somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের নানা রঙ - পর্ব ২ (ছবি ব্লগ)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৮:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধুরা, ঈদের সময়টা নিশ্চয়ই অনেক ভাল কাটল । ঈদের আগে যে কবিতাটা দিয়েছিলাম তা পড়ে অনেকের ধারণা হয়েছে আমার ঈদ মনে হয় সবই মাটি হয়ে যায় । আদতে তা নয়, এবার মোটামুটি একটা ব্লাস্টিঙ (ডিস্টিঙ ডিস্টিঙ B-)) B-)) B-)) ) ঈদ কাটল ।

তো ঈদের এই বন্ধে আপনাদের জন্য কিছু ছবি তৈরি করেছি । আমার আজকের জীবনের অনেক রঙে স্বাগতম । কেমন লাগে দেখবেন আর বলবেন সবাই ।

প্রথমেই শেকড়ের ছবি । ঈদের সময় আমরা আমাদের শেকড়, আমাদের চিরচেনা গায়ের পরিবেশে ফেরত যাই । সেই শেকড়ের যাত্রায় কত দূর্বিপাক সবাই সহ্য করল তাই না ??



হে বৃক্ষ, অনন্ত বিস্তৃত হোক-
শিকড় তোমার, ভূতল কিংবা ভূধর ।
চারিদিকে হোক জয়জয়কার-
তোমায় করি নমস্কার !

পরবর্তী ছবিটা মেঘের । আপনারা সবাই জানেন মেঘ বিষয়ে আমার অস্বাভাবিক দূর্বলতা । তাই মেঘের প্রচুর ছবি তুলেছি । যা নিয়ে আলাদা পোস্ট দেবার পরেও আমার মনে হয় মেঘের সৌন্দর্য বর্ণন এখনো শেষ হয়নি ।




ওগো মেঘ, তুমি উড়ে যাও
আমার প্রিয়ার কাছে । কানে কানে
শুধায়ো তারে, এই হৃদয় মন্দিরে
ইষ্টদেব শুধু তুমি, হে প্রিয়তমা ।

যেহেতু আমার সিরিজের নাম জীবনের অনেক রঙ তাই এবার একটা জীবন ঘনিষ্ঠ ছবি দেয়া উচিত কি বলেন ?? ছবিটি একজন জেলের । তাকে মাছ ধরতে দেখা যাচ্ছে । কিন্তু আমরা থাকতে থাকতে সে বেশ কবার জাল ফেলেও কোন মাছ পায়নি ।



মাঝ নদীতে পোতা আমার,
ছোট্ট একটা জাল ।
সারা দিনে মাছ পাইনা-
হায়,হইল এ কী আকাল ??

এবারে আমরা সিলেটে যাই । চা বাগানের ভেতর থেকে সবুজের স্বাদ নিয়ে আসি । এইটি সিলেটের প্রথম চা বাগান । ১৮৫৪ সালে স্থাপিত ।



মেঘের কাছাকাছি বাস করা
এইসব চা গাছেরা, টিলার খাজে
নিয়েছে অবস্থান । ছায়াবৃক্ষ তলে-
যে শান্তি তারা খুজে ছিল,
পায়নি তার দেখা । নিষ্ঠুর মানবেরা
শতবর্ষ ব্যাপী রেখেছে বন্দী করে
আকারের বৃত্তে অনন্তের তরে ।

যারা জানেন না তাদের জন্য- চা গাছ সহজে মরে না অনুকূল পরিবেশে । তাই মালিণীছড়ার বেশির ভাগ চা গাছই ১৮৫৪ বা এর আশে পাশে লাগানো । আর নতুন করে লাগাতে হয়নি ।

উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু রাজবাড়ী রয়েছে । তার মধ্যে একটি হল নাটোরের রাজবাড়ী । এটি বড় তরফের বাড়ি হিসেবে সমধিক পরিচিত । ছবিটা মোবাইলে তোলা তাই অত পরিস্কার নয় ।



কথা কও কথা কও
স্তব্ধ অতীত ! হে গোপনাচারী ।
.......রবি ঠাকুর

এবারের ছবিটা সূর্যাস্তের । এই জিনিসটা খুব সুন্দর ছবির জন্ম দেয় । তাই আমার খুব ভাল লাগে তুলতে । অপার্থিব সব রঙ ।



নিমগ্ন অন্ধকারে ডুবে যাওয়া
মর্ত্যমানবেরা দেখে
সুনীল সাগরের বুকে
প্রবল সূর্যের আত্মবিসর্জন ।

