াল তার ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। পায়ে ব্যথা পেয়েছে। বিল্ডিঙয়ের উপর থেকে পড়ে গিয়েছে মনে হয়। মৃত প্রায় ছিল। সাহেদের সেবা শুশ্রূষায় দুই দিনেই বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠল। কিন্ত মুখে কোন ডাক সুনেনি। সাহেদ আবিষ্কার করল মাকে দেখে বাচ্চাটি সমানে মিউ মিউ ডাকছে। সাহেদ জানালা খুলে দিতেই মা বিড়ালটি এক লাফে ঘরে ডুকে সে কি আদর। বাচ্চাটি যেন আহ্লালাদে আটখানা। আনন্দে লাফালাফি করছে।গড়াগড়ি খাচ্ছে মায়ের গায়ে। একটু পরে দুজনেই বেরিয়ে গেল। সাহেদের দিকে ফিরেও তাকাল না। তা দেখে হঠাৎ সাহেদের মধ্যে একতা উপলব্ধি আসল। এই যে সাহেদের কাছে এই কয়েকদিন বাচ্চাটি থাকা মানে হল সময়ের প্রয়োজনে তার শক্তি সঞ্চয় করা। কিন্তু আসল স্থায়ী জায়গা তার মায়েরই কোল। আর এটাই প্রাকৃতিক। এই কয়েক দিনে বাচ্চাটির মুখ দিয়ে মিউ শব্দ বের হয়নি কিন্তু মাকে দেখেই সে সমানে “মিউ মিউ”’ডাকতে শুরু করেছে। সাহেদের মনে পড়ল সায়মনের কথায় আহত হয়ে তার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে পরেছিল “মাগো” শব্দটি। তার মানে মনের ভিতরে এই “মায়ের ভাষা” প্রাকৃতিক ভাবেই প্রগামিং হয়ে আছে। সচেতনে নতুন ভাষা ব্যবহার করলেও অবচেতনে তা চিরস্থায়ী ভাবে অমোচনীয় প্রগ্রামিং হয়ে যায়। সাহেদ ধীরে ধীরে আলমিরা খুলল। বের করল সেই প্যাকেটটি। আসার সময় ছোট বোন তার হাতে দিয়েছিল। বলেছিল যেদিন তোর আমাদের কথা খুব মনে পড়বে এটা খুলবি। সাহেদ জিনিস গুলো বের করল। একটা সাদা রুমালে ছোট বোনের মেহেদি মাখা হাতের ছাপ। ছোট বেলা থেকেই এই মমতার হাত তার পরিচিত। সাহেদ পরম আদরে সেই হাত খানি মুখে লাগিয়ে ছোট বোনের স্পর্শ অনুভব করল। তার বুক ভারি হয়ে এসেছে। দম যেন আটকে আছে। চোখ ফেটে পানি আসছে। এবার মায়ের আধোয়া শাড়িটি নিয়ে ধীরে ধীরে নাকের কাছে এনে মায়ের গায়ের গন্ধ নিল। হঠাৎ ডুকরে কেঁদে উঠল- মা মাগো বলে শাড়িটি জড়িয়ে ধরে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। অনেকক্ষণ পরে উঠে দাঁড়াল। এবার একটি কোটা হাতে নিয়ে ডাকনা খুলল। এই কোটায় মাটি ভঁরে দিয়েছিল তার বোন। সাহেদ মাটির গন্ধ শুকল। জন্মভূমি বাংলার মাটি। জন্ম, শৈশব, কৈশরে এই মাটি গায়ে মেখে তার বেড়ে উঠা। তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা এই মাটিতেই শুয়ে আছে। হাতে নিয়ে অনুভব করল এই মাটি তাকে টানছে। এ এক কঠিন টান। চুম্বকের মত তাকে টানছে। সে মাকে ফোন দিল – মা হ্যালো হ্যালো বলছে কিন্ত সাহেদ কোন কথা বলতে পারল না। হু হু কাঁদতে শুরু করল যেন মায়ের কাছে আত্মসমর্পণ। ফোন রেখে সে কিছু কাগজ বের করল – যুক্ত রাজ্যের পাস পোর্টের আবেদন পত্র। একে একে সব কাগজ চিড়ল। মনে মনে বলল যা টাকা কামিয়েছি আর এখানে থাকার দরকার নেই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ব বিদ্যালয়ের অফার লেটারটা হাতে নিয়েই হাসল - আমার গন্তব্য। সাথে ছিল দুটা প্রোগ্রামের পেটেন্ট রাইটের কাগজ পত্র। মনে মনে বলল এই দুইটা দিয়েই তো আমার জীবন চলে যাবে। বিড়ালের বাচ্চার মতই সময়ের প্রয়োজনে সে এই দেশে শক্তি সঞ্চয় করতে এসেছে। কিন্তু তার আসল জায়গা তার মা, তার দেশ, তার বাংলাদেশ। অনেকদিন ধরে সিদ্ধান্তহীনতার পেন্ডুলামে দুলতে দুলতে আজ চরম একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারায় মনটা প্রশান্তিতে ভঁরে গেল। নিজেকে বেশ হালকা ফুরফুরে লাগছে।

