somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে এলাম নতুন বিভাগীয় শহর রংপুর - কি কি দেখলাম.................শেষ পর্ব (পায়রাবন্দ)

০৩ রা মার্চ, ২০১২ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া খাতুন (বেগম রোকেয়া)-এর পৈত্রিক বাড়ি পায়রাবন্দ।এই মহীয়সী নারী জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর এখানেই এই পায়রাবন্দ গ্রামে। সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের এর ঘড়ের জন্ম উনার। তাঁর মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী।

পায়রাবন্দ রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার একটি ইউনিয়ন। রংপুর সদর হতে খুব সহজেই রিকসা বা ব্যাটারী চালিত অটোতে এখানে ঘুরে আসা যায়। বা আপনি ইচ্ছা করলে বাসেও আসতে পারেন। যারা কোন কাজে নিজস্ব পরিবহনে রংপুর যাচ্ছেন বা রংপুর হতে গাইবান্ধা-বগুড়া রোডে ফিরে আসছেন, তারা ইচ্ছে করলেই এই বিখ্যাত স্থানটি ঘুরে আসতে পারে মাত্র ১৫-২০ মিনিটে। খুন ভালো কাটবে সময়টা।
এখানেই রয়েছে বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ কার্যলয়, পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি গণকেন্দ্র পাঠাগার ও রোকেয়া কলেজ।






উনার বাড়ির পাশে সরকারী ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা হয়েছে একটি গেস্ট হাউজ ও বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন স্মরণে বাংলাদেশ সরকার একটি গণউন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। উনার পৈতৃক ভিটায় ৩ দশমিক ১৫ একর ভূমির ওপর নির্মিত হয়েছে বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র। এতে অফিস ভবন, সর্বাধুনিক গেস্ট হাউজ, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি ইত্যাদি রয়েছে। স্মৃতিকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়।দুটি ভবন রয়েছে। একটি প্রশাসনিক আর অপরটি মূল ভবন। মূলত এটি "বিকেএমইএ" এর ট্রেনিং ইনস্টিউট। এখানে প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন ট্রেনিং দেয়া হয়। বিকেএমই নামে ট্রেনিং সেন্টারে তরুণদের প্রশিক্ষদেওয়া হয়। তারপর বিভিন্ন জায়গায় তাদের কর্মসংস্হানের ব্যবস্থা করা হ্য়। সম্পূর্ণ বিনা খরচে যে কেউ এখান থেকে বিভিন্ন হাতের কাজের ট্রেনিং নিতে পারে। সবচেয়ে বড় ব্যপার হল এখানে থাকার জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা আছে।


কম্পাউন্ডের ভিতরে ঢুকে এগিয়ে গেলেই বেগম রোকেয়ার পিতলের চকচকে একটি ভাষ্কর্য/মূর্তি চোখে পড়বে।


অনেক বড় জায়গা নিয়ে এই স্মৃতিকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বাহিরটা অনেক সাজানো-গোছানো এবং পরিষ্কার। খুব সুন্দর সাজানো বাগান আছে যা আপনার মন কেড়ে নেবে।
Click This Link


বর্তমানে পৈত্রিক বাড়িটির আর কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই, শুধুমাত্র বিলুপ্তপ্রায় কিছু ইটের দেয়ালের গাথুনি ছাড়া। আসলে ওটাকে বাড়ি বলা ভুল হবে। ওটা একটা বাড়ির ধ্বংসাবশেষ।মূল বাড়ির অংশটি বর্তমানে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেয়া, অবশ্য যেকেউ ইচ্ছে করলেই সেখানে প্রবেশ করতে পারেন। গেতে তালা দেওয়া থাকে। একজন কেয়ারটেকার আছেন উনাকে খুঁজে বের করে ভিতরে ঢুকতে পারবেন।




আরও রয়েছে বেগম রোকেয়া ক্রাফটস যেখানে আপনি পাবেন ভূমিহীন ও দুস্থ মহিলাদের তৈরী (মূলতঃ পাটজাত) বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী।



দেখুন কি সুন্দর তাঁতের কাজ চলছে


এইটা হচ্ছে চরকা

বেগম রোকেয়া ক্রাফটসের শোরুম থেকে আপনি উপহার বা বাসা সাজানোর জন্য কিনতে পারেন অনেক কিছু। নীচে ছবিগুলো দেখেন কি সুন্দর সব হ্যান্ডিক্র্যাফট







আমি কিছু জিনিস কিনেছিলাম তা নীচে দিয়ে দিলাম



তৎকালীন মুসলিম সমাজব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়া ও তাঁর বোনদের বাইরে পড়াশোনা করতে পাঠানো হয়নি, তাদেরকে ঘরে আরবী ও উর্দু শেখানো হয়। তবে রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের আধুনিকমনস্ক ছিলেন। তিনি রোকেয়া ও করিমুননেসাকে ঘরেই গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শেখান।
১৮৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। বিয়ের পর তিনি 'বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন' নামে পরিচিত হন। তাঁর স্বামী মুক্তমনা মানুষ ছিলেন, রোকেয়াকে তিনি লেখালেখি করতে উৎসাহ দেন এবং একটি স্কুল তৈরির জন্য অর্থ আলাদা করে রাখেন। রোকেয়া সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্পের মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেন।
১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি ‘নারীর অধিকার’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখছিলেন।
এছাড়াও, মহিয়সী বাঙালি নারী হিসেবে বেগম রোকেয়ার অবদানকে চীরস্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য "রোকেয়া হল" নামকরণ করা হয়।
ঘুরে এলাম নতুন বিভাগীয় শহর রংপুর - কি কি দেখলাম......পর্ব ০১
ঘুরে এলাম নতুন বিভাগীয় শহর রংপুর - কি কি দেখলাম......পর্ব ২
ঘুরে এলাম নতুন বিভাগীয় শহর রংপুর - কি কি দেখলাম......................পর্ব ৩
ঘুরে এলাম নতুন বিভাগীয় শহর রংপুর - কি কি দেখলাম.............................পর্ব ৪
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১২ দুপুর ২:৪৯
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×