somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাকিস্তানিদের নিয়ে কয়েকটি জোক্‌স এবং একটি সত্য ঘটনা

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হরহামেশা মার্শাল ল’র দেশ পাকিস্তানে তখন সান্ধ্য-আইন চলছে। সন্ধ্যা ছ’টায় কারফিউ শুরু। পৌনে ছ’টা বেজে গেছে, ত্রস্তপায়ে মানুষজন ছুটছে গন্তব্যে। সেনা চেকপোস্টের এক সৈনিক হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই বাড়ির পথে দৌড়ুতে থাকা একজনকে গুলি করে মেরে ফেলল। সঙ্গী সৈনিকরা হতবাক। ‘তুই এটা কি করলি নালায়েক! লোকটা তো আমাদের কোনো উসকানিই দেয়নি। আর কারফিউ শুরুর এখনো পাক্কা পনের মিনিট বাকি? কোনো কারণ ছাড়াই জ্বলজ্যান্ত একজন মানুষকে মেরে ফেললি! এটা তো একাত্তরের পূর্ব পাকিস্তানও না। তুই মানুষ না অন্য কিছু?’

খুনি সৈনিকের ঠাণ্ডা জবাব, “আমি লোকটাকে চিনি। তার বাড়ি এখান থেকে কম করে হলেও এক ঘণ্টার পথ। এই ১৫ মিনিটে বেটা কোনোমতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারতো না। তাই... আগেভাগেই কাজ সেরে দিলাম!” কথা শেষ করে সদ্য গুলি করা রাইফেলটি পরিষ্কারে মনোযোগ দিল সে।

ওপরের কৌতুকটি আমার পুরনো একটি লেখা লেখা থেকে নেওয়া। তাই অনেকেই ভাবতে পারেন পুরনো লেখাটিই আবার খাওয়াতে চেষ্টা করছি কী না! লেখাটি যে নয়া তা বোঝানোর জন্য পাকিস্তান সম্পর্কিত আরেকটি কৌতুক, সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষায় যাকে বলে ‘আসুন, উমদা’ জোক্‌স শুনে নিই—

এই গল্পটি পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান কাম প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক কিংবা প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে নিয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে বিচ্ছুবাহিনীর শৌর্য-বীর্যের প্রতাপে রণাঙ্গণে বেহাল তখন পাকিস্তানিরা। মদ্যপ ইয়াহিয়া অকারণে এক সৈনিকের ওপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত। তিনি নিজ হাতে বরখাস্তপত্র টাইপ করে ওই সৈনিকের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ‘মাদার... হারামখোর, এই নে! এখনি দূর হ আমার সামনে থেকে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে তোর মত কুলাঙ্গার-কমিনার আর প্রয়োজন নেই (কারণ অন্যরা সব তারচেয়েও বড় কমিনা বিধায়...)।

নিরপরাধ সৈনিক চরম বিস্ময় হজম করে জানতে চাইলো, ‘স্যার, আমার অপরাধ?’

‘তোকে আমি বরখাস্ত করলাম, ব্যস এটাই আসল কথা। যা ‌এখন গিয়ে আমাকে গালিগালাজ করতে থাক জীবনভর। এতে আমার কিছুই আসবে যাবে না! মন চাইলে আমি মারা যাবার পর আমার কবরে গিয়ে ‘হিসু’ করে আসিস!’

“অত বড় লম্বা লাইনে আমি দাঁড়াতে পারবো না, স্যার! দয়া করে অন্য কোনো শাস্তি থাকলে...” ভাবলেশহীন কণ্ঠে সৈনিকের জবাব।

মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস। এসময়টা বাঙালি বা বাংলাদেশিরা যে যেভাবেই কাটান না কেন, আমি মার্চ আর ডিসেম্বরে পাকিস্তানিদের নিয়ে এসব কৌতুক বেশ উপভোগ করি। কারণ পাকিরা আমাদের ওপর জুলুম কম করেনি। এইদেশকে শোষণ করে, এখানকার পাটের টাকায় পশ্চিমে স্বপ্ন নগরি ইসলামাবাদ-করাচি গড়ে তুলেছে তারা আর আমাদেরকেই বলতো- ‘বাঙালকা বাচ্চা, কাভি নাহি আচ্ছা...’

