
এই প্রশ্নটি যে আমার আজকেই মনে হল তা না, তবে গত শুক্রবার বিএনপির গুলশান অফিসে খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেললনে যোগ দিতে গিয়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানকে অফিসের গেট থেকে ঢুকতে না দেয়ায়, ভাবছি বিএনপি বা খালেদা জিয়া আসলেই কি কয়েকজন বেতনভুক্ত কর্মচারীর করপোরেট প্রটোকলে বন্দি। বিষয়টি নতুন না , এর আগেও বহুবার সংবাদ মাধ্যমে এসেছে বিএনপির তৃনমুলতো বটেই অনেক সিনিয়র নেতাও নাজেহাল হয়েছেন গুলশান অফিসের স্টাফদের দ্বারা।
কিন্তু অতি সম্প্রতি এই বিষয়টি খুব নিয়মিত হয়ে গেছে ।শুক্রবার বিকেলে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রগ্বনিত হয়ে বলেন 'খালেদা জিয়া এখন বন্দি রয়েছেন, আর তিনি যে কারাগারে বন্দি তার জেলার অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস'
অনেকে হয়তো বলবেন আখতারুজ্জামান এর বর্তমান অবস্থান বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ায় এমনটি করা হয়েছে।কিন্তু বিষয়টি তা না, কিছুদিন পুর্বে কোকোর লাশ যেদিন বাংলাদেশে আনা হয় সেদিন বিএনপির কয়েকজন সাবেক মহিলা সাংসদ নুরজাহান ইয়াসমিন,নিলোফার মনি,হেলেন জেরিন খান,শাম্মি আখতার ও পাপিয়াকে গুলশান অফিসে ঢুকতে বাধা দেয়ায় তারা নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে ব্যপক বাক-বিন্ডতায় জরিয়ে পরেন, ক্ষোভে তিনি বলেন আমি তিন বারের এমপি,জিয়ার আমলেও এমপি ছিলাম তুই কে ?
ঐ একই সময় আর একটি ব্যাপার সবার সমালোচনায় ছিল, শিমুল বিশ্বাস নামের খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী , যিনি মিডিয়ায় খালেদা জিয়ার ঘুমের ঔষুধ দিয়ে ঘুম পাড়ানোর খবর জাতিকে শুনিয়েছিলেন , আবার প্রধানমন্ত্রীর জন্য দৌড়ে শোক নিয়ে রাস্তায় যাওয়ার গল্প বলেছিলেন। এই লোকের বডি ল্যংগুয়েজ আর ভাবসাব দেখে আমার মনে হয় খালেদা , তারেকের পরে শিমুলই বিএনপির সবচেয়ে বড় নেতা।
চেহারায় বেতনভুক্ত কর্মচারীর ছাপ থাকলেও সাজেগোজে টাই/কোর্ট ছাড়া একে কখনও দেখা যায়না। গত শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনেও তার ব্যতিক্রম ছিলনা।
আমি এসব কথা বলছি এ কারনে, কারন আমার কাছে কেন যেন মনে হয়,বর্তমানে কিছু অরাজনৈতিক সাংবাদিক,সুশীল,আমলা ও বেতনভুক্ত কর্মচারি বিএনপিকে নিয়ন্ত্রন করছে। এবং এরাই খালেদাকে নেতাকর্মি থেকে বিচ্ছিন করে ফেলেছে। এর ফলে নেতা কর্মিদের সংগঠিত শক্তি নিয়ে বিএনপি মাঠে থাকতে পারছে না। কৌশলী রাজনিতিতে বার বার পিছলে পরছে।
রাজনীতিতে গ্রহনযোগ্যতার কিছু ব্যপার আছে, কারন একই কথা মির্জা আব্বাস বা খোকা বললে তার যা প্রতিক্রিয়া হবে, এইসব শিমুল,পলাশ রা বললে সেটা হবে না। এবং বিএনপির কর্মসুচি ও আন্দোলন এর ব্যর্থ্তার এটা একটা বড় কারন।
