somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী মুক্তি বা নারী স্বাধীনতার নামেই বেশী নিগৃহীত হচ্ছে নারী .............

০২ রা আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারী স্বাধীনতা মূলত ও মোটামুটি দুই ধরনের হতে পারে।

১. নিজের চিন্তা চেতনাকে সে যত খারাপই হোক সেটাকে যথেচ্ছভাবে চরিতার্থ করার স্বাধীনতা। সমাজ- সংসার, লজ্জা-ভয়, মানবিক দায়িত্ববোধ কোন কিছুকেই পরোয়া না করে, সেগুলোকে বিন্দুমাত্র মূল্য বা গুরুত্ব না দিয়ে উম্মাদের মত যেখানে সেখানে যথেচ্ছ বিচরণ ও কোন কিছু করার স্বাধীনতা।

২. দ্বিতীয় ধরণের স্বাধীনতা হলো নিজের সম্ভ্রম, শ্লীলতা ও মর্যাদাকে পূর্ণরূপে অক্ষত রেখে নারী হিসেবে তার প্রাপ্য ও নির্ধারিত অধিকারসমূহের স্বীকৃতি।

কিছুদিন আগেও আমাদের দেশের মেয়েরা যথেষ্ট শালীন ও সংযত হয়েই রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতো। কিন্তু বর্তমান সাংস্কৃতিক আগ্রাসন এমন একটা পর্যায়ে পৌছেছে য‍ার প্রভাবে অতি আধুনিকতার নাম করে নিজেদেরে অজান্তেই তারা নিজেদেরকে কাম-ভোগ এর সামগ্রীতে পরিনত করছে।

আর এর পুর্নাঙ্গ সুযোগটা ব্যবহার করছে মিডিয়া, ফ্যাশন-মডেলিং এর নামে পুজিবাদীরা। উন্নতি, গ্ল্যামার আর অর্থবিত্তের প্রলোভন দেখিয়ে এদেশের অনেক অনেক অবলা নারী, বিশেষ করে কিশোরিদেরকে ব্রেইন ওয়াশ করে চলছে ক্রমাগত। সেই কিশোরী বা নারী আদো বুঝে উঠতেই পারছেনা অর্থ, খ্যাতি আর গ্ল্যামার এর আড়ালে তাদেরকে পণ্যে রুপান্তরিত করা হচ্ছে, সেই সব পুজিবাদী সুবিধাভোগী শয়তানদের ভোগ বিলাশ আর অর্থ উপার্জনের জন্য। এখন নারীরা কে কত বেশি শরীর প্রদর্শন করতে পারে, পুরুষদের কাছে নিজেকে আরো কতো বেশি আকর্ষনীয় করতে পারে সে প্রতি্যোগীতায় নিরন্তর নীরলস ব্যস্ত স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। নিত্য নতুন ছোট ছোট ড্রেস আর খোলামেলা ভাবে শরীর প্রদর্শন করা যেনো এখনকার হালের ফ্যাশন।

ইদানিং বিভিন্ন রকমের সুন্দরী প্রতিযোগীতা যা কিনা নগ্নপ্রায় নারীর শরীরকে, যৌনতাকে ভদ্রতার মুখোশ পড়িয়ে উপস্থাপন করার ই নামান্তর। তারপরও পর্দার সামনে আমরা যা ই দেখি সেটা নগ্নতা আর যৌনতার উস্কানী হলেও ভদ্রতার মুখোশে সেই সব নগ্নতা আর যৌনতা আড়ালেই থাকে বলে খানিক রঙ্গিনও লাগে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে কি হয় বা কি ঘটে তার কতটুক জানি আমরা?? নারী লোলুপ ফটোগ্রাফার কিংবা প্রডাকশন হাউসের অসভ্য জানোয়ারদের নিকট হতে কতটুকু সংযত রাখতে পারে তাদের বা সংযত থাকতে পারছেন নারী নিজে। আপন সম্ভ্রম বাচিয়ে কতটুকু যোগ্য সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারছেন তারা?

আজকে বিশ্বব্যাপী নারী নির্যাতন আর নারী নিগ্রহের যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে তার বীজ প্রোথিত কিন্তু পুঁজিবাদেই। অর্থ-বিত্ত, আরাম আয়েশ, খ্যাতি যশ সর্বোপরি ক্রমাগত ভোগ করার যে মানসিকতা সেটা বেড়ে উঠছে নারীমুক্তি, নারী স্বাধীনতার ছদ্মাবরণে। নারীকে পণ্যের মতো ব্যবহারের জন্য আধুনিকতার নামে ধর্মহীনতা ও বেপর্দানশীলতাকে অসুস্থ, বিকৃতি মন মানসিকতায় টগবগে উজ্জল উচ্ছল মোড়ক দিয়ে পুঁজিবাদের তত্বে লালন হচ্ছে। লালন হচ্ছে তাদেরই ভোগ্য পন্য হিসাবে ব্যবহারের জন্য।

উঠতি বয়সী কিছু উচ্ছাভিলাসী কিশোরী বা মেয়ে মডেল, অভিনেত্রী হবার আশায় মগ্ন এবং সোনালী রুপালী জগতের রঙ্গীন আলোর ছটায় তারা বুদ হয়ে থাকে সারাক্ষন। সেই সুযোগে সেই সব আত্মভোলা উচ্চাবিলাসী মেয়েদের নানাভাবে জিম্মি করে পুজিবাদের সেবকদাসেরা নগ্ন আর অর্ধনগ্ন ছবি তুলে নিজে তৃপ্ত হয়, অন্যকেও সুরসুরি দেয় আর সেই সাথে সমাজকে করে উছশৃঙ্খল। সেই সব উচ্ছাভিলাসী মেয়েদেরকে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্নের ফানুস দেখায়, তাদেরই শরীর পাওয়ার স্বার্থে । কেউ ক্উ আবার পারমানেন্ট ভোগ্য পন্য হিসাবে ব্যবহারের জন্য তাদের দায় দায়িত্বও অনেকাংশ নিয়ে নেয়। সেই সব কেউ কেটাদের মধ্যে আমাদের তথাকথিত নামীদামী সুশীল সংস্কৃতিবানদের আধিক্যও নেহাত কম নয়। একটু চিন্তা করলে এর মধ্যে অনেককেই পাবেন, তাতে বিচলিত ও আতন্কিতও হতে পারেন।

