somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্ঘুম রাতে একলা আমি । কিছু স্মৃতি মোরে কাঁদায় নিরবে ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ রাত এ ঘুম আসছে নাহ কেন !! কোন কাজ ও নেই যে করব । একটা girlfriend থাকলে নাহয় তারে একটা ফোন দিতাম । দিয়ে বলতাম যে আমার আজ তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করতেছে একটু বেশি , তুমি কি আমার এই নিঃসঙ্গ সময়ের একটু সাথি হবে ?? তোমার কি একটু সময় হবে আমার কাউকে না বলা কথা গুলো শোনার ?? হয়ত তার কাছে আই আবদার করলে সে শুনতো আশা করি । কিন্তু যেহেতু তেমন কেউ নাই ই সেখানে আবদার করার তো কোন প্রশ্ন ই আসে নাহ ।

আসলে সব দোষ এই বুয়েট এর । এতদিন ছুটি দেওয়ার কি কোন দরকার আছে !! আমাদের কষ্টটা ও বোঝে নাহ , জানে নাহ যে কতটা মন কাদে ঐ আঊলা ৪১৫ নাম্বার রুম এ যাওয়ার জন্য । যেখানে আমি স্বাধীন , যেখানে আমাকে কেউ বলবে নাহ যে আমি কেন সময় মত খাওয়া-দাওয়া করি নাই , কেন আমি চুল কাটাইনি , কেন আমি আমার জিনিস গুলো ঠিক মত গুছিয়ে রাখি নাই , কেন আমি জামাটা ঐভাবে ফেলে রাখলাম বিছানার এক কোনে , কেন আমি আমার laptop এ বসে game খেলতে খেলতে আর ফেসবুক এ বসে ভুলে গেছি এই দুনিয়ার সব কাজ যা আমার ই সাহায্যের অপেক্ষায় অপূর্ণ রয়ে যাচ্ছে , কেন আমি ঘুমাতে ঘুমাতে ভুলে গেছি যে আজ সকাল ৮ টায় ক্লাস এ যাওয়া টা হয়ত জরুরি ছিল একটু , রাত এর বেলা বন্ধু আর বড় ভাইয়া দের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ভুলে গেছি হয়ত যে কাল সকাল এ ক্লাস আছে । ছুটি দিলে খুশি হই তো ঠিক ই , অনেকদিন পর বাবা-মা আর ছোট বোন কে দেখার ইচ্ছায় ছুটে চলে আসি । কিন্তু এতকিছুর মাঝেও কেন জানি এক অপূর্ণতা , কোন এক হাহাকার । নিজেকে নিজের খুঁজে না পাওয়া ।

রাত ৩/৪ টায় পলাশীর মোড় এ গিয়া খাওয়া দাওয়া । কখনো কখনো penang অথবা নাজিরাবাজার ঐ রাত এর নিস্তব্ধ পরিবেশ এ হেটে চলে যাওয়া। বন্ধুদের সাথে অথবা বড় ভাই এর সাথে গল্প দিতে দিতে অনেক দুরের পথ টাও অনেক কাছের মনে হওয়া । সারা রাত বন্ধুদের সাথে মিলে বুয়েট এর গেট এর পাশে বসে card খেলতে খেলতে ভোর হয়ে যাওয়া । কখনও কখনও রাত ৩ টার সময় কারো জন্মদিন পালন করতে বেরিয়ে পড়া । এসবের মাঝে নিজেকেই ভুলে থাকা । এগুলা মনে হয় মিস করার মতই কিছু ।

এত কিছুর পর ও মাঝে মাঝে ছুটি গুলো অনেক আনন্দময় হয়ে ওঠে যখন এখানে এসে কিছু পুরান বন্ধুদের সাথে দেখা হয়ে যায় , যাদের ফেলে চলে গেছি নিজের সপ্ন পুরনের তাগিদে , কিছু বন্ধু তো সাথেই গেছে কারন সপ্ন টা একই ছিল । কারও একই ছিল নাহ আর কারও একই থাকা সত্তেও সুযোগ হইনি। সবাই মিলে যখন সন্ধার আড্ডা টা জমাই তখন সময় গুলো কেটে যায় নিজের অজান্তেই ।

তাই বলে এমন নয় যে আমি বাসা তে থাকলে ভাল থাকি নাহ , যদি এমন বলি তাহলে সবাই আবার বলে বসবে " ২ দিন এর বাঙালি , ভাত এ রে বলে অন্ন " হা হা হা । বাসায় সময় কাটানোর মজা আলাদা। মা এর হাতের খাবার এর কোন তুলনা হয়না যা বলাই বাহুল্য হয়ত । বাবার উপদেশ আর ছোট বোন এর নানান আবদার বড় ভাই এর কাছে । এগুলোর ও মুল্য অনেক যা হয়ত প্রকাশ করাই যায় নাহ । কিন্তু তারপর ও নিজের স্বাধিন জীবন কে উপভোগ করার মজাই হয়ত আলাদা । হল এর জীবন অনেক কষ্টের হয়ত । তবে জীবন কে চিনতে চাইলে আর নিজের মধ্যে responsibility জিনিস টা আনতে হলে হয়ত মানুষ কে হল এ থাকা উচিত ।