এখন সুযোগ যখন পাওয়া গেছে, এবারকার বিজয় দিবস উপলক্ষে পাকিদের নিয়ে কিছু কেচ্ছা-কাহিনী আপনাদের সঙ্গেও শেয়ার করছি আর কি!

এবার আরেকটি জোক্‌স। এটি পাকিস্তানের সাবেক শাসক এবং স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানকে নিয়ে। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকা আইয়ুবের চেলারা দেশকে তখন ‘যেমন খুশি সাজ’র পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বাস্তবতা চেপে রাখার চেষ্টায় সর্বত্র বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুবের গুণকীর্তনে নানান কীর্তিকর্ম চলছে সরকারি উদ্যোগে। সবক’টি সিনেমা হলে প্রতিটি শো’র আগে ‘উন্নয়ন পরিক্রমা’ জাতীয় সরকারি তথ্য বিবরণীর প্রচারও এহেন কীর্তিকর্মের একটি। মোসাহেবরা আইয়ুবকে নানাভাবে জানান দিয়েছে— পত্রিকা যা-ই লিখুক, আপনার প্রশংসায় বাঙালিরা পঞ্চমুখ! তারা আইয়ুব বলতে অজ্ঞান! সিনেমা-টিভিতে আইয়ুবের ছবি দেখলে তারা করতালিতে ফেটে পড়ছে!

প্রশংসা যৌক্তিক-অযৌক্তিক যাই হোক, শুনতে সবারই ভাল লাগে। তবে এমনধারা গল্পে ফিল্ড মার্শাল সাহেবেরও কেমনটা ‘সন্দ সন্দ’ হলো। তিনি বিষয়টা ফিল্ডে গিয়ে সরজমিন করতে ছদ্মবেশে ছুটে এলেন পূর্ব পাকিস্তান। এসেই ম্যাটিনি শো’র টিকিট কেটে ঢকে পড়লেন গুলিস্তান সিনেমা হলে।

ছবি আরম্ভ হবার আগে শুরু হলো সরকারি তথ্য বিবরণী। হ্যাঁ, সত্যিই তো, আইয়ুবের ছবি আসতেই হল ভরতি দর্শক ‘বাচ্চালোগ’ এর মত ‘তালিয়া’ বাজাতে শুরু করলো।

প্রেসিডেন্ট সাহেব তো তাজ্জব! তিনি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করছিলেন ‘আপন বন্দনা’। কিন্তু হঠাৎ’ই পাশ থেকে কনুইর কঠিন এক গোত্তা খেয়ে সম্বিৎ ফিরে পেলেন। পাশের সিটের ঢাকাইয়া তাকে রীতিমত ভর্ৎর্সনা আর দরদ ভরা কণ্ঠে বলছেন- ‘আবে হালায়! তালি মারছ্‌ না কেলাইগ্যা (আরে ভাই, তালি দিচ্ছিস না কেন)? আইয়ুব খানের পুলিশের ডান্ডার বারি খাইবার চাস্!’

ডায়ালগ শুনে আইয়ুবের তো আক্কেল গুড়ুম! তিনি বুঝলেন, বাঙালি তাকে ‘কত্তো’ ‘পেয়ার’ করে! আর এও বুঝলেন মোসাহেবরা কত্তখানি অন্ধকারে রেখেছে তাকে (আহ্‌, যদি আমাদের ক্ষমতাবানরা এ সত্যিটা কোনোকালেও বুঝতেন ক্ষমতায় থাকাকালে!)। এরপর আইয়ুব নাকি দ্রুত ঢাকা ত্যাগ করেন। গল্পবাজদের ধারণা, এরপর তিনি ক্ষমতাও ত্যাগ করেন।

