জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ চট্টগ্রাম জেলার একজন ফুল টাইম রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবেও দায়ীত্ব পালন করেন। তিনি সি পি বি এবং আওয়ামী লীগ এর একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। ১৯৯১ সালে সাকা পরিবারের গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জনাব মোঃ ইউসুফ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় ইউসুফ। সারাজীবন রাজনীতি করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত।
তিনি রাঙ্গুনিয়া থেকে ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি সিপিবি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি ১৯৬৯-৭০ সালে রাঙ্গুনিয়া থানা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি থাকাকালে রাঙ্গুনিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) ছিলেন। স্বাধীনতার পর শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পর ১৯৭৪-৭৫ সালে দাউদ-ফোরাত জুটমিলে সিবিএ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) রাঙ্গুনিয়া থানার সাবেক সভাপতি মো. ইউসুফ জেলা কমিটির সদস্য এবং উত্তর জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও ছিলেন।
১৯৯১ সালে আট দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে চট্টগ্রাম-৭ আসনে নির্বাচন করেন মো. ইউসুফ। বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে ৩৪ হাজার ৬১৫ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ৯৬ সালে তাঁকে মনোনয়ন দেয়া না হলে এরপর থেকে মো. ইউসুফ রাঙ্গুনিয়ার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
জীবনসায়াহ্নে এসে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না একসময়ের চট্টগ্রামের রাজপথ কাঁপানো এই শ্রমিক নেতা। জীবন সায়াহ্নে এসে প্যারালাইসেস রোগী হয়ে রাঙ্গুনিয়া কলেজ সংলগ্ন ছোট ভাইয়ের বাসায় অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটে তার। জীবনের পড়ন্ত বেলায় যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন সেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার খোঁজও নেন না। দলত্যাগী নেতার পাশে ছিলেন না বামপন্থীরাও। ফেসবুকে-গণমাধ্যমে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফের অসহায় অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকে। সেই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রি এর দপ্তর থেকে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপর গত ৯ জানুয়ারি ইউসুফকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাবেক সংসদ সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউসুফ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখে রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে তিনি ঢাকার সম্মিলিত হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। চিরকুমার সাবেক এই সাংসদের বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
*** তথ্য সমূহ বিভিন্ন পত্রিকা এর খবর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। উনার নামে উইকিপিডিয়ায় একটি পাতাও তৈরি করেছি। কেউ চাইলে সেখানে তথ্য যোগ করতে পারেন। ভালো লাগলে ধারাবাহিক ভাবে হারিয়ে যাওয়া এমন রাজনীতিবিদ দের নিয়ে লিখবো এখন থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৯