গত ব্লগে একটা ছবি ছিল, বৃষ্টি জলের । সেই ছবিটা আদিরূপ ছিল এই -



পাতার বুকে বৃষ্টি জলের খেলা
দেখে জাগে আনন্দেরই মেলা ।

সৈকত তটে একটা মস্ত আকর্ষণ লাল কাকড়া । কি সুন্দর গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় ! দেখতে খুব ভাল লাগে । তারই একটা ছবি ইনানী বিচের লাল কাকড়া ।



সাগরেরই তীরে থাকা-
যেন শিল্পীর হাতে আকা,
ছোট লাল কাকড়া গুলো -
ছোটে এড়িয়ে বালি ধুলো !
দেখতে পেলে মানুষ কোন
ঢুকে যাবে গর্তে যেনো ।

এবারের ছবিটা কান্তজিউ মন্দিরের । এই মন্দিরের খ্যাতি এর টেরাকোটা কাজের জন্য । টেরাকোটার মাধ্যমে সমগ্র রামায়ণের কাহিনী মন্দিরের গায়ে লিপিবদ্ধ । তারই একাংশ



স্বপ্ত কান্ড রামায়ণ-
হয়েছে অলংকরণ,
মন্দির গাত্রে । হায় বিস্মৃতি
কত কথা কত স্মৃতি
হারায়ে গেছে চিরকালের তরে
অজানা কোন বানীর ভিড়ে ।

আবারো সাগরে যাই । ভেসে চলা জেলে নৌকোর ছবি এটি -



দরিয়ার ঢেউ কাটিয়া
চলে উজান গাঙের নাইয়া !

এবারের ছবিটি একজন বৃদ্ধ লোকের । সত্তরোর্দ্ধ এই বৃদ্ধ কানে ভাল শুনতে পান না । এই বয়সে শরীর ও সায় দেয় না কাজে । তবু তিনি লিপ্ত জীবন সংগ্রামে, পেটের দায় মেটাতে যে হবে তাকে




জীবন তোমায় দেয়নিকো
একফোটা সুখ, একফোটা ছাড় !
তাই আজো মাছের খোজে
বেরোতে হয় প্রত্যুষে । হয়ত বা
মলা ঢেলা দু একটা কোনদিন মেলে ;
কোনদিন মেলে না । তোমার
দীর্ঘশ্বাস কেউ দেখে না চেয়ে ।

শেষের দিকে চলে এসেছি । শেস করবার আগে গত পর্বের মত এবারো একটা প্রবালের ছবি দেই । এইটি কিন্তু পানির নীচে -



সবুজ প্রবাল জলের তলায়,
দেখে সবার মন উছলায় ।

এবারে সর্বশেষ ছবি । যারা সেন্ট মার্টিনে গিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই দেখেছেন কি অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা হয় যখন কাকড়া গুলো হেটে যায় বেলাভূমে । খুব ভাল লাগে দেখতে ।



তুমি হাটো বালুকাবেলায়
নিজের সুরে নিজের খেলায় ।
সেই খেলাতে মন ভরে-
সাগরের তীর ধরে;
হেটে চলা মানবের ।
এ সাগর, এ তট সবই তোমাদের !

অনেক হল । এবারে বিদায় । সবাই ভাল থাকুন

উৎসর্গ : এই পোস্ট টা সুমন ভাইয়াকে উৎসর্গ করলাম । ভাইয়া তোমার জন্যই প্রত্যেকটা ছবির নীচে কিছু না কিছু লিখেছি । আমার মনে হয় না এরকম কোন ব্লগ কেউ কোনদিন লিখেছে ।

পরের পর্বের লিঙ্ক - জীবনের নানা রঙ -পর্ব ৩

বি.দ্র : পুরোনো ছবি ব্ল গুলো -

১) জীবনের নানা রঙ পর্ব -১

২) বান্দরবানে একদিন, ১ম পর্ব

৩) বান্দরবানে একদিন: ২য় পর্ব

৪) মেঘের অনেক রঙ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১২
৫০টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না পারার কষ্টটা সমালোচনার কোন বিষয়বস্তু নয়

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬

গতকালের একটি ভাইরাল খবর হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য বিসিএস পরীক্ষা দেয়া হলো না ২০ প্রার্থীর !! অনেক প্রার্থীর কান্নাকাটির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান এর নিয়ামানুবর্তিতার জ্ঞান বিতরনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×