somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জ্বলছে আগুন, পুড়ছে দেশ

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জ্বলছে আগুন, পুড়ছে দেশ
মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন

চোখ দুটি খোলা কিন্তু চেতনা আছে কিনা বুঝতে পারাটা প্রায় অসম্ভব। অশ্রু বিন্দুগুলো শুকিয়ে গেছে কিন্তু প্রবাহিত হওয়ার মলিন দাগটা রয়ে গেছে। নির্বাক তাকিয়ে এক দৃষ্টিতে কতক্ষন থাকা যায়। ভাবছি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে কিন্তু ক্ষনিকে নেওয়া দীর্ঘশ্বাসের সাথে আত্মচিৎকার জানিয়ে দিচ্ছে প্রাণ স্পন্দনের সঞ্চার। চুলগুলো এলো-মেলো দেহটা ছড়িয়ে আছে মেঝেতে মাথাটা একজন কোলে নিয়ে বসে আছে নিরবে। একদম নিরব, পৃথিবীর সব নিরবতা যেন জমা হয়েছে এই উঠানে। নিরবতার অবস্থাটি নিশ্চিত করে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ব্যাথা যেটা ভাষায় প্রকাশিত হয় না; প্রকাশিত হয় শুধুই নিরবতায়। শান্তনা দেয়ার কোন ভাষা আমাদের নেই! আছে শুধু নির্বাক চেয়ে মাতম করবার দৃশ্য দেখার। শুধু কি আমি দেখতে এসেছি এই আহাজারি। শহর থেকে কর্তা বাবুরা এসেছে এক গাঁদা পুলিশসহ, এসেছে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু কারও মুখে কোন শব্দ নেই! কারও কোন প্রতি উত্তর নেই! মাত্র চারটি দিন অথচ চারটি যুগে প্রাপ্তি এই আহাজারি!!! নিরব নিরবতা ভেঙ্গে শিশুর চিৎকার করে কেঁদে উঠা দৃশ্যখানি জাতির বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অন্ধকার নামা সন্ধ্যাবেলা যখন হাসনা হেনার সুরভে সুরভিত হয়ে উঠবে তখন এ কেমন ঝাঝাল গন্ধ নাকে আসে? এ গন্ধ সহ্য করছে বাংলাদেশ? ৪৪ বছরের পুরনো গন্ধ যেন নতুন করে আহাজারিতে সবুজ শ্যামল ছোট গ্রাম মামুদপুরে এনে দিয়েছে নিশ্চুপ নিরবতা। আব্দুর রশীদ। জীবন্ত উদ্যমী এক যুবক। বয়সটা জোর একটু ৩৫ কি ৩৬ হবে। পরিশ্রমি একজন অক্লান্ত যুবক আব্দুর রশীদ। জীবনটা তার একটু কষ্টের হলেও বেশ কঠিন বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে জীবনটা সাজিয়ে ছিলো বেশ রাঙা রঙে। অশিক্ষিত এই তরুণ স্বাধীনতার বছর কয়েক পরে জন্ম হলেও স্বাধীনতার স্বাদ কখনই পাইনি। ছোট থেকে দিন মজুরের কাজের সূচনা হয় রশীদের। আঠারোর সিঁড়ি পেরুতে না পেরুতেই রশীদ আবদ্ধ হয় সংসার জীবনে। শ্রম জীবনে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। যখন যেখানে কাজের সুযোগ পেত সেখানে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ঝরিয়েছে ঘাম। ভালই কাটছিলো রশীদের দিন। বছর দু এক যেতে না যেতেই রশীদের ঘর আলো করে আসে নতুন অতিথি। রশীদ বেশ আনন্দ বোধ করে প্রথম সন্তানের জন্ম লাভে। যদিও বা মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছে রশীদ। রশীদের দুখী জীবনে একটি পুত্র সন্তানের আকাক্সক্ষায় বছর দেড়েক না যেতেই আর একটি মেয়ের পিতা হয়ে বসেন রশীদ। মনটা এবার একটু খারাপ হলেও ভাগ্যের লিখনকে মেনে নিতে হয় রশীদকে। সাদা সিদে স্বভাবের মানুষ রশীদ। সাদামাটা জীবন- যাপনে অভ্যস্ত রশীদ। কালক্রমে বছর পাঁচেক বয়স হতে না হতেই বড় মেয়েকে ভর্তি করান স্কুলে। পরের বছরে অনেক আশা নিয়ে ছোট মেয়েক্ওে ভর্তি করান স্কুলে। রশীদের কষ্টের জীবনে এ যেন তার বিশাল সফলতা। নিজে পড়াশোনা করতে না পারলেও মেয়েরা স্কুলে যায়। এ যেন তার পরম সৌভাগ্য কিন্তু ভাগ্য কখনও রশীদকে আনন্দিত রাখতে পারে নি। ছেলের আশায় বিয়ের নবম বছওে আবারও জন্ম দেন কন্যা সন্তান। ভাগ্যের পরম পরিহাস রশীদকে মেনে নিতে হয়। কি করার আছে রশীদের? তিন তিনটি মেয়ের বাবা রশীদ। তাই রশীদের শ্রম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সংসারের খরচ, মেয়েদের পড়াশোনা সব মিলিয়ে রশীদের শ্রম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দারিদ্রতার বেত্রাঘাতে বড় মেয়ে ৫ম শ্রেণিতে উঠতে না উঠতেই সংসারের খরচ কমাতে বিয়ে দিতে বাধ্য হোন। দ্বিতীয় মেয়েটি তখন তৃতীয় শ্রেণীর পাঠচুকিয়ে চতুর্থশ্রণেীতে উঠেছে। দিনদিন সাংসারিক চাপে রশীদ চতুর্থশ্রেণীর পড়া শেষ না করা মেয়েকেও বিয়ে দিয়ে দেন। তালগোলে পাকানো সংসার জীবনে তখনো রশীদের পুত্র সন্তানের নেশা কাটেনী। স্ত্রীর বাঁধা সত্বেও তার ইচ্ছের জোরে বাধ্য হয়ে আরেকটি সন্তান নিতে বাধ্যহয় সহধর্মীনি। বিয়ের ষোলটি বছর কেটেগেছে রশিদের এ যেন শেষ আশা তার একটি পুত্র সন্তান হবে। ঝরঝর মূখর বাদল দিনে রশিদের ঘরে আরেকটি অতিথি এসেছে। ফুটফুটে চাঁদের আলোর মত রশিদের ঘরে একটি নবজাতক। নবজাতকটির মূখপর্যন্ত দেখনি রশীদ কারণ তার মেয়ে হয়েছে। সারাটিদিন রশীদ ভেবেছে জীবন নিয়ে। জীবনের করাঘাতে নিজেকে থুঁজে ফিরেছেন অনর্থক একটা শ্রমজীবনে। সন্ধ্যায় মাতাল হয়ে ঘরে ফিরে রশীদ। জীবনের কোন প্রয়োজনীয়তাই অনুভব করেনা রশীদ। কিন্তু কিছুদিন যেতে নাযেতেই মেয়ে দুটিকে মানুষের মত মানুষ করতে শপথ করে বসে রশীদ। শুরু হয় রশীদের কঠোর পরিশ্রম। মেয়ে দুটিকে যেভাবেই পারে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করাবে রশীদ। তাই বেড়েগিয়েছে রশীদের কর্ম। দিন-রাত কাজ করে রশীদ। যখন যে কাজ পায় করতে দ্বিধা করেনা রশীদ। কখনো আরাম আয়েশ করেনা রশীদ কোন কাজ না হলে অন্যকাজের জন্য ছুটে চলে রশীদ। দিনের পালাবর্তনে তৃতীয় মেয়েটির বয়স পাঁচ ছুই ছুই করছে। স্কুলেও ভর্তি করিয়েছে এই জানুয়ারিতে। ছোট মেয়েটিও বসতে শিখেছে। বাবা বাবা বলে ডাকত্ওে শিখেছে। এদের মুখের দিকে চেয়েই