রাহান তাপস
শীত এমন একটা ঋতু যে ধীরে-ধীরে আভাস দিয়ে আসে।তাই শীতের আমেজটা সবার মনেই লাগে এমন কি প্রকৃতির মধ্যেও অন্য রকম আমেজ আসে।ধীরে-ধীরে এর রুপ-রস পরির্বতন হতে থাকে।প্রখর শীত আর কুয়াশা আসতে থাকে।তখনই শীতের আসল আমেজ উপভোগ করা যায়।এই আমেজ ধনী-গরীব সবাই পেয়ে থাকে ভিন্ন-ভিন্ন ভাবে।
আমি ছোট বেলায় শীতের সকালে যখন ইস্কুলে যেতাম তখন অন্যরকম আনন্দ পেতাম।সবুজ পাহাড় আর ঘাসের রাস্তাজুড়ে শিশিরের ঝিকিমিকি।দূর থেকে দেখে মনে হয়, এ যেন মুক্তার পাহাড়! নগ্ন পায়ে হাঁটলে মনে হয় শীতল গালিচায় হাঁটছি।ছোট ছোট ঝোপঝাড়ে আর ঘাসের গালিচাজুড়ে মাকড়সার জাল পাতা।তার ওপরে শিশিরের জল জমে কি যে এক অপরূপ দৃশ্য তৈরি হতো! আমরা সেই সব বিশাল রত্নভান্ডার পা দিয়ে পিসে পিসে ইস্কুলে যেতাম।
খেজুরের রস ছাড়া তো শীতের আমেজ কল্পনা করা যায় না।রাতের বেলা খেজুর গাছের রসের হাঁড়ি থেকে কাঁচা রস চুরি করে খাওয়া মজাই অন্যরকম।সকালে নানা রকমের রসের পিঠে খাওয়া চিন্তা করলে এখনও জিহ্বয় পানি এসে যায়!গরম ধোয়ায় গরম গরম পিঠা খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম।তারপর আবার লাড়কি চুলার পাশে বসে সব ভাই বোন মিলে গল্প করতে করতে পিঠা খাওয়া।ইস্ ! কি যে আনন্দের সেই সব শীতের দিন!
আর অর্থবিত্তের মালিকেরা রুমের দরজা-জানালা বন্ধ করে গরম হিটার চালায়ে লেপ মোড়া দিয়ে দুপুর বারটা-একটা পর্যন্ত নাক ডেকে ঘুমান।কুয়াশা ঠেলে রোদ বেরিয়ে আসলে তারা লেপ থেকে বের হয়। পরে তাদের ঠোঁটে উঠে উষ্ণ চা অথবা কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে সংবাদ পত্র পড়েন।এ এক রকম আনন্দ তারা উপভোগ করে।
আর যারা গরীব তারা খড়-কুটে এক জাগায় জড় করে আগুন জ্বালিয়ে গোল হয়ে বসে আগুনের তাপ নেয়।এভাবেই তারা রাত পেহায়।এটাই তাদের আনন্দ।আর সকালে সূর্যের প্রতিায় থাকে।একটু শীত থেকে পরিতাপ পাওয়ার জন্য।তবে তারা শীতের তেমন একটা আমেজ পায় না।
শৈত্য প্রবাহ হলে তাদের কস্ট বেড়ে যায়।শীতের প্রকোপে বাংলাদেশের কত যে মানুষর মৃতু্য হয় তার কেন সঠিক হিসাব নেই!তা ছাড়া শীতের কারনে শিশু ও বৃদ্ধ বিভিন্ন রোগ ব্যাধি যেমন ডায়রিয়া,নিউমোনিয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে।(এই সব কথা ভেবে আমি "শীতের আমেজ" রচনা লেখে পাঠাতে চাইনি।তবে রচনা টা "শীতের সকাল" হলে ভালো লাগতো।আমেজ শব্দ টা না দিলে খুব ভালে হতো।আমাদের আমেজ তখনই পূর্ণ হবে যখন আমরা একটাও গরীব মানুষকে এই তীব্র শীতের কারনে মরতে দিবো না ।)
* * * * * * *
হইতে,
রাহান তাপস
ইস্টান হাউজিং প্রকল্প
সি-32 আরসিন গেট
ফরিদাবাদ,ঢাকা-1204
বাংলাদেশ,ফোন 880187635207

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


