
নরেন্দ্র মোদী ভুল বলেননি—ইতিহাসই তার সাক্ষী। সমস্যা হলো, যারা ইতিহাস পড়তে চায় না, তারা সত্য শুনলে চেঁচামেচি করে।

নরেন্দ্র মোদী ভুল বলেননি—ইতিহাসই তার সাক্ষী। সমস্যা হলো, যারা ইতিহাস পড়তে চায় না, তারা সত্য শুনলে চেঁচামেচি করে।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান নিজেই প্রথমে আক্রমণ চালায়—ভারতের ওপরও কার্যত যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। কারণ কী? বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে ভারত কেন আশ্রয় দিল, খাবার দিল, আর মুক্তিযোদ্ধাদের কেন প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করল—এই মানবিক ও নৈতিক অবস্থানই ছিল পাকিস্তানের “অপরাধের” কারণ।
৬ ডিসেম্বর ১৯৭১—ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। গঠিত হয় মিত্র বাহিনী (বাংলাদেশ–ভারত)। লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে সেই মিত্রবাহিনী মাত্র ১০ দিনেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে।
১৬ ডিসেম্বর—ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছেই পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করে। এদিনটি যেমন বাংলাদেশের বিজয় দিবস, তেমনি ভারতেরও।
আমাদের যুদ্ধ ছিল ৯ মাসের—রক্ত, ত্যাগ আর গণহত্যার বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াই। ভারতের যুদ্ধ ছিল ১০ দিনের—কিন্তু সেই ১০ দিন না এলে ৯ মাসের সংগ্রামের পরিণতি এত দ্রুত ও স্পষ্ট হতো না। এই সত্য অস্বীকার করা মানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে খণ্ডিত করা।
নরেন্দ্র মোদী ভারতের বিজয় দিবসে শুভেচ্ছা জানালে যারা গায়ে জ্বালা অনুভব করেন, তারা আসলে নিজেদেরই ইতিহাসের পরাজয় ঢাকতে চান। কারণ ১৬ ডিসেম্বর তাদের আদর্শিক উত্তরাধিকারীরা পরাজিত হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা নিয়ে কুৎসা রটানো মানে—একদিকে শহীদদের আত্মত্যাগকে খাটো করা, অন্যদিকে ইতিহাসের সঙ্গে বেয়াদবি করা।
ইতিহাস বদলানো যায় না।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে এবং ভারতের কৌশলগত–মানবিক সহযোগিতায়।
এই বাস্তবতা যারা মানে না, তারা বিজয় দিবসও মানে না—কারণ সত্য তাদের পছন্দের রাজনীতির বিরুদ্ধে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




