অনেক অনেকদিন আগে এক দেশে ছিল এক অপরূপা সুন্দরী রাজকন্যা। রাজকন্যা আকাশ দেখতে খুব পছন্দ করত। এই কারণে প্রায়ই সে প্রাসাদের বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকত। সেই দেশে বাস করত এক সুখী যাযাবর। দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়িয়ে হাসি আনন্দে মেতে থাকাই ছিল তার কাজ। একদিন সেই যাযাবর প্রাসাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রাজকন্যাকে দেখতে পেলো। যাযাবরের কাছে মনে হোল পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য একসাথে করলেও এই সৌন্দর্যের কাছে তা হবে নস্যি। তার চোখ যেন কিছুতেই রাজকন্যা থেকে সরছিল না। রাজকন্যার দিকে তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আরেকটু হলেই নর্দমায় পরে যেত যদিনা একজন পথচারী সময়মত তাকে না বাঁচাত। সেই রাত্রে যাযাবরের আর ঘুম হোল না। ভাবল, এই সৌন্দর্য যদি আরেকবার না দেখতে পারে তাহলে তার জীবনটাই হবে