বর্তমান বাংলাদেশে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় মিশ্র সংস্কৃতি জেঁকে বসেছে তরুণ প্রজন্মের মাঝে।ইদানিং কালে অতি আধুনিকতার নামে হট ড্যান্স শো, ডিজে পার্টি, ফ্যাশনতে অবাধে চলছে যৌনাচার তার সাথে আছে ইয়াবা-আইস পিল নামের মরনব্যাধী নেশা। কম্পিউটার, মোবাইল ও গাড়ির মেলাগুলোতে বিভিন্ন স্টলে নগ্ন ভাবে মেয়েদেরকে মডেল করা হচ্ছে। তাদের নগ্ন শরীরকে পুজি করা হচ্ছে বিজ্ঞাপন। নারীর ভীড়ে পন্য কোথায় যেন হারিয়ে যায়। পন্যের বিজ্ঞাপণ করতে এসে নারী নিজেই পন্য হয়ে যায়। স্বাধীনতা আর নিজের অধিকার রক্ষা করতে এসে উলটা নিজেরাই নিজেদেরকে প্যাকেটজাত পন্যে রূপান্তরিত করে ফেলে। আফসুস!!!!!!!!!!

ফ্যাশন বিষয়টি আগে আমাদের দেশে অনেকটা সেলিব্রিটিকেন্দ্রিক থাকলেও এখন এর পরিধির পাশাপাশি এর নগ্নতার বিস্তারও লাভ করেছে অনেক। পাশ্চাত্য ও ভারতীয় সংস্কৃতির প্রভাবেই আমাদের দেশের ফ্যাশন জগতে ঢুকে পড়েছে নগ্নতা ও অশ্লীলতা। ভারতীয় নগ্ন ছবির নায়িকা পাওলী দাম, ঋতুপর্ণা ও ক্যাটরিনা কাইফদের মত অনেককেই আনা হচ্ছে অহরহই। কিছুদিন আগে এসিডদগ্ধ নারীদের সহায়তা করার নামে আওয়ামী লীগ এম.পি. আসাদুজ্জামান নূরের দেশটিভি'র সহযোগীতায় হয়ে গেল ফ্যাশন শো! ।

আশ্চর্য! যারা নগ্ন শরীর দেখিয়ে যুবক-যু্বতীদের নৈতিক চরিত্র ধ্বংস করে দিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে উৎসাহ দেয়, যাদের উলঙ্গপনা দেখেই যুবসমাজ নানা রকম সহিংসতা, নির্যাতন ও এসিড সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়, যাদের কারণে নারী এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়, তারাই নাকি সেই এসিডদগ্ধ নারীকে সাহায্য করবে তাদের সেই নগ্ন শরীর দেখিয়ে! অর্থাৎ নগ্ন শরীর দেখিয়ে প্রথমে নারীকে এসিডে দগ্ধ করার ব্যবস্থা করা হবে, আবার সেই নগ্ন শরীর দেখিয়ে এসিডদগ্ধ নারীকে সাহায্য করা হবে...! কি বিকৃত তাদের চিন্তাধারা!

বেশ কয়েক বছর যাবৎ ঈদকে সামনে রেখে ৯০% মসলিমের দেশে পবিত্র রমযান মাস আসলেই নামী দামী হোটেলগুলোতে শুরু হয়ে যায় ফ্যাশন শো'র নামে নগ্নতা ও অশ্লীলতা। এ বছরও হয়ত এর কোন ব্যতিক্রম হবে না বা হচ্ছে না। তারপর ফ্যাশনশোর আদলেই তৈরী করা হবে বিজ্ঞাপন চিত্র। এখানেও উপজীব্য মেয়েদের শরীর। এই বিজ্ঞাপন দেখে অনেক মা বোনেরা এই পোশাক পরাটাকেই স্মার্টনেস এবং মেয়েদের আকর্ষণের অস্ত্র হিসেবে মনে করবে। তারপর ঈদের দিন চলবে ঢাকার রাস্তায় র্যাম্প মডেলিং। তাদের মডেলিং দেখে মুগ্ধ হয়ে দুই একজন যদি হাত তালি কিংবা শিষ দিয়েই ফেলে তবে অবাধ্য অসভ্য ছেলের আর দোষ কোথায়?? আর সবকিছুর পরে ক্ষতি যা হওয়ার নারীরই হবে, এদেশের যুবক-যুবতীদের হবে, এদেশের পরিচ্ছন্ন সংর্স্কৃতির হবে, আগামী প্রজন্মের হবে এদশের আপামর জনগনের নৈতিক চরিত্ত্রের র এর বিলোপ ঘটবে। কিন্তু নারীর শরীরকে পুজি করে যারা ব্যবসা করার তারা ঠিকই অবাধে ব্যবসা বানিজ্য করে যাবে আর নারী তার সম্ভ্রম হারাতেই থাকবে......................আফসুস!!!!!!!!!!



বি. দ্র. : যারা অতি নারীবাদী তারা এখানে কোন মন্তব্য না করলে কৃতার্থ থাকব। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজতে রাখুন, আমীন!!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৩০
৪৩টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×