তবে পাকিদের নিয়ে সব ধরনের রসালো জোক্‌স ছাপিয়ে আমার ছোটবেলায় বাবার করা একটি মন্তব্য ছিল বেশ আগ্রহোদ্দীপক।লাখ লাখ বাঙালির নির্মম হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন আর ধর্ষিত হওয়ার ঘটনার ক্রীড়ণকদের অন্যতম ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ড ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করার পর থেকে পাকিস্তানের তখনকার প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক প্রসঙ্গ এলেই তার নাম উচ্চারণ করতে গিয়ে বাবা বলতেন- ‘হজরত জেনারেল’ জিয়াউল হক ‘রহমাতুল্লাহি আলাইহি’।

শ্রোতারা এর কারণ জানতে চাইলে উদার-ধার্মিক ও তীক্ষ্ণ রসবোধ সম্পন্ন বাবা বলতেন— ইনি নির্ঘাৎ আল্লাহ্‌র অলি। নইলে ভুট্টোর মত হাড়ে হার্মাদ শয়তানকে ফাঁসিতে ঝোলানো সাধারণ মানুষের কাজ না!

পাকিস্তানের ৯ম প্রধানমন্ত্রী আর ৪র্থ প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টোর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরবর্তী সময়টা তখন। দুনিয়ার তাবড় তাবড় পাওয়ার আর সুপার পাওয়ারের অনুরোধ-উপরোধ-চাপ (হোক না লোক দেখানো) অগ্রাহ্য করে প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক সাবেক প্রেসিডেন্ট ভুট্টোর ফাঁসি ঠিকই কার্যকর করেন। ভুট্টোকে ফাঁসিতে লটকানোর (৪ এপ্রিল ১৯৭৯) কিছুকাল আগে (ভুট্টো তখন জেলে, বিচার চলছে) জেনারেল জিয়াউল হকের একটি মন্তব্য ছিল বেশ আলোড়ন সৃষ্টিকারী। এক অনুষ্ঠানে ভুট্টোর পরিণতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, আই উইল হ্যাংগ দিস বাস্টার্ড!

জিয়াউল হক আর যা হোক, কথায় ‘পাক্কা’ ছিলেন এতে তাই প্রমাণ হয়। কথা না রাখার এই যুগে দুনিয়ায় তাঁর মত পাক্কা কথা রাখনেওয়ালা আর ক’টা আছে, বলুন তো?

প্রসঙ্গত, প্রায় ছয়জন সিনিয়র জেনারেলকে টপকে ভুট্টো জেনারেল জিয়াকে পাকিস্তানের সেনা প্রধান বানিয়েছিলেন।

নিজের ফাঁসুড়েকে নিজেই কিভাবে বেছে নিয়েছিলেন ভূট্টো তা যদি ৭১-এ শহীদ আর নির্যাতিত লাখ লাখ বাঙালি একটু দেখে নিতে পারতেন!

যাহোক, যতই যৌক্তিক হোক, পাকিস্তানিদের নিয়ে এভাবে ঠাট্টা-মস্করা করায় আমি নিশ্চিত, তাদের অনেক জ্ঞাতি-ভাই-ব্রাদার কষ্ট পেয়েছেন, আমাকে গালমন্দও করছেন মনে মনে। তাদের মনোকষ্টে কিছুটা ভারসাম্য আনার জন্য নিবেদন করছি নিচের সত্য কাহিনীটা—

১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর। দীর্ঘ ৯মাস যুদ্ধের পরে আজ বেশ একটু স্বস্তি বোধ করছেন পাবনার সুজানগর থানার রাণীনগর ইউনিয়নের ভাটিকয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্না। গতকাল ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। আশপাশের কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প ঘুরে এখন তিনি বাড়ি ফিরছেন।

মানুষ আনন্দে ভাসছে। জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বে রমনা রেসকোর্সের ময়দানে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চাপিয়ে দেওয়া দুঃস্বপ্নের মত সেই যুদ্ধ। তবে মুক্তিযোদ্ধা জিন্নার বারবার মনে পড়ছে ছোট ভাই শহীদ জি এম শামসুল আলম বুলবুলের (১৯) কথা। মেধাবী ছাত্র বুলবুল ছিল পরিবারের নয়নমণি।