একটু পরেই দেখল দরজায় নক। তার এই কাজের সি ই ও এসে হাজির। সন্ধ্যা থেকে মোবাইল বন্ধ ছিল বলে সরাসরি বাসায় চলে এসেছে। তাকে অনেক অনুনয় বিনয় করে বুজাল। শেষ মুহূর্তে এসে এই কাজ বুজিয়ে না দিলে মিলিয়ন ডলার ভেস্তে যাবে। তার উপর ভবিষ্যতে এরা কাজ দিবে না। তাদের সুনাম নষ্ট হবে। বললেন সায়মন তাকে ফোন করে ক্ষমা চেয়েছে। ওদের সিস্টেম যদি চালু না থাকে তবে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই অণুরোধ করেছে তোমাকে পাঠাতে। সাহেদের মন এখন বেশ শান্ত। পেশাদারিতবের একটা দায় বদ্ধতা তো আছেই। আর এই লোক গুলোর সাথেও তার সম্পর্কই ভাল রাখতে হবে তার ভবিষ্যতের জন্য। একটু ভেবে ও রাজি হল। একটা শর্ত দিল। সি ই ও সেই শর্তে প্রথমে নিম রাজি হলেও সাহেদের দৃঢ়তা দেখে রাজি হয়ে বলল সমস্যা নেই।

পরের কয়েকদিন মিস্টার সায়মনকে খুব স্বাভাবিক ভাবে সব বুজিয়ে দিয়ে একটি কাগজে কিছু গোপন কোড যা কেবল সায়মণই ব্যবহার করতে পারবে তা দিয়ে চলে আসল। ইতিমধ্যে সাহেদ সব গোছ গাছ করে কয়েকদিন পরেই রওনা দিল দেশে।
ভোঁরে ভোঁরে বাসায় এসেই কলিং বেল বাজাল। সে জানে এত সকালে মা নামাজ পড়ে। তার উপর আজ শহীদ দিবস। একটু পড়েই মা দরজা খুলল। ভূত দেখার মত চমকে উঠল, কণ্ঠে বিস্ময় – খোকা তুই!!!!!!!!! “মাগো” বলে সাহেদ মায়ের কোলে যেন ঝাঁপিয়ে পড়ল। দুজনেই অঝোর ধারায় কাঁদছে কিন্ত কোন কথা নেই মুখে...............। ভাষা নেই মুখে কিন্তু দুটি আত্মা যেন এক হয়ে মিশে কথা বলছে অনন্তকাল ধরে। এত ভাষায় এত শব্দ আছে কিন্ত বাংলায় এই “মাগো” শব্দটি যেন মুখ দিয়ে নয় আত্মা দিয়ে বের হয়। কারণ মাতৃভাষা সে-ত মুখের ভাষা নয় – সে-যে আত্মার ভাষা।


আজ ২১ ফেব্রুয়ারি –
সাহেদ মা আর ছোট বোনকে নিয়ে গিয়েছে শহীদ মিনারে। লক্ষ মানুষের ঢল নেমেছে। ফুলে ফুলে ভঁরে গেছে শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মানুষ শহীদ মিনারে ছুটে এসেছে দূর দুরান্ত থেকে – আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি – শুনে মনটা হু হু করে হাঁহাঁকার করে উঠে। তারা তিনজন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে গেল বাবার কবর জিয়ারত করতে।

