একবার হেমান্তে আমার নানা বাড়ি গিয়ে ছিলাম।উদ্দেশ্য ছিল নবান্নের পিঠা খাওয়া।ভাগ্যক্রমে সেখানে আর একটি পিঠে খাওয়ার দাওয়াত পেয়ে যাই।আগেই বলা ভালো আমার নানা বাড়ি পাহাড়ি এলাকায়।সেখানে অনেক উপজাতি থাকে।হেমান্তের মধু পূর্ণিমায় তারা একটা পিঠা উৎসব করে।সে উৎসবে আমার নানা ভাইকে দাওয়াত দিয়ে ছিল।
নানা ভাই সেই হেমান্তের এক মধু পূর্ণিমায়, আমায় সঙ্গে নিয়ে পিঠা উৎসবে গেলেন।যথারীতি অনুস্ঠান শুরু হলে।নাচ গান সব হলো এবার পিঠা খাবার পালা।হরেক রকমের পিঠা সাজিয়ে রেখেছে মাটির পাত্রে।যে যার ইচ্ছে, যতো খুশি খেতে পারে।আমিও খেতে থাকলাম ইচ্ছে মতো।পানিতে ভেজা এক ধরনের সুন্দর পিঠা দেখলাম কিন্ত সেটা ছোটদের খেতে দিচ্ছে না।আমার এতে আর ও বেশী লোভ হলো।তাই সুযোগ খুজছিলাম।এক সময় দেখি সবাই একটা বৃরে গেড়ায় একটা একটা করে পিঠা দিচ্ছে।সবার মনোযোগ ছিল ঐ বৃরে দিকে আর আমার ল ছিল ঐ পিঠের উপর সুযোগ পেয়ে গপা-গপ তিন চারটা খেয়ে ফেললাম।তার পর সেখান থেকে সরে আসলাম।একটু পরে দেখি সব কিছু দুটো করে।মাথাও কেমান ঝি্ম-ঝি্ম করছে।কিছু বুঝতে পারছি না।পূর্ণিমার চাঁদটাকে মনে হল বড়-বড় সেই পিঠা।সুতারাং আমি সেই চাঁদের পিছে ছুটলাম।পাহাড়ি এলাকা তো,মনে হয় অন্য পাহাড়ের চুড়ায় চাঁদটা পড়ে আছে।আমি সেই উৎসব থেকে সেই পিঠা (অর্থাৎ চাঁদে) খোজে দৌড়।
এদিকে আমার নানা ভাই আমাকে তন্ন-তন্ন করে খুজচ্ছে।অনুস্ঠানের কোথাও না দেখেতে পেয়ে,নানা ভাই চেচা মেচি শুরু করে দিল।আমার নাতি কোথায়?সবই খোজা শুরু করলো উৎসব ফেলে।কোথাও আমাকে পাওয়া যাচ্ছে না।সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লো এই খবর।"চৌধুরি সাহেবের নাতিকে পাওয়া যাচ্ছে না।"
পিঠাটা খাবার জন্য আমি দৌড়াতে-দৌড়াতে পাহাড়ি জঙ্গলে জ্ঞান হারালাম।কতোন সেখানে ছিলাম তা আমি বলতে পারবো না।
যখন জ্ঞান ফিরলো যখন তখন দেখি আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে।আর আমাকে ঘিরে আমার বাবা-মা,ভাই-বোন,মামা-মামী,নানা-নানী সবাই।আমি বললাম কি ব্যাপার, আমি এখানে কেন?আমার কি হয়েছে?
মামা বললো,"তোর পিঠে পিঠা দেওয়া হয়েছিল।"
তাই তো আমি তো পিঠা উৎসবেই গিয়েছিলাম।কিন্তু কি যেন একটা সমস্যা হয়েছিল।ঠিক মনে করতে পারচ্ছি না।
পাশ থেকে কে একজন বলে উঠলো তুমি ভেজা পিঠা খেয়ে ছিলে।
তখন আমার আবছা আবছা মনে এলে।ঐ পিঠা খেয়েই তো পূর্ণিমার চাঁদটাকে খেতে গিয়েছিলাম।তখন নিজের অজান্তেই বলে উঠলাম।সুকান্তের সেই বিখ্যাত পংক্তি ঃ-
"খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলছান- "এতো টুকো বলে থেমে গেলাম।
তখন আমার কবি মামা বললো কি-রে আর একটা গুরুপ্তপূণ শব্দটাই তো বললি না।রুটি শব্দটা না বল্লে তো কবিতাটা পূর্ণতা পায় না।
আসলে মামা আমার ঐ পিঠা খেয়ে মাথা যেনে কেমন হয়েগেছে।
নানা ভাই বললো,' হবে না ঐ পিঠা তো উপজাতিরা (যারা বড় তারা) খায়।তুই কেন খেতে গেলি?'
ব্যাপারটা তখন সবার কাছে পরিস্কার হয়ে গেলো।
কবি মামা এবার বলে উঠলোঃ-
"খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলছান পিঠা।"
রাহান
বাংলাদেশ
ফোন : 880187635207

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


