চেম্বারে যেতেই শুনি বুড়ো চাচা ডায়ালগ দিচ্ছেন "অ্যাঁই আইছি তলাক হানির এত অভাব অনো" (আমি আসার পর থেকে পানির এ রকম সল্পতা আর হয়নি)। বাসায় আসতেই দেখি আমীর ভাই এর শুকনো, মলিন মুখ " টানা মোটর দিয়ে পানি খুব কম আসে। পাম্প থেকেই নাকি পানি ঠিকমত আসছেনা। পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। মনে হয় পাইপ আরো নিচে লাগাতে হবে।"
হুমায়ুন আহমেদের মজার উপন্যাস বহুব্রীহী। নাটকের অন্যতম কেন্দ্রিয় চরিত্র আনিস, যার স্ত্রী নেই। বেচারা দুই ছেলে মেয়ে আছে মহা বিপদে। রান্না বান্না করতে হয়, ঘর সামলাতে হয়। তারউপর বাচ্চা দুটো মহা দুষ্ট। একেকবার অদ্ভুত অদ্ভুত কান্ডকির্তন করে যা যে কোন মানুষের মাথা খারাপ করে দেয়ার মত যথেষ্ট।
একদিন রাতে বড় ছেলে টগর বাবাকে জিজ্ঞেস করলো "বাবা! রাতে আমরা কি খাব?"
আনিস জবাব দিল " রাতে আমরা খাব ডিম রান্না "
"বাবা! প্রতিদিন আমরা ডিম খাচ্ছি কেন?"
"কারন ডিম রান্না সবচাইতে সহজ কাজ। আর এছাড়া আমি আর অন্য কিছু রাধতে জানিনা"
ছোট মেয়ে নিশা বললো "এভাবে আমরা একদিন পৃথিবীর সব ডিম খেয়ে শেষ করে ফেলবো, তাই না বাবা"
ঢাকা শহরে হু হু করে বাড়ছে জমির দাম। জমি বলতে গেলে প্রায় শেষ, এখন চলছে ফ্ল্যাট বেচা কেনা। তাও ফুরিয়ে যেতে চললো প্রায়। কারন ব্যাপক চাহিদা। যে মানুষ একবার ঢাকায় ঢুকে সে আর ঢাকা ছাড়ার নাম করেনা। গাঁটটি বোস্কা সমেত এখানেই আসন গেড়ে বসে। যারা ঢাকার বাইরে আছেন, তাদেরো এ নিয়ে হাপিত্যেসের কমতি নেই। এরে তারে ধরে মামার জোরে যে কোনভাবে পোষ্টিংটা ঢাকায় করার জন্য সেকি তোড়জোড়! আর তাই আজ ঢাকা পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতিপুর্ন শহর। যে হারে মানুষ বাড়ছে আর যেভাবে ভুগর্ভস্থ পানি তুলে চলেছি, কে জানে হয়ত "আমরা একদিন পৃথিবীর সব পানি শেষ করে ফেলবো"। অন্তত ঢাকারটাতো বটে।
তখন কি হবে?
মাটির নিচে বিশাল অংশ ফাপা থাকায় বিল্ডিংগুলো ছোটখাট ভুমিকম্পেই ধ্বসে পড়তে পারে। এখন যেভাবে মানুষ ছুটে আসছে ঢাকার দিকে, তখন মানুষ তেমনি করে ছুটে পালাতে চাইবে ঢাকা ছেড়ে। কে জানে হয়তো এই শহর হয়ে যাবে ধংসনগরী, প্রাচীন কোন সভ্যতার অংশবিশেষ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



