somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অরিত্রীর আত্মহত্যা এবং শিক্ষিকা গ্রেপ্তার !!!

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর থেকে জঘন্য কি আর হতে পারে??
শিক্ষিকা তার দায়িত্ব পালনের জন্য গ্রেপ্তার!!!

ভেবেছিলাম কিছু লিখব না। কিন্তু ঘুমাতে পারছিনা। অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষিকা গ্রেপ্তারের বিষয়টা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। স্রোতে গা ভাসাতে না পারার জন্য দুঃখিত।

##
শিক্ষিকার দিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তোলার আগে প্রশ্ন করুন নিজের বিবেককে...

১. আত্মহত্যার জন্য কারণ হিসাবে এইটা কতটুকু যৌক্তিক?

২. শিক্ষিকার কারণেই কি সে আত্মহত্যা করেছে? শিক্ষিকা কি অনৈতিক কিছু করেছেন? আত্মহত্যার প্ররোচনার মত কি আসলেই কিছু ছিল?

৩. আপনার মতে শিক্ষিকা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আপনার কাছে যথার্থ মনে হতো। বা আপনি শিক্ষিকার জায়গায় হলে কি করতেন?

৪. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন কারণে-
তার বাবা মাকে অপমান করা হয়েছিল সে কারণে?
নাকি বাবা মার ভয়ে?
নাকি সে নিজে, "এই মুখ কিভাবে দেখাব" এর মতো ভাবনা থেকে?

৫. যদি অরিত্রী আত্মহত্যা না করতো, তবে কি এখন যারা এটাকে সমর্থন করছেন তখনও করতেন? বা যে ভাবে ভাবছেন, সেভাবেই ভাবতেন?

৬. অরিত্রীর আত্মহত্যা কোন ভাবে কি সমর্থন যোগ্য?

৭. অরিত্রীর আত্মহত্যাকে সমর্থনের পরিণাম বা ভবিষ্যৎটা কি হতে পারে?


##
অরিত্রীর আত্মহত্যায় আমার সহানুভূতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন। তাদের জন্য বলে রাখা দরকার, কোন ভাবেই চাই না এভাবে কোন প্রাণ ঝরে যাক।
তার মানে এটাও না যে, তার আত্মহত্যা অন্য একটি অন্যায় কাজকে সমর্থন করার অনুমতি দিয়েছে।

অরিত্রীর আত্মহত্যা যদি শুধুমাত্র এই ঘটনাকেই কেন্দ্র করে হয়ে থাকে, তবে আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি,
যদি মেয়েটার সাথে অন্তত একটা দিন তার মা বা অন্য কেউ পাশে থাকতেন, তবে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা হতো না।
কারণ মানুষ হয় দীর্ঘদিনের হতাশা, কষ্ট, যন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে আত্মহত্যা করে;
নাহয় কোন আকস্মিক ঘটনার আকস্মিকতায় সাময়িক ভাবে কোন পথ খুঁজে পায় না, মানসিক ভাবে অতি আবেগপ্রবণ এবং হয়ে একটা ঘোরের মধ্যে থাকে। আবেগ, মানসিক অস্থিরতা এবং অনেক বেশি জেদ কাজ করে, ঠিক সেই মুহূর্তে এরকম একটি দুর্ঘটনার জন্ম হয়।
সেই মুহূর্তটা কেটে গেলে, একটু শান্ত করতে পারলে আর এরকম আত্মহত্যা হয়না।


##
একবার চিন্তা করে দেখেছেন কি-

১. এরকম একটা ঘটনা ঘটার পর অরিত্রীর পরিবারের এর কি উচিত ছিলনা, যে কারো এক জনের অরিত্রীর সঙ্গে থাকা? কেন থাকলো না?

২. কেনো এরকম একটা ঘটনার পর, একা রুমে যেতে দিলেন তার বাবা মা?

