
গত বছর পহেলা এপ্রিলের ফেসবুক পোস্ট:
শেষ দুই-তিন সপ্তাহ ধরে কতদিন যে আমার একটা নদীতে ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করতেছে, এইটা শুধু আমিই জানি। একটু সবুজ সবুজ নদী। কলকলে ঠান্ডা পানি। রোদ, তাই পানিটা ঝিকমিক করতেছে। আশপাশ দিয়ে নদী ধারের যেসব গাছ-শস্য-লতা ফলে, সেসব থাকবে।
নদীতে যাব ঠিক এগারোটা থেকে বারটার মধ্যবর্তী সময়টায়। দুপুর একটায় যাওয়া যাবেনা। ওইটা বেশি দেরি। ঐসময় যাবে নদীর ধারে যাদের বাসা; নদীতে একটু গোসল দিয়ে, লুঙ্গিটা যত্ন নিয়ে পানিতে ধুয়ে, যোহরের নামাজ পড়তে যাবে অথবা দুপুরের ভাত খাইতে বসবে ছোট মাছ আর লাউ শাক দিয়ে, তারা।
আমার যাইতে হবে, এগারোটা থেকে বারটার যে রোদটা ওঠে, সেই রোদে। সাথে বাতাস থাকবে।
কিছুদিন থেকে ঢাকায় রোদের সাথে যে বাতাসটা বইতেছে, এরকম বাতাস। রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ছাদে গেলে এই বাতাসটা গায়ে লাগে। আবার দিনের বেলা দশটা-এগারোটার দিকে বাইরে রোদ উঠে যাবার পরেও পাওয়া যায়।
এই বাতাস ঢাকায় যতটা না বোঝা যাইতেছে, সবুজ বৃক্ষ ঘেরা নদীতে যাবার পর আরো বেশি বোঝা যাবে।
গত বছর বর্ষার সময় একবার কিশোরগঞ্জ যাইতে ইচ্ছা করছিল। তখন তো বাড়িতে। হুট করে তো যাওয়া যায় না। বেনজীর অবশ্য বলছিল যাইতে। ইদানীং যখন আমার নদীতে ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করতেছে, একই সময়ে কিশোরগঞ্জের হাওরের কথাও মনে পড়তেছিল।
এইতো আমি কবে জানি বেনজীর-কে বলতেছিলাম যে, তোদের হাওরে তো এখন পানি নাই, না?
এখন চৈত্র মাস। হাওরে পানি থাকার কথা না।
হাতিরঝিল জায়গাটা আমার বেশ পছন্দের এখন।
একদিন বেনজীরের সাথে বসে আড্ডা দিছিলাম।
গতবছরের কথা সেইটা। সেদিন আমি আর বেনজীর অনেক আলাপ করলাম। হাতিরঝিলের যে লেকটা আছে, সেখানে একটা উঁচু জায়গায় বসা ছিলাম আমরা। সেদিন বিকালবেলা ছিল। বাতাস ছিল সুন্দর। আমরা বাদাম খাইতেছিলাম আর কথা বলতেছিলাম।বেনজীর অনেক কিছু বললো। ওর ছোটবেলার কথা ওর অনেক না শোনা কথা, যেটা আগে শুনি নাই। সেসব বললো। আমি শুনলাম।
দুঃখও পাইলাম।
বেনজীর আরো বলতেছিল, বর্ষার সময় ওদের হাওর পানিতে কিরকম থৈথৈ করে। নৌকা নিয়ে যাইতে হয় সব জায়গায়। চাঁদওয়ালা রাতগুলিতে নৌকা নিয়ে ওরা হাওরের মাঝখানে যায়। নৌকায় শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখে।
হাতিরঝিলের লেকের পাড়ে বসে বসে আমি শুনতেছিলাম আর আমার চোখে ভাসতেছিল সবকিছু।
ইদানীং আমার অনেক নদীতে ঝাঁপ দিতে ইচ্ছা করে।
হাতিরঝিলের পাশে বসলে মনেহয়, হাতিরঝিল একটা নদী। সেই নদীর পাড়ে আমি বইসা থাকি, শুধু ঝাঁপ দিতে পারিনা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১১:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