৭১-এর ২৭ মার্চ হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে শহীদ হওয়া পাবনার প্রথম মুক্তিযোদ্ধা তিনি। দেশ স্বাধীন হবার পর তাঁর নামে পাবনা সরকারি কলেজের নামকরণ করা হয়েছে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ।

তবে আদরের ছোটভাই শহীদ বুলবুল হত্যার অসাধারণ এক প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এসেছে আজ জিন্নার হাতে। যুদ্ধজয়ী দুঃসাহসী আর বেপরোয়া মুক্তিযোদ্ধা জিন্না মনে মনে ভেবে স্বস্তি পাচ্ছেন- মা রোকেয়া বেগম তার কনিষ্ঠ সন্তান বুলবুলকে হারিয়ে যে অসহনীয় কষ্ট বুকে চেপে আছেন, তা আজ দূর হয়ে যাবে।

কিছুক্ষণ আগে বেড়া থানার মাসুন্দুয়া ক্যাম্প থেকে বের করে নিয়ে আসা বন্দি পাকি ক্যাপ্টেন শেখ মোহাম্মদ আমিনকে জিন্না মহিষের গাড়িতে করে সুজানগরের ভাটিকয়া’র বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার পাহারায়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই জিন্নাহ বাড়িতে ফিরলেন। পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনকে ধরে আনার খবরে পুরো গ্রাম ভেঙ্গে পড়েছে আজ আব্দুস শুকুর মিয়ার বাড়িতে।

হাত-পা বাঁধা ক্যাপ্টেন আমিনকে বাড়ির বিশাল উঠোনের মাঝখানে নিয়ে আসা হলো। এসময়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুলবুলের মা রোকেয়া বেগমকেও ডাকা হলো। একই সঙ্গে বিজয়ের আনন্দ আর কনিষ্ঠ পুত্র বুলবুলকে হারানোর শোক তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের ক্ষণ থেকেই কেমন স্থানুর মত হয়ে গেছেন যেন। যন্ত্রচালিতের মত তিনি এসে দাঁড়ালেন উঠোনে।

জিন্না হাঁক ছাড়লেন, “মা! দেখে যাও। বুলবুলের খুনি পাকিস্তানি হানাদারদের ক্যাপ্টেনকে ধরে এনেছি। আজ তোমার সামনে একে হত্যা করে প্রতিশোধ নেব ভাই হত্যার।”

(তখনকার পারিপার্শ্বিকতা ও বাস্তবতার সঙ্গে এ ঘটনা খুব একটা বেমানান ছিল না। পাকিরা নয়টি মাস এই সজল-শ্যামল বাংলার বুক জুড়ে নৃশংস-নির্মম আর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের নারকীয় তাণ্ডব চালায়। তারা গুলি করে, আগুনে পুড়িয়ে, জবাই করে, বেয়নেটে খুঁচিয়ে চরম পৈশাচিকতায় হত্যা করেছে নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ লাখ লাখ বাঙালি নর-নারীকে। স্থানীয় মিরজাফরগোষ্ঠী রাজাকার-আলবদর-আলশাম্‌সদের সহায়তায় দুই লাখ নারীর সম্ভ্রম হরণ করেছে এই পাকি হানাদাররাই।)

এদিকে, মা তার বড় ছেলে জিন্নার ডাকে সাড়া দেন না। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন নিশ্চল হয়ে। তার মনে শুধু বারবার ভেসে উঠছে বুলবুলের মুখ।

এসময় একজন একটি ছোরা ধরিয়ে দিল জিন্নার হাতে। তার বুকে আর চোখে জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। ছোরা হাতে এগিয়ে গেলেন ‍তিনি উঠোনের মাঝখানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রাখা নরকের কীট ঘৃণ্য পাকি শত্রুটির দিকে।

আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ভবলীলা সাঙ্গ হবে বর্বর পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তার। এগিয়ে গেলেন জিন্না।

