সালটা ছিলো ১৯৯৮।
বাংলাদেশে তখন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো 'উইল্স ইন্টারন্যাশনাল কাপ', যেটি ছিলো বিশ্বের প্রথম নক-আউট বিশ্বকাপ কিংবা মিনি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে এসেছিলো টেস্ট খেলুড়ে ৯ টি দেশ। বাংলাদেশ তখনও টেস্ট স্ট্যাটাস পায় নি বলে ওই টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নি। তো সারা দেশে তখন সাজ সাজ রব। এত বড় বড় ক্রিকেট মহারথীরা আসছেন, এ কি চাট্টিখানি কথা নাকি! বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ইলেক্ট্রনিক স্কোর-বোর্ড বসানো হল, সেই স্কোরবোর্ড দেখে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ... ওরে বাবা! প্রযুক্তি কত এগিয়ে গেছে!
তো প্রত্যেক টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই অংশগ্রহণকারী দলগুলো নিজেদের একটু ঝালাই করে নেবার জন্য প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে থাকে, এ কথা আমরা সবাই কম বেশি জানি। সাধারণতঃ এসব প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা হয়ে থাকে স্থানীয় চুনোপুঁটি দলের সাথে... আঞ্চলিক কিংবা ক্লাব-টাইপের দলের বিপক্ষে। তো সেই নক-আউট বিশ্বকাপেও অংশগ্রহণকারী ৯ টি দেশ প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল। কিন্তু কাদের বিপক্ষে জানেন?
না, কোন ক্লাব দল না... অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিস, নিউজিল্যান্ডসহ সবগুলো দেশ তাদের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিলো খোদ বাংলাদেশের জাতীয় দলের বিপক্ষে!
প্রত্যেকটা প্রস্তুতি ম্যাচেই আমরা মোটামুটি গো-হারা হেরেছিলাম। ম্যাচগুলোর হাইলাইটস্ আবার বিটিভিতে দেখানো হত। হাইলাইটস্গুলো দেখতে দেখতে আমি নিজের ভেতরে একধরণের দুঃখ অনুভব করতাম। আহারে! ওরা আমাদের সাথে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে! কি অপমান! কি অপমান! মনে হত, যদি ওদের সাথে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারতাম, হারাতে পারতাম...! ইশশশ, কত্ত মজাই না হতো!
আর তারপর... কেটে গেছে অনেকটা সময়।
এখন সাল ২০১৩।
নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দল বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে আসে। আর আমরা তাদের মোটামুটি বলে-কয়ে হারিয়ে দিচ্ছি! সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, ও আন্তর্জাতিক মানের বাংলা ওয়াশ করে তাদেরকে আমরা নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছি।
আর অপমান নয়, আর লজ্জা নয়। এখন সময় এগিয়ে যাবার। আমরা আর চুনোপুঁটি কোন দল নই। আমরা এখন বিশ্বের দরবারে একটি নতুন ক্রিকেট পরাশক্তি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