ওভারটাইম কাজ করে রশীদ। সাদা-সিদে জীবনে শ্রমের বিনীময়ে অন্ন আর একমুঠো স্বপ্নদেখে রশীদ। রশীদ জানে অন্ন জগাতে আর তার এই স্বপ্নপূরণে তাকে লড়তে হবে, ঘাম ঝরিয়ে পয়সা কামাতে হবে তাইতো এই ছুটো-ছুটি। দ্বিতীয় মেয়েটির বিয়ের যৌতুকের অর্ধেক টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারেনী রশীদ। মাঝে মাঝে কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠে বিষন্ন হয়ে উঠে তব্ওু ছোট মেয়েটির দিকে চেয়ে ছুটো-ছুটি করতে শক্তি পায় রশীদ কিন্তু ক’দিন হলো যে রাইস মিলে রশীদ কাজ করে সে মিলটা বন্ধ। তাই অন্য কাজের সন্ধ্যান করতে হচ্ছে রশীদকে। সপ্তাহ দেড়েক বাড়িতেই বসে কাটিয়েছে রশীদ। অবশেষে একটা ট্রাকের হেল্পারের কাজ পেয়েছে। ট্রাক চলছে-চলেনা এমন করেই চলছে দিন। দু’দিন কাজ হয়ে চারদিনেই বসে কাটাতে হচ্ছে। এভাবে চলতে পারেনা তাই ঘর থেকে বাধ্য হয়ের্ ওনা হয়েছে পঞ্চগড়ে মাল তুলে ঢাকায় নিয়ে যাবে। টানা অবরোধ আর হরতাল লেগেই থাকতেছে কিন্তু পেট তো খায় তাই এরকম বাধ্য বাধকতা হয়ে পঞ্চগড়ে মাল তুলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রশীদের ট্রাক। রশীদ জানে আজ হরতাল চলছে, চলছে টানা আবর। এই বিষয়ে কথা বলতে বলতে আসতেছে রশীদ ও তার ওস্তাদ আমজাদ মিয়া। দেশের রাজনীতির কথায় যেন তাদের বিষাক্ততা, দুর্বিসহ একটা অবস্থার কথা বলে রশীদ ‘মোর বাড়িত থাবার নাই আর হেরা হরতাল ডাকি হামাক মারিবা চাহেছে’। আমাজদ বলে ‘তুই ঠিকে কইছি রশীদ, হামার অবস্থা দেখিছি কাইল থাকি মোর ছ্ওয়ালগুলা না খাই আছে, বাইধ্য হই মুই আইজ গাড়ি বাহির করনু’। রশীদ আর আমজাদের কথায় ফুঠে উঠে করুণার ছাপ। রশীদ বলে উঠে ’ মুই শুননু গাড়ি ঘোড়া নাকি পুড়াই মানুষ মারেছে হেরা’ আমজাদ্ও সায় দিয়ে বলে’ মুই্ও তো শুননু কাইল নাকি অংপুরত মানুষক পুড়ি মারিছে। পুলিশ্ও আছলো কিন্তু হেমরা কিছুই করিবা পারে নাই।” রশীদ বলে উঠে ‘দেশটাত যে কি শুরু করলি খালেদা-হাসিনা, দুই শতিন চুল ছিড়িবে আর হামরা নাখাই মরিম্ও’। আমজাদ্ সাথে সাথে বলে ‘হামরা কি করিম, কি করিবার আছে হামার, না খাই মরিম নাকি? এরা মানুষ মারি মারি ওরা ক্ষমতাত যাবি আর হামার হবি মরণ’ রশীদ কথায় তালমিলিয়ে বলে ‘ অভিশাপ লাগিছে নাইলে ব্যাটা মরে, ত্ওা মানুষ মারা শেষ করেনা ঐ বেটি’ আমজাদ উত্তরে বলে ’ খালি কি ওয় ভোট না করি জোর করি ক্ষমতা নিছে, এমাক আর হারা চাইনা, হামাক মারি এরা কি শান্তি পায়’। রশীদ বলে ‘কি যে হবে দেশেত’। গল্প করতে করতে ট্রাক পঞ্চগড় থেকে দিনাজপুরের দশমাইল হয়ে রংপুর মহাসড়ক ধরে চিরিবন্দরে আসতে না আসতেই কিছু বোঝার আগেই ট্রাকে জ্বল জ্বল করে জ্বলে উঠল আগুন। আমজাদ টেনে হিচড়ে বেরিয়ে এলো, শরীরের জায়গায় জায়গায় দগ্ধআগুন