এসময়ে নড়ে উঠলেন সন্তানহারা রোকেয়া বেগম। চেড়ে দেওয়া স্প্রিংয়ের মত তিনি দৌড়ে গিয়ে ছেলের হাত থেকে কেড়ে নিলেন ছোরা। নির্বাক রোকেয়া সবাক হলেন, “না। ও আমার সন্তান! দেখ চেয়ে, ওকে বুলবুলের মত লাগছে দেখতে। আমার বুক খালি হয়েছে, কিন্তু আমি চাই না আর কোনও মায়ের বুক খালি হোক আমার চোখের সামনে।”



এরপরের ঘটনা বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নার জবানিতেই শোনা যাক:

মায়ের কথায় আমি থমকে গেলাম। বুলবুল আমাদের সবচেয়ে আদরের ভাই ছিল। এসএসসি পাশের পর ভর্তি হয় পাবনা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ। ইসলামিয়া কলেজ স্বাধীনতার পর তার নামে নামকরণ করা হয়)। সে ভাল গানও করতো। ২৫ মার্চ রাতের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত পাবনাতেও দখলদারিত্ব কায়েম করে। আমরা সবাই ছিলাম সুজানগরের ভাটিকয়া গ্রামে। শুধু শহরের শালগাড়ীয়ায় বড় খালুর বাড়িতে থেকে যায় ছোটভাই বুলবুল।

আমি দূরন্ত স্বভাবের ছিলাম বলে বাবা আমাকে আগলে রাখেন গ্রামের বাড়িতে। ওদিকে শান্ত স্বভাবের কৈশোরাত্তীর্ণ বুলবুল পঁচিশে মার্চের পরেই সহপাঠী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে মুক্তিবাহিনীর একটি দল গড়ে তোলে। সে শহর থেকে আমাকে খবর পাঠায় খাবার ও অস্ত্র যোগাড় করে তার কাছে যাওয়ার জন্য।

আমি দরকারি জিনিসপত্র নিয়ে বুলবুলের সঙ্গে দেখা করতে শহরের দিকে রওনা হই। কিন্তু তার আগের রাতেই এক সম্মুখ সমরে শহীদ হয় কিশোর বুলবুল। বেপরোয়া সাহসী হলেও সমরবিদ্যায় অনভিজ্ঞ ছিল সে। আধুনিক প্রশিক্ষণ পাওয়া শত্রুপক্ষের পেশাদার যোদ্ধাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের বার্স্ট (ব্রাশ) ফায়ারে ঝাঁঝরা হয়ে যায় বুলবুলের দেহ। নাড়িভূড়ি বের হয়ে যায়।

ভয়াবহ এ ঘটনায় আমাদের পুরো পরিবার স্তব্ধ হয়ে যায়। সবার আদরের, চোখের মণি বুলবুল নেই! বাবা প্রচণ্ড আঘাত পান অন্তরে আর মা হয়ে পড়েন বাকরুদ্ধ। আমাদের ভাইবোনদের তো কথাই নেই। সবার ছোট ভাইটিকে এভাবে হত্যা করলো হানাদার পিশাচরা!

এরপর মুক্তিযুদ্ধের বাকি সময়টা বুলবুলের হত্যাকারী, পুরো একটি জাতিকে হত্যাচেষ্টাকারী বর্বর পাকিদের বিরুদ্ধে জানবাজী-লড়াই করলাম। দেশ শত্রুমুক্ত হলো।

দেশ স্বাধীনের পরের দিন। একটি ক্যাম্প ঘুরে দেখার সময়ে ক্যাম্প কমান্ডার জানালেন, বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে আসা মুক্তিবাহিনীর বিক্রমের মুখে লেজ গুটিয়ে পলায়নরত দলছুট এক পাকি সামরিক কর্মকর্তাকে আটক করেছে এলাকাবাসী। তার দলবল নগরবাড়ি ফেরিঘাটের দিকে পালাচ্ছিল। কিন্তু সে দলছুট হয়ে নাসুন্দিয়ার দিকে চলে আসে।