আপনার কি কোন ভাবে মনে হয় না, অরিত্রীর আত্মহত্যার প্রথম দায়ভার তার পরিবারের! (যদি অরিত্রীর ছাড়া অন্য কাউকে এর দায়ভার দিতেই চান কেবল সে ক্ষেত্রে)।


##
এখন অনেকেই বলতে পারেন ব্যবস্থাপনা ঠিক নাই, শিক্ষা বাণিজ্যের কথা।

ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জড়িত তাদের সবার বিচার হওয়া দরকার, ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন দরকার। সেক্ষেত্রে এই ৩ জন শিক্ষক আলাদা ভাবে দায়ী হতে পারে না, কোন ভাবেই না। অনন্যা অন্যায়ের বিচার তার আপন গতিতেই সেই বিষয়ের উপর নির্ভর করেই হবে।

১. অরিত্রী কি জানতো না, পরীক্ষার সময় মোবাইল রাখা নিষিদ্ধ। অথবা ধরা পরলে তার পরিণাম সম্পর্কে?

২. অনেকেই বলছে মোবাইলে যা পাওয়া গেছে সেগুলা আসে নাই। তখন আসলে কিছু বলার থাকে না। তার মানে শুধু মাত্র সেগুলা আসলেই সম্পূর্ণ ব্যাপারটা সমর্থন যোগ্য হতো?


অরিত্রীর বাবা মার সাথে শিক্ষিকার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, তার বিচার স্বাভাবিক ভাবে যেটা হবার সেটা হবে। সেটার সাথে অরিত্রীর আত্মহত্যার ব্যাপারটা গুলিয়ে বিচার করাটা অনেক অযৌক্তিক বলেই মনে করি। বরখাস্ত করে তদন্ত করা পর্যন্ত ঠিক ছিল। এখানে আদালত, পুলিশ আসবে কেন? এখানে কি দুর্নীতি হয়েছে? এখানে কি অনৈতিক কিছু হয়েছে?

অরিত্রীর বাবা মা এর জায়গায় নিজেদের ভাবছেন, বসাতে বলছেন। কিন্তু কেউ কি শিক্ষিকার জায়গায় নিজেদের বসিয়েছেন।

শিক্ষকদের আচরণ নিয়ে শুধু কথা বললে হবে না, এখানে অভিভাবক, শিক্ষার্থী সবার আচরণ নিয়েই কথা বলা উচিত। আমরা এখন প্রত্যেকেই প্রত্যেককে অনেক বড় মনে করি। আর বিপত্তি সেখানেই। বাবা মা হিসাবেই কতজন আছেন, এখনকার বাচ্চাদের উপরে নিয়ন্ত্রনে সক্ষম?


##
সমস্যার মূল নিয়ে ভাবিনা। শুধু স্রোতে গা ভাসিয়েই চলেছি। এর কারণেই আমাদের নতুন কোন ইস্যু আসলে পুরাতন গুলো সহজেই হারিয়ে যায়।

শিক্ষিকাদের আমরা শিক্ষিত মানুষেরাই এত নোংরা ভাষায় গালি দিচ্ছি, এত বাজে কথা বলছি যা মুখে নেবার মতন না। আবার নিজেদের শিক্ষিত দাবি করছি। আসলে যে দেশে এরকম ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষিকার হাতে হাতকরা পরে, সে দেশে আমাদের মতো গালিবাজ জন্ম নেবে সেটাই স্বাভাবিক।

সব থেকে যে বিষয়টা দুঃখজনক এবং হতাশার সেটা হল, আমরা শিক্ষকদের শাসন এবং দায়িত্ব কর্তব্য পালনের অধিকার হনন করছি, সেই সাথে শিক্ষার্থীদের আহ্লাদের সাথে অন্যায় করার অনুমতি দেবার পাশাপাশি অভয়ও দিচ্ছি!!


##
একটা ঘটনাকে আবেগ দিয়ে ভাবছেন তাতে আমার কোন সমস্যা নাই,
কিন্তু তাই বলে বিবেকটাকে ঘুমিয়ে রাখবেন!!!


যারা শিক্ষিকার ফাঁসি চাচ্ছেন, তাদের কাছে আমার শেষ প্রশ্ন-
আপনার সন্তান অপরাধ করলে, আপনি যখন শাসন করবেন,
তখন যদি সে আত্মহত্যা করে, তখন আপনি তার দায়ভার নিয়ে জেলে যেতে প্রস্তুত আছেন তো?

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:১১
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×