প্রখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মমের অনেক গল্পের মধ্যে একটু বেশিই পরিচিত ‘দ্যা লানচোন’। সেই গল্পের লেখক এবং লেডি গেস্ট চরিত্রটি অনেকের হৃদয়ে গেঁথে আছে। ফয়েটস হোটেলে নানা লোভনীয় এবং আকর্ষণীয় খাবারের মধ্যে পীচ ফল ছিল অন্যতম একটি আইটেম। সেই পীচ ফল-এর সঙ্গে আমাদের অনেকের পরিচয় নেই। সংবাদপত্রের কল্যাণে বিগত ক’বছরে ছবি এবং তথ্য জানার কিছুটা সুযোগ অনেকের হলেও খুব কাছ থেকে ফল গাছটি দেখা কিংবা একটু পরখ করার সুযোগ খুব কম জনেরই হয়েছে, তা নির্দ্বিধায় বলতে পারি।
পীচ সাধারণত শীত প্রধান অঞ্চলের ফল হলেও এর আদিনিবাস আজো অজানা। ৮ থেকে ১২ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট মাঝারি আকারের বৃক্ষ জাতীয় গাছটির পাতা ডালিম বা শরিফার পাতার মতো। পাতার গোড়ায় ছোট ছোট অনেক পাতা দেখা যায়। ফুলের বর্ণ লাল বা গোলাপী হতে পারে। ফলের আকার ডিম্বাকৃতি, অনেকটা হরিতকির ফলের সঙ্গে তুলনীয়। ফলের শীর্ষভাগ আমের মতো বাঁকানো এবং সূঁচালো। সাধারণত ফলের বর্ণ সবুজ, তবে পাকলে হালকা হলুদের ওপর লালচে আভার সৃষ্টি হয়। তিন থেকে আট সেন্টিমিটার ফলের খোসা অল্প চাপে সহজেই খুলে আসে। কাঁচা ফল ভীষণ শক্ত, বহিরাবরণ বা খোসা বেশ খসখসে। ফলের শাঁস রসালো হালকা হলুদ এবং ভেতরের দিকটাও লাল। শাঁসের স্বাদ টক। ফলের ভেতরে খয়েরি বর্ণের শক্ত বিচি দেখা যায়। পীচ ফলের বৈজ্ঞানিক/ উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম চৎঁহঁং চবৎংরপধ। পরিবার জড়ংধপবধব । পীচ ফল পাকে মে-জুন মাসে। পীচ ফল পুষ্টিকর এবং নানা ওষুধি গুণসম্পন্ন। প্রতি কেজি ফল থেকে পাওয়া যায় প্রায় ৪৭০ ক্যালরি শক্তি। ১৮ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত ভালো ফলন দিয়ে থাকে। প্রতি গাছে গড় উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ কেজি।
পীচ ফলের স্থানীয় কোনো নাম নেই। দিনাজপুর, নাটোর, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সাভার এলাকায় পীচ গাছ চোখে পড়ে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের জার্মপ্লাজম সেন্টার বেশ কয়েক বছর ধরেই সাফল্যের সঙ্গে চারা তৈরি করে আসছে। ভারতের সিমলাতে অসংখ্য পীচ গাছ চোখে পড়ে। চোখ কলম করে পীচ ফলের নতুন বংশধর সহজে সৃষ্টি করা যায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