ঘৃণ্য পিশাচ হানাদারদের এই সদস্যকে মুক্তিবাহিনী আজই হত্যা করবে বলে ক্যাম্প কমান্ডার জানান।

(পাকিস্তানি হায়েনারা ধরাশায়ী হয়েছে— স্বস্তি আনন্দে চারদিক ভাসছে। টানা ৯মাসের কঠিন যুদ্ধের পর দেশ স্বাধীন হয়েছে মাত্র আগের দিন। দেশজুড়ে যুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংসস্তুপের মাঝেও চলছিল বিজয়ী বীর বাঙালির আনন্দোৎসব আর নতুন করে শুরু করার যোগাড়-যন্তর। এরই সমান্তরালে কিছু কিছু অঞ্চলে রাজাকার, আলবদর আর আশশাম্‌সসহ ঘৃণ্য দালালগোষ্ঠী চলে যাচ্ছিল আত্মগোপনে। অনেকেই ব্যস্ত ছিল নিজের ‘রং’ রদলাতে।

এসময়ে আরেকটি বিষয় চলছিল। তা হলো পরাজিত কাপুরুষ হানাদারদের দলে দলে ঢাকার দিকে লেজগুটিয়ে পলায়ন।)

বিজয় দিবসের দিন থেকে মনটা ভাই বুলবুলের জন্য গুমরে গুমরে উঠছিল। এ অবস্থায় পেয়ে গেলাম চরম শত্রু পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বন্দি ক্যাপ্টেনকে। সিদ্ধান্ত নিলাম মায়ের সামনেই হত্যা করবো ঘৃণ্য শত্রুকে।

কিন্তু মা পুরো অপ্রত্যাশিতভাবে বেঁকে বসলেন। কী এক অজানা কারণে মা ওই পাকিস্তানি তরুণ ক্যাপ্টেন শেখ মোহাম্মদ আমিনের (পরে তার নাম জানা যায়) মাঝে নিজের শহীদ ছেলে বুলবুলের রূপ দেখলেন কে জানে! সম্ভবত ছেলের রূপ না, শুধু মৃত্যুমুখে পতিত একজনকে প্রাণে বাঁচানোর জন্য-ই মা ওই ভূমিকা নিয়েছিলেন। যা হোক, আমাদের বাড়িতেই ক্যাপ্টেন আমিনের থাকার ব্যবস্থা করলেন মা। বিষয়টা তখন আমাদের কাছে ছিল কালসাপকে নিজের ঘরে আশ্রয় দেওয়ার মত। এ যেন রূপকথা বা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। কিন্তু মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমরা কেউ দাঁড়াইনি।

ধীরে ধীরে আমিনও আমাদের সঙ্গে মিশে যেতে থাকে, একই পরিবারের সদস্যের মত। আমাদের মা তারও মা হয়ে গেল। ‌একপর্যায়ে পাকিস্তান থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন স্বাধীন বাংলাদেশে। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকায় গিয়ে দেখা করলাম তাঁর সঙ্গে। যেখানে ওই ক্যাপ্টেনকে বন্দি শত্রুসেনা হিসেবে সরকারের কাছে সোপর্দ করার কথা, সেখানে মমতাময়ী মায়ের ইচ্ছায় বঙ্গবন্ধুকে বলা হলো এই পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন যুদ্ধের সময়ে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে। পাকিস্তানি ক্যাম্পের তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনে বড় সাহায্য করেছে।

এই ‘মহ‍ৎ ভূমিকার’ জন্য বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাকে মোহাম্মদপুরে একটি বাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ক্যাপ্টেন আমিন আমাদেরই ‌আপন ভাইয়ের মত পরিবারের একজন সদস্য হয়ে গেল। সে আর পাকিস্তানে ফিরে যেতে চায় না। মা তাকে আমাদেরই এক জ্ঞাতি বোনের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিলেন। গ্রামেই তাকে বাড়ি করার জমি দেয়া হলো। তার ঘরে ২ মেয়ে জন্ম নিল।

