জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির মাখামাখির সমালোচনা করা হয় তা কিন্তু নয়! জামায়াত যে কৌশলে বিএনপিকে গ্রাস করছে, জামায়াতের রাজনীতি যেভাবে বিএনপিও এগিয়ে নিচ্ছে এবং তাতে যে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির সামনে বিপদ বাড়ছে, সেটা অনেকে বুঝতে পারলেও বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বুঝতে চান না। বিএনপির ঘাড়ে জামায়াত সওয়ার হয়ে নিজেদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের পথ সুগম করছে। জামায়াতের কৌশল বিএনপি হয় বুঝতে পারেনি, অথবা বুঝেও ক্ষমতার রাজনীতির মোহে আচ্ছন্ন হয়ে তাদের ফাঁদে ধরা দিয়েছে। বিএনপিকে আসলে ধীরে ধীরে জামায়াত গ্রাস করে ফেলেছে। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও তরিকুল ইসলামের মতো ‘আধুনিক’ মনের রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিরাও জামায়াতের একাত্তরের ভূমিকা সমর্থন করে বক্তৃতা দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তা সত্ত্বেও নাজমুল হুদার শেষ রক্ষা হয়নি, তাকে বিএনপি ছাড়তে হয়েছে। ফলে বিএনপির ঘাড়ে জামায়াত সওয়ার হয়েছে, নাকি বিএনপিই জামায়াতের ঘাড়ে সওয়ার হয়েছে- এ প্রশ্ন তোলা এখন অবাস্তব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি যে দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে সেটার পেছনে জামায়াতের অবদান কতটুকু তা রীতিমতো গবেষণা করে বের করার ব্যাপার। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে হাত মেলানোর ফলেই জামায়াত যে বর্তমানে একটি দৃশ্যমান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে- সেটা প্রমাণের জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই। বিএনপির মদদ বা পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের পক্ষে মাথা তুলে দাঁড়ানো কখনই সম্ভব হতো না। জিয়াউর রহমান জামায়াতকে পুনর্জন্ম দিয়েছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও জিয়া তার তথাকথিত সমন্বয়ের রাজনীতির নামে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে দেশের যে ক্ষতি করেছেন, তার কি কোনো মার্জনা হতে পারে? ২০০৫ সালে দেশব্যাপী জঙ্গি তৎপরতার পর কেউ কেউ অনুমান করেছিলেন, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে জোট ভেঙেও দিতে পারে। যারা এমন ধারণা পোষণ করেছিলেন, তারা জামায়াতের রাজনৈতিক ফন্দি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানেন না,
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