somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাতৃভাষা বাংলায় আবহাওয়া বিজ্ঞান চর্চা (পর্ব ১৫): আপনি জানেন কি গাছের গুড়ি থেকে কোন অঞ্চলের আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন সম্বন্ধে জানা যায়??

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আপনি প্রশ্ন করতে পারেন বিশ্বে আবহাওয়া বিষয়ে দৈনন্দিন তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে মাত্র ১৫০ বছর পূর্বে তাহলে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা কয়েক শত বছর থেকে কয়েক হাজার বছর পূর্বের আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্বন্ধে তথ্য দেয় কিভাবে?



যখন থেকে নিয়মিত ভাবে আবহাওয়া বিষয়ে দৈনন্দিন তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে তার পূর্বের সময়কার আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে: যেমন শতবর্ষই কিংবা হাজার বছর বয়স্ক গাছের গুড়ি থেকে; বিভিন্ন পর্বত, গ্রিনল্যান্ড, ও এন্টার্কটিকা মহাদেশে স্তরে-স্তরে জমা হওয়া বরফের থেকে; কিংবা সমুদ্রে অবস্থিত কোরাল থেকে, বিভিন্ন লেকের তলদেশে অবস্থিত কাদামাটি বা সেডিমেন্ট কোরে অবস্থিত ফুলের পরাগরেনু বিশ্লেষণ করে, ইত্যাদি । আজকে আলোচনা করতে চাই গাছের গুড়ি দেখে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিজ্ঞানীরা কোন অঞ্চলের আবহাওয়া ও জলবায়ুর সম্বন্ধে জানতে পারে।

ছবির গাছের গুড়িটির অপেক্ষাকৃত হালকা রং নির্দেশ করতেছে এই অংশটি বৃদ্ধি পেয়েছে প্রতিবছর স্প্রিং ( বাংলাদেশের বসন্ত কাল) ও গ্রীষ্মের শুরুতে হালকা রং এর ঠিক পরের গাড় রং নির্দেশ করতেছে এই অংশটি বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রীষ্মের শেষের দিকে ও শীতের পূর্ব পর্যন্ত।

অনেকেই জেনে অবাক হবেন যে গাছের গুড়ি থেকে কোন অঞ্চলের আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন সম্বন্ধে জানা যায়। শুধু কি তাই? এই গাছে গুড়ির বিভিন্ন রিং দেখে বলা যায় কোন বছরে স্বাভাবিক পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে; কোন বছরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে; কোন বছরে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে (খরা হয়েছে)। কোন গাছ কেটে ফেলা হলে সেই গাছ থেকে যদি একটি গুড়ি বেড় করে নেওয়া হয় নিচের ছবিটির মতো করে তবে সেই গুড়ির বিভিন্ন রিং দেখে কোন নির্দিষ্ট বছরে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যাবে। শুধু কি তাপমাত্রাও বৃষ্টিপাত?



গাছের গুড়ির সবচেয়ে বাহিরের রিংটি হলও যেই বছরে গাছটি কাটা হয়েছে সেই বছরটি ও গুড়ির কেন্দ্রের রিংটি হবে গাছের জন্মের বছর। গাছের গুড়ির সবচেয়ে বাহিরের রিং থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত যদি ১০০ টি রিং থেকে তবে সেই গাছের বয়স ১০০ বছর। এই ১০০ টি রিং ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে কোন কোন রিং একটু মোটা আবার কোন কোন রিং অপেক্ষাকৃত খুবই চিকন। গাছের বৃদ্ধির জন্য তাপমাত্রা ও বৃষ্টির প্রয়োজন। যে বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে ও তাপমাত্রা অনুকূল ছিলও সেই বছর গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় ফলে সেই বছর গাছের গুড়ির রিং এর প্রস্থ বেশি হয়। পক্ষান্তরে যে বছর অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টিপাত হয় ও তাপমাত্রাও প্রতিকূল থাকে সেই বছর গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়ে ও ঐ বছর গাছের গুড়ির রিং এর প্রস্থ অপেক্ষাকৃত কম হয়। কোন কোন সময় গুড়ি দেখে চিহ্নিত করা যায় পর-পর কয়েক বছরে রিং এর প্রস্থ অনেক কম ও এর পরে একটানা কয়েক বছর প্রতিটি রিং এর প্রস্থ বেশি। পর-পর কয়েকটি রিং এর প্রস্থ বেশি হওয়া নির্দেশ করে ঐ কয়েক বছর ভালো পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে ও পর-পর কয়েক বছর খুবই চিকন রিং নির্দেশ করে ঐ কয়েক বছরে একটানা খরা অবস্থা বিরাজ করেছে।

গাছের গুড়ি থেকে জানা যায় কোন বনে কোন বছর দাবানল হয়েছে কি না? কিংবা কোন বনে কত বছর পর-পর দাবানল হয়। কিংবা কোন বছর কোন বনে পোকা-মাকড়ের ব্যাপক আক্রমণ হয়েছিল কি না?

ছবির গাছের গুড়ির গাছটির বেঁচেছিল প্রায় ৫০০ বছর। এই গাছটি যে বনে জন্মেছিল সেই বনে গত ৫০০ বছরে মোট ২৫ বার দাবানল হয়েছিল। কোন কোন বছর দাবানল হয়েছিল তা গাছের গুড়িটির মধ্যে নির্দেশ করা হয়েছে।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সিয়েরা-নেভাডা পর্বতের গভীর বনে এমন কিছু কাছ আছে যেগুলোর বয়স ৩০০০ থেকে ৫০০০ বছর। এই গাছগুলোকে বলা হয় আবহাওয়া ও জলবায়ুর জীবন্ত যাদুঘর।


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×