একসময়ে সে পাকিস্তানে ও বিশ্বের অন্যান্য স্থানে তার স্বজন বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করলো। একপর্যায়ে ১৯৭৬ সালে বিদেশ যাত্রা করলো, নিউজিল্যান্ড। আমরা সবাই আনন্দিত আমাদের আশ্রিত ‘পাকিস্তানি-ভাইটির’ এত উন্নতিতে। এরপর দেশে এসে পরিবার নিয়ে গেল।

সেখানে কিছুকাল থাকার পর ‘বাঙালি জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতার চূড়ান্ত নিদর্শন’ দেখালো ক্যাপ্টেন আমিন। সে তার বাঙালি স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয়। তালাকপ্রাপ্ত ওই নারী এখন ঢাকাতেই থাকেন। সন্তানরা থাকেন বিদেশে। এর মধ্যে প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে ক্যাপ্টেন আমিন।

পাকিস্তানি ওই ক্যাপ্টেনের ব্যাপারে সর্বশেষ ২০১২ এর আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সুজানগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ওরা অকৃতজ্ঞ জাতি। পাকিস্তানিরা হলো বেঈমানের জাতি। আমিনও তাই। ওর ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না। রুচি নেই।

তিনি বলতে থাকেন, ওরা এদেশে হামলা করেছিল। আমরা যারা যুদ্ধ করেছি তাদের বিরুদ্ধে ছিল তাদের যুদ্ধ। কিন্তু সাধারণ মানুষ কী করেছিল তাদের? খেটে খাওয়া মানুষ, এমনকি রাস্তায় যারা ভিক্ষা করে তাদেরকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছে তারা। পুরো দেশটাকে কী করেছিল তারা! এদেশের মেয়েরা ওদের কী ক্ষতি করছিলো। তাদের ওপর অমন পৈশাচিক নির্যাতন কেন চালিয়েছে!

এ প্রসঙ্গে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ গ্রন্থের লেখক মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সাঈদ হাসান দারার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন আমিন বছর দেড়েক আগে দেশে এসেছিল। এই লোক মুক্তিযুদ্ধে ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়েছে। চলতি বছর প্রকাশিত (অন্বেষা প্রকাশনী) আমার বইয়ে সব উল্লেখ করেছি।

দারা জানান, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে ‍রাজাকার-আলবরদের সহায়তায় শত শত বাঙালিকে হত্যা করেছে এই ক্যাপ্টেন আমিন।

গবেষক দারা আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ত‍ৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল নজর হোসেনের অধীনে ১৬ ডিভিশনের অফিসার ছিল সে। আরও বিস্তারিত বলতে গেলে ১৬ ডিভিশনের অধীনে ২০৫ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তাজাম্মল হোসেনের অধীনস্থ অফিসার ছিল সে। রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে পাকি সেনাবাহিনীর সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় (খুঁজে বের কর ও ধ্বংস কর) নামের বিশেষ অপারেশনে নেতৃত্ব দেয় ক্যাপ্টেন আমিন।

চূড়ান্ত পরাজয়ের মুহূর্তে লেজ গুটিয়ে পালানো পাকিস্তানি কাপুরুষ অফিসারদের মধ্যে সেও ছিল একজন। কিন্তু শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল ও তাঁর অগ্রজ বীর মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাহর মমতাময়ী মা রোকেয়া খাতুনের অনন্য অসাধারণ উদারতা আর মাতৃস্নেহে প্রাণে রক্ষা পায় সে। শুধু কি প্রাণে রক্ষা! সে নতুন করে স্বাভাবিক মানুষের মত জীবন যাপনের সুযোগ পায়। সুযোগ পায় মুক্ত মানুষের মত বিশ্বের যেখানে খুশী সেখানে যাওয়ার। বঙ্গবন্ধুর কাছে সহানুভূতি আদায়ের উদ্দেশ্যে ঐতিহ্যবাহী বাঙালি উদারতার ধারাবাহিকতায় তার পক্ষ নিয়ে মিথ্যাও বলা হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে আশ্রিত এই চরম শত্রুকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারী হিসেবে জেনে সিংহ-হৃদয় বঙ্গবন্ধু উপহার দেন বাসস্থান। ওই পরিবারটি তাঁকে দেয় সন্তানের স্নেহ, সহোদরের ভালোবাসা। পরিবারের কর্তা, রোকেয়ার স্বামী আব্দুস শুকুর মিয়াও পুত্রশোক বুকে চেপে রাখেন শত্রু বাহিনীর কর্মকর্তা আমিনকে। পরিবারের একজন হিসেবে তাকে মেনে নিতে দ্বিমত করেননি অসাধারণ ওই পরিবারের কেউ।