আমার মুল্যায়নে, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লিগ এখনও সবকিছু নিয়্তন্রন করতে পারছে, কারন তোফায়েল, আমু,শাহজাহান খানের মত কিছু লোকের টিমওয়ার্ক এবং শেখ হাসিনার কৌশলি ভুমিকা। তার বিপরিতে বিএনপিতে নেই কোন টিমওয়ার্ক, খালেদা জিয়ার সাথে দলের সিনিয়র নেতাদের প্রায় যোগাযোগ হীন অবস্থা।এবং সেই সাথে শীমুলদের মত কিছু কর্মচারি আচরন বিএনপির নেতাদের আরও বেশী নিরুতসাহিত করে ফেলছে বলেই মনে হয়।
আমি বুঝিনা খালেদা জিয়া বা বিএনপির নেতা রা এটা এ্যলাউ করে কিভাবে, কিন্তু দেখবেন গুলশান অফিসে অনেক সিনিয়র নেতাকে বাদ দিয়ে স্টাফরা অনেক ঘোষনা দেন, যেমন গত শুক্রবার কে একজন বললেন , খালেদা জিয়া কোন প্রশ্নের উত্তর দিবেন না, কিন্তু পরে খালেদা জিয়া মুন্নি সাহার একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। কথা হল যদি সত্যি দলগত সিধান্ত হয় তিনি উত্তর দিবেন না, তাহলে সেটা নজরুল ইসলামকে দিয়ে বলালে ভাল হত, আবার দেখলাম সামনের সারিতে নজরুল ইসলাম খানের পরেই শিমুল বিশ্বাস বসেছেন।আমার জানামতে গুলশান কার্যালয়ে সেলিনা রহমান সহ আরও অনেক নেতা ছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়ে এই সব অফিস স্টাফরা সামনের সারিতে থাকে কিভাবে।
এসব কর্মকান্ডে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কারন দলের মুল প্রান হচ্চে দলের নেতা কর্মি , কিন্তু সেই নেতা কর্মির চেয়ে যদি দলের বেতনভুক্ত কর্মচারি রা বেশী ক্ষমতাবান হয় তাহলে দলের প্রতি, দলের কর্মসুচির প্রতি নেতা কর্মিদের উতসাহ থাকেনা। কারন রাজনৈতিক দল আর করপোরেট অফিস এক জিনিস না। করপোরেট অফিসে বড় কর্তার স্বাক্ষরে তার সহকারি কোন একটা আদেশ জারি করলে তা বাস্তবায়ন হয়ে যায়, কিন্তু রাজনীতিতে কোন কর্মসুচি বাস্তবায়ন করতে হলে নেতাকর্মীদের সক্রিয় অশগ্রহন জরুরী, কিন্তু বিএনপিতে বর্তমানে সেটা নাই। বর্তমানে বিএনপি চলছে কিছু অরাজনৈতিক সাংবাদিক /আমলার পরামর্শে ও শিমুল/পলাশদের মত কর্পরেট স্টাফদের তত্তাবাধনে যার ফলে রাজনীতির মাঠে খাবি খাচ্ছে বিএনপির ব্যপক জনসমর্থিত তত্বাবাধয়ক আন্দোলন।
আমার কাছে মনে হয় বাস্তবিক অর্থে্ই খালেদা জিয়া ও বিএনপির রাজনীতি জিম্মি হয়ে গেছে কিছু অরাজনৈতিক মানুষের কাছে।এটা জাতির জন্য অবশ্যই ভালো খবর নয়, কারন আওয়ামী লীগের বিপরিতে বিএনপির বিকল্প এই মুহুর্তে আর কিছু নেই আমাদের দেশে।তাই অবশ্যই বিএনপির সঠিক রাজনিতীই পারে, দেশের জন্য মংগলজনক ভবিষ্যত ত্বড়ানিত করতে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