নিয়ে গড়াগড়ি করছে রা¯তায়। ট্রাকটি জ্বলে উঠল দাউ দাউ করে। আধাঘন্টা ধরে জ্বলছে। রশীদ নতুন হেলপার তাই দরজা খুলে বেরুবার আগেই আগুনে ভাজা হয়েগেছে রশীদ। ফায়ার সার্ভিস এসেছে। উদ্ধার করেই রশীদ আর আমজাদকে ভর্তি করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে। রশীদের বাড়িতে খবর এলো। স্ত্রী সহ আত্মীয় স্বজনেরা ছুটেগেলো। চিকিৎসা চলছে রশীদ আর আমজাদের। মহুর্তে টেলিভিশনের প্রধান খবরে পরিণত হয়ে উঠল আমজাদ আর রশীদের দগ্ধ হ্ওয়ার খবর। কয়েকদিনের চলমান পড়া গন্ধে হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটগুলোর বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সেই তালিকায় নতুন নাম যুক্ত করেছে আমজাদ আর রশীদ। সাংবাদিকদের জটলা কারো হাতে ক্যামরা কারো হাতে কলম কাগজ আর কেউ ঘুরোঘুরি করছে। টিভিতে এই মর্মান্তকিতা সরাসরি দেখাচ্ছে দু’একটি টিভি চ্যানেল। সাংবাদিকদের অনুরোধে ডাক্তার ব্রিফিং করছেন। রশীদ আশঙ্কাজনক। শরীরের ৮০ শতাংস পুড়েগেছে রশীদের শরীর। যে কোন সময় যা কিছু ঘটতে পারে। আত্মিয় স্বজনদের চোখে মুখে করুণতার ছাপ। রশীদ তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে বার্ণ ইউনিটের বেটে। অজ্ঞান হয়েই কেটেগেছে রশীদের প্রথম দিন। দ্বিতীয় দিনে একটু আধটুকু নড়ছে রশীদের পুরোদেহ বেন্ডিস করা শরীরখানি। মেডিকেলে ভর্তির পর থেইে অক্সিজেন মাস্কপরা রশীদের। একটু আধটুকু নড়ানড়ির মধ্যদিয়েই দ্বিতীয় দিনটি অতিবাহিত হয়েগেছে। দূরদূরাšত থেকে আত্মিয় স্বজন বিভাগিয় শহর রংপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভীড় জমিয়ে আছে। মাঝে মধ্যে সংবাদ কর্মীরা পড়াদেহের উপর ক্যামরার ফ্লাস ফেলে যেন দগ্ধ জ্বালাটা আরেকটু দগ্ধ করার চেষ্টা করছে সাদা আলোতে। সংকায় থাকা স্বজনেরা একটু সস্তি পেলেন, ডাক্তার জানিয়েছে একটু উন্নতি হয়েছে। তাই স্বজনদের চোখে-মুখে একটু আলোর ছাটা। বিএনপির ডাকা গণতন্ত্র রক্ষার অসহযোগ অন্দোলনের ১৮ তম দিনে ভূসিরবন্দর এলাকায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় অচেতন হয়ে থাকা রশীদকে দেখতে কর্মকর্তা বাবুরা এসেছেন। অথচ না খেয়ে থাকার সময় উনারা কোথায় ছিলেন তাই ভাবছে অপরসিটে দগ্ধ আমজাদ। আমজাদের হাতটা পুড়েগেছে। মুখের কিছু অংশ পুড়ল্ওে তিনদিনে অনেকটা সস্তিতে আছে। কিন্তু রশীদ যেন কাতরাচ্ছে অসহ্য যন্ত্রণায়। যে দেশ নিয়ে ভাবতে ভাবতে রশীদ আসছিলো সেই আলোচনারই বিষয় বস্তু এখন রশীদ। হাসপাতালে চতুর্থদিন আজ। নতুন একটা সকাল হয়েছে। সূর্যের আলো জানালা দিয়ে দেয়ালে মিটমিট করছে। শীতের সকালের আলোটা স্বপ্ননিয়ে খেলাকরে কিন্তু আজ রশীদের সব স্বপ্নকে তুচ্ছ করে দেখছে এই সোনালী আলো। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলেছে। আজ বেশ নড়া-নড়ি করছে রশীদ। চঞ্চলতা বেড়েছে। আত্মীয় স্বজনদের মনবলটা অনেকটা শক্ত হয়েছে। রশীদের এই চঞ্চলতা ক্ষণিকে টিভি চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজে রুপাšতরিত হলো। সংখ্যায় তত্বে ক্ষণিকে আরেকটি যুক্ত হলো। চারদিনের লড়াইয়ের অবসান হলো। জানুয়ারির ২৭ তারিখ মঙ্গলবারের এই সময়টি স্থব্ধ মানবতার! তখনো সন্ধ্যা হয়নী। হাসপাতালের সব রীতি-নিয়ম শেষে শীতের শ্রভ্রতায় একমুঠো বিকেলের আলো ছড়িয়ে পড়েছে মামুদপুরের মাটিতে। চারিদিকে মিষ্টি বিকেল যখন তখন করুণ স্বরে এম্বুলেন্সের শব্দে পুরো গ্রামে স্থব্ধতা। হরতালের জ্বালাও-পোড়াও মাঝে শান্ত গ্রামে জীবনের প্রথম কোন এসিগাড়তিে নীজ গৃহে ফিরেছে রশীদ। মেয়ের আত্মচিৎকার স্ত্রীর নিরবে ঝরা অশ্র“ আর হাজার হাজার মানুষের নিরবতা বলে দেয় ’জ্বলছে আগুন পুড়ছে দেশ’। আজ তো রশীদের মুক্তির দিন। দারিদ্রতার জালছিড়ে সব কিছুকে ভূলেগিয়ে রশীদ আজ নীজের গৃহে কি যেন একটা নিয়ে এসেছে। এ জন্য রশীদের গৃহে এসেছে জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার, সুশীল সমাজের কর্তাবাবুরা, সাংবাদিক সহ নানা শ্রেণীর মানুষ। অথচ ক’দিন আগ্ওে রশীদের ক্ষুদার জালা কেউ মেটাতে আসেনী। সšতানদের মুখের দিকে চেয়ে রশীদ ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলো নতুন একটা স্বপ্ননিয়ে। কিন্তু আজ তার গৃহে এত লোকের সমাগম তার পরম প্ওায়া! আজ তার লাশের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশের বিবেগ! অথচ এসব কিছুকে তুচ্ছ করে চারিদিকে নেমে আসতেছে অন্ধকার। সময় হয়েছে রশীদের চলে যাবার। বিদায় নিতে হবে স্বজনদের কাছ থেকে। চারটি মেয়ের গগন ফাটানো কান্না, স্ত্রীর টিপটিপ চোখের জল। রশীদ চলেগেল। আর ফিরবেনা………..!!!! কর্তাবাবুরা আশ্বাস দিয়েগেল। এটা সেটা, হাবিজাবি কত কি রীতি নিয়ম মেনে তাদের প্রস্থান ঘটল। বাড়িতে কিসের যেন শূণ্যতা! রশীদরা চলে যায় কত শূণ্যতা কত প্রাণে কত ঘরে। এই জীবনগুলোর বিনীময়ে তারা ক্ষমতায় আসে, ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। রীতি-নীতিতে এরা লাশ নিয়ে ফায়দা লুটে। আর অবুঝ শিশু বুঝতেই পারেনা তার বাবা চলে যায়! আব্দুর রশীদ নেই! স্ত্রী সšতানদেও আগলে রেখেছেন কলিজার মাঝখানে। ক’দিন ধরে ঘরে রান্না হয়না। মুড়্ওি শেষ হয়েছে দুপুরে। এখনো কোন অনুদানের টাকা এসে পৌঁছেনী রশীদের বাসায়। সšতানেরা ক্ষুদার্থ। কি করবে ২৭ বছরের চার সšতানের মা রাবেয়া? বাচ্চা দুটোর ক্ষুদার জ্বালা সহ্য করতে না দেখে বাধ্য হয়ে. . . . . . . . !!! —
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×