কিন্তু রোকেয়া খাতুনেরও আর খোঁজ রাখেননি ক্যাপ্টেন আমিন। তিনি মারা যাওয়ার পরও তার খোঁজ করেননি বলে জানান মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাহ। এমনকি রোকেয়ার পছন্দে বিয়ে করা বউটাকেও সে ত্যাগ করেছে। এতটাই ‘কৃতজ্ঞতা’ দেখিয়েছে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন আমিন। আসলে গড়পরতা পাকিস্তানিরা এমনি!

পাকিস্তানিরা কেমন তা বোঝাতে এবার শুরুর মত আরও একটি কৌতুক দিয়ে শেষ করছি (আসলে কঠিন বিষয়গুলি সহজে বোঝানোর জন্য অনেক সময়েই এই কৌশল বেশ লাগসই হয়। হুমায়ূন আহমেদ এই কায়দায় অনেক কঠিন কঠিন বিষয় সহজে বলে গেছেন)।

এক বাচ্চা ছেলে রাস্তার একটি কুকুরের লেজ স্টিলের পাইপের ভেতর ঢোকানোর প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে। তা দেখে মানুষজন বিরক্ত হয়ে তাকে বললো, এই বোকা, সারাজীবন এর লেজ ওই পাইপের ভেতর ভরে রাখলেও তো তা সোজা হবে না। তোর কি মাথা খারাপ!

জবাবে ছেলেটি বললো, আমারে কি পাগল পাইছেন! কে বলছে আমি কুত্তার লেজ সোজা করবার চাই। আমি তো আসলে ওর লেজের সাহায্যে পাইপটাকে বাঁকা করতে চাইছি। আমিও জানি কুকুরের লেজ সোজা হয় না।

আমরা সবাই জানি, কুকুরের লেজ সোজা হয়না। শুধু অনেকেই জানি না বা বিশ্বাস করতে চাই না যে— পাকিস্তানিরা কখনও ভালো হয় না, বিশেষ করে বাংলাদেশিদের জন্য তারা কখনোই ভালো হবার নয়। কারণ, কুকুরের লেজ সদৃশ অমানুষ পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন আমিনকে মানুষ করার চেষ্টায় বাঙালি মা রোকেয়া খাতুনের ইস্পাতের ন্যায় বিশ্বাসও ভেঙ্গে গিয়েছিল। ক্যাপ্টেন আমিন কুকুরের লেজ হয়েই বেঁচে আছেন।

তারপরেও আমি ধন্যবাদ জানাবো পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তা আমিনকে। তার এই অকৃতজ্ঞতা বাঙালির উদারতা আর মানবিকতাকে আরও একবার ‘চির উন্নত মমশির’ হিসেবে প্রমাণ করেছে। এভারেস্ট শৃঙ্গের মত মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছে স্বমহিমায়।

(সূত্র ও তথ্য দিয়ে লেখাটি তৈরিতে সহযোগিতা ও উ‍ৎসাহিত করেছেন বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট, লেখক ও উন্মাদ পত্রিকার সম্পাদক আহসান হাবীব। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর পাকিস্তান সম্পর্কিত সব কৌতুকই কালের কণ্ঠের মফস্বল সম্পাদক খায়রুর বাশার শামীমের কাছ থেকে শোনা। তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা)

সূত্রঃ আহ্‌সান কবীর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০১
১৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×