আর হ্যাঁ , প্রথম এ যে কথা দিয়ে সুরু করছিলাম লেখা টা । রাত অনেক হল লিখছি এখন ও । লেখা শেষ ও হয়ে গেলো কিন্তু ঘুম কিন্তু এলো নাহ আর এখনো মনের মধ্যে অপূর্ণতা টা রয়ে গেল girlfriend এর জন্য । সামনে ১৪ ফেব্রুয়ারী , চিন্তা করলে দুঃখ লাগে বটে যে জীবনের ২১ তম বছরে এসেও ১৪ ফেব্রুয়ারি একাই পালন করে যাচ্ছি । এখানে আমার দোষ আছে কিনা জানিনা , তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম সাথে কাউকে নিয়ে ই পালন করার এইবারের টা । হয়ত সে আমাকে বুঝলো নাহ অথবা আমার ই তাকে বোঝার ভুল ছিল । তবে শেষ করে দিলাম জীবনের নাটকের একটা অঙ্ক । আমার মতে , " গাছের ফল ঝুলে থাকলে দেখতে হয়ত ভাল লাগে কিন্তু সেটা না পড়লে , মানুষ সেটা না খাওয়া পর্যন্ত কেমন করে বুঝবে যে খালি কি পরিবেশের শোভা ই বৃদ্ধি করে জিনিস টা নাকি আসলেও সেটা অন্য কোন উপকারেও দিবে । " তাই বলে অবশ্যই কেউ ধুতরার ফুল এর মত বিষধর কিছু খেয়ে দেখতে যাবেন নাহ , মৃত্যু ও হতে পারে ।

এত কিছু ভেবে তো আর লাভ নাই । জীবন ত চলবেই । ১৪ ফেব্রুয়ারী জীবন এ আবার আসবে যদি বেঁচে থাকি । তাই বলে নিজেকে বলতে চাই নাহ যে ''better luck next time".....কারণ luck এর কোন ভরসা নেই ।

দেখতে দেখতে ছুটির দিন গুলি শেষ হয়ে ই এল । হঠাত করেই মনের মধ্যে কেমন যেন করে উটল । চলে যেতে হবে আবার । আই যাওয়া যেন সবসময় ই মনে হয় প্রথম বার বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছি এমন । বাবা-মা এর স্নেহের বট গাছের ছায়া ছেড়ে অনেক দূর চলে যাব । হয়ত আমার দেখার অজান্তেই তারা কাদবে । দেখাবে নাহ কারন আমি কষ্ট পাব তাই । কিন্তু আমার মন ও কাঁদবে । আমার চোখের পানি একটু কম ই বের হয় । কিন্তু কখনও কখনও হয়ত সিনেমা দেখতে গিয়া ও চোখের এক কোণে পানি চলে আসে । আসলে নিজেকেই নিজে চিনলাম নাহ আজ ও ঠিক মত । যাই হোক , দুঃখ হবে হয়ত কয়েকদিন , মায়ের হাতের রান্না মিস করব । তারপর হয়ত আস্তে আস্তে বুয়েট এর যান্ত্রিক জীবনের সাথে আবার ও মিলিয়ে যাবে আমার সব চাওয়া পাওয়া । অফুরন্ত বাশ এর চাপায় নিজেকে আবার ও হারিয়ে ফেলব । হয়ত কত কিছুই যা এই ছুটিতে কষ্টের কারন হয়েছে আমার সেগুলো ও নিতান্তই তুচ্ছ মনে হবে । আমিও এমনটি ই চাই । জানি যে জিবনে কিছু জিনিস কখন ও ভলা যায় নাহ , তবুও কিছু জিনিস ভুলে যাওয়া ই ভাল।

আমি emotional হয়ে নিজের লেখার উদ্দেস্য থেকে দূরে চলে গেলাম যে !!! ফিরে আসি আবার সেই বুয়েট এর ছুটি আর বুয়েট জীবন নিয়ে । নাহ , আজ মনে হয় অনেক হল । পরে একদিন অন্ইয় বেপার গুলো ও আলাপ হবে ।

যারা কষ্ট করে পড়লেন তাদের ধন্যবাদ যে আপনারা মুল্যহীন বালক এর কথা শুনলেন । আবার কখনো কোন এক নির্ঘুম রাত এর লেখা নিয়ে দেখা হবে আশা করি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৩৪
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×