হাসি আর বিনোদন তৃষ্ণা থেকেই অন্য গণমাধ্যমের প্রতি আমরা হুমড়ি খাইয়া পড়ি। কারণ, আমাদের এইখানে খরা চলিতেছে। প্রথম আলোর রস আলো কিছু রস দিতেছে বটে, কিন্তু মাঝে মাঝেই তাহা রসের বদলে কষের সমাগম ঘটাইয়া ফেলে। বহু প্রাচীন রম্যকারকে হারাইয়া একদা হানিফ সংকেতকে সবেধন নীলমনি ভাবা গিয়াছিল। কিন্তু তিনিও সুশীল হইবার খায়েশে সিরিয়াসের প্রতি আসক্ত হইয়া জ্ঞানদানকেই ব্রত হিসেবে নিয়াছেন। মানুষ তাহার বিতরিত জ্ঞানে হয়তো বিজ্ঞ হইতেছে, কিন্তু হাসিতেছে না। রসহীনতা সামাজিক হানাহানি বাড়াইতেছে। হতাশা বাসা বাধিয়া মানুষকে মাদকে বাধ্য করিতেছে। এহেন অবস্থায় দেশের বড় একটি অংশ ঝুঁকিয়াছিল ইন্ডিয়ান জ্বী বাংলার মিরাক্কেল-এ। কিন্তু আস্তে আস্তে আফসার আলী মীর প্রভুত প্রশংসা পাইয়া ফুলিয়া ফাঁপিয়া এখন মানুষকে হাসাইবার কাজে ব্যর্থ হইয়া উঠিতেছে, এখন সে যাহা করিতেছে তা ‘লোক হাসানো’ ছাড়া কিছু নহে। এই লোক হাসানো মানে অপদস্ত করা, বিব্রত করা, মানুষকে বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলা। পরান, রনি আর শ্রীলেখা নামক তোতাপাখির সামনে এই বাংলা ওই বাংলার কতিপয় কৌতুকপ্রিয় কিশোর, তরুণ একেবারে সাদা মাথায় কিছু কৌতুক করিতে যাইতেছে। তাহারা মীরের হাতে পড়িয়া যাহা উপস্থাপন করিতেছেন তাহা মানুষের কাপড় খুলিয়া লোক হাসাইবার নামান্তর। অশ্লীলতা হইতেছে। চরম অশ্লীলতা। যাহা পরিবার পরিজন লইয়া দেখিবার জো নাই।
জ্বী বাংলা সর্বশেষ আশাভঙ্গ করিল। ইহার বহুপূর্বেই সনি, স্টারপ্লাস গং এইদেশে মানুষের সংসার ভাঙিয়া চুরমার করিয়াছে, অনেক কিশোর তরুণকে অকালপক্ক করিয়া নেশা ধরাইয়াছে, পরোকিয়ার প্রকোপ বাড়াইয়া দিয়াছে। ভারতীয় অন্যান্য বাংলা চ্যানেলগুলিও ওইপথে হাঁটিয়া এইদেশে খুব সুক্ষভাবে সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করিতেছে। ঘরেবাইরে মানুষের ঔদ্ধত্ব চরম সীমায় নিয়া ঠেকাইতেছে। সংস্কৃতি বিধ্বংসী কাজের চূড়ান্ত সক্ষমতা দেখাইতেছে জ্বী বাংলা, মীর ও তাহার মীরাক্কেল। যেকোন আক্কেলবান মানুষই ইহা বুঝিতেছে। আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের টেলিভিশন, আমাদের গণমাধ্যম, আমাদের সাহিত্য রক্ষা করিতে পশ্চিমববেঙ্গর এহেন স্থূল, হিংলা (হিন্দি ও বাংলার সংমিশ্রণ) সংস্কৃতিসম্পন্ন টেলিভিশন থেকে শুরু করিয়া সকল ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল বর্জন করিবার জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