এদিকে সায়মন সকালে এসে সিস্টেম অন করল। সিস্টেম অন হতেই নতুন পাসওয়ার্ড চাইল। সায়মনের মনে পড়ল সাহেদ বলে গিয়েছিল ২১ তারিখে নতুন পাসওয়ার্ড দিতে হবে। সায়মন সাহেদের দেওয়া কাগজটি বের করল –

১ম পাসওয়ার্ড – এস জিরো আর আর ওয়াই বি এ অ্যান জী এল এ ফোর এস ই ভি ই অ্যান টি ওইয়াই ও অ্যান ই
২য় পাসওয়ার্ড - এস জিরো আর আর ওয়াই বি এ অ্যান জী এল এ ফোর আফ আই আফ টি অয়াই টি ডাব্লিও ও

সায়মন লিখতে লাগল –
1st pass word – S O R R Y B A N G L A 4 7 1
2nd password – S O R R Y B A N G L A 4 5 2

শায়মণ একটি ধাক্কা খেল। পাসওয়ার্ডটীর অর্থ বুঝে মনে মনে মাথা নাড়ল। মুখ থেকে একটি শব্দ বের হল – Genius.
কৌশলে সাহেদ সায়মনের কাছ থেকে এই পাসওয়ার্ডের ব্যাপারটা এমনভাবে উপস্থাপন করেছিল যে সায়মন বলেছিল তুমি যে কোন একটা দিয়ে দাও। আর সাহেদও বলেছিল এই পাসওয়ার্ড কিন্তু বদলানো যাবেনা, অপরিবর্তন যোগ্য । সায়মন যখন অফিসে ছিলনা তখন সাহেদ অফিসে এসেছিল এবং ফোনে এই কথা আদায় করে নিয়েছিল। চালাকিটা এখন বুঝতে পারল সায়মণ। বৃদ্ধ বয়সে এসে জীবনের বাকি দিনগুলো যতদিন বেঁচে আছেন হয়ত তাকে প্রতিদিন বার বার এই দুটি লাইন লিখতে হবে -

SORRY BANGLA FOR 71
SORRY BANGLA FOR 52

সায়মন পিছনে হেলে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে চেয়ারে নিজেকে ছেড়ে দিল। মুহূর্তে চলে গেল দূর অতীতে। সেই একাত্তরে তরুণ বাঙ্গালি মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মাথা নত করে আত্ম সমর্পণ করার মুহূর্তটি। প্রায় নিরস্ত্র বাঙ্গালি তরুণদের হাতে আটক তাদের সুসজ্জিত বাহিনী। আজ ৪২ বছর পর আবার আর এক বাঙালি তরুণের হাতে তার পরাজয় । কেউ জানবেনা কিন্তু নিজের প্রয়োজনে তার এই অপমান প্রায়াসচিত্ত রূপে তাকে প্রতিদিন করে যেতে হবে। এ এক কঠিন নীরব প্রতিশোধ। সায়মনের চোখ আটকে রইল স্ক্রিনের দিকে। সি ই ও –র কাছে থেকে সফটওয়ারের এই নামটি সেই রাতে শর্ত হিসেবে আদায় করেছিল সাহেদ। ছোট একটি ডায়লগ বক্সে লাল সবুজে লিখা –

Welcome to Banglasoft .




উদয়ের পথে শুনি কার বানী ভঁয় নেই ওরে ভঁয় নেই,
নিঃশেষে প্রান যে করিবে দান ক্ষয় নেই তার ক্ষয় নেই।






সৌজন্য : রাসেল ভাই, কোরাম ।

( এই লিখাটি রাসেল ভাইয়ের সৌজন্যে সকল ভাষা সৈনিক, একাত্তরের সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ, দেশ এবং দেশের বাইরে নিবেদিত প্রান দেশপ্রেমিক সকল বঙ্গ সৈনিকদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হলো। )
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×