somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান কতটুকু............

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখাটির শিরোনাম দেখেই যে কেউ আমাকে রাজাকার বলে দিতে পারেন। অতি উৎসাহী কেউ কেউ আবার আমাকে যুদ্ধাপরাধীও বলে দিতে পারেন। এসব বলে ব্যবস্থা নিতে এসে স্বাধীনতার বছর পনের পরে জন্মগ্রহন করেছি বলে হয়ত হতাশ হতে পারেন। এসব নিয়ে তেমন মাথা ব্যাথা নাই।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য যখন উদগ্রিব ঠিক তখনি মাওলানা ভাসানী নির্বাচন বয়কটের ডাক দিলেন। দুরদর্শী ভাসানী ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন যে এই নির্বাচন কোনো সমাধান দেবে না। ফলে তার দলের শ্লোগান ছিল , নির্বাচনকে লাথি মার, পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন কর ।
যাই হোক বঙ্গবন্ধু নির্বাচনের পক্ষে অনড় ই রইলেন। জিতেও গেলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা তার হাতে ক্ষমতা দিল না। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষনে স্বাধীনতার স্পষ্ট ঘোষনা করেননি। তিনি মুলত চার দফা দাবি পাকিস্তান সরকারের কাছে পেশ করেছিলেন। ১। সামরিক আইন মার্শাল ল তুলে নিতে হবে। ২। সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে ৩। ইতিপূর্বে যত হত্যাকান্ড হয়েছে তার তদন্ত করতে হবে ৪। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হয়ে জনগনের সেবা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বোধহয় পূর্ব পাকিস্তানের সবথেকে শক্ত নেতা যিনি স্পষ্টত পাকিস্তানের অখন্ডতায় বিশ্বাস করতেন। তবে স্বাধীনতা ছিল প্রানের দাবি। আর সেই ঘোষনা টা তার কাছ থেকেই আসার কথা ছিল। সেই দায়িত্বও জনগন তাকেই দিয়েছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। করলে হয়ত এত লোককে আমাদের হারাতে হত না।
তিনি যদি ৭ মার্চের ভাষনে স্পষ্ট স্বাধীনতার ঘোষনা দিতেন , তাহলে ইতিহাসবিদরা বলেন , যে অনেক কম রক্তপাতে , এমনকি কোন ধরনের রক্তপাত ছাড়াই পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে যেত। কারন তখন পাকিস্তানি সৈন্য ছিল আনুপাতিক হারে বাঙালী সৈন্যদের তুলনায় খুবই নগন্য । ফলে তারা খুব একটা প্রতিরোধই হয়ত করত না। কিন্তু সেটা তিনি করেন নি। ফলে পাকিস্তানিরা তাদের সৈন্য সমাগম ঘটানোর সুযোগ পেল। তিনি তার ৭ মার্চের ভাষনে পাকিস্তানীরা আর সৈন্য এদেশে আনতে পারবে না এমন কথাও বলেন নি। এগুলো বলা সম্ভব ছিল্। কারন তখন অলরেডি তার কথায়ই দেশ চলত। এবং তিনিই ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা।
২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে কেউ পাকিস্তানী পতাকা না তুলে পূর্ব পাকিস্তানের লাল সবুজের পতাকা উড়িয়ে স্পষ্টতই বিদ্রোহের ও স্বাধীনতার জানান দিয়ে দিয়েছিলেন। সুতরাং তার পরেও কালবিলম্বের কারন কি ছিল?
২৫ মার্চ গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু নাকি টেলিগ্রামে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনকার সাত কোটি বাঙালীর মধ্যে আজ পর্যন্ত কেউ সেই টেলিগ্রাম পেয়েছিল বলে দাবি করেনি ।
এবং অনেকটা স্বেচ্ছায় পাকিস্তান সরকারের হাতে ধরা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এবং ২৫ মার্চ পাকিস্তানিরাই বাধ্য করে এদেশের জনগনকে যুদ্ধে নামতে। অবশ্য শত চাপ ও লোভ দেখানো সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার বিপক্ষে ও কোনো কথা বলেননি। সেটা বললে আমাদের স্বাধীনতা অনেক বিলম্বে হত।
২৭ মার্চ মেজর জিয়া প্রথমে নিজেকে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ঘোষনা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দেন, এবং সর্ব স্তরের বাঙালীকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে আহ্বান করেন। পরে অবশ্য তার এ ঘোষনা বাদ দিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা করেন। সেই ঘোষনা দেশবাসীকে অনুপ্রানিত করেছিল যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে। অবশ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তার ও আগে ২৫ মার্চ দিবাগত রাতেই। ইপিআর এর বাঙালী সৈন্যরা তাদের আত্মরক্ষার জন্য প্রানপনে যুদ্ধ করে যান। অনেক সচেতন যুবক ২৬ মার্চে নিজেরাই সংগঠিত হওয়া শুরু করে। এভাবেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। বর্তমান সরকার যাই বলুক , মূল ঘটনা সংক্ষেপে এমনই ছিল। এখন আপনারাই বিবেচনা করবেন কার কি ভূমিকা ছিল সেই যুদ্ধে।
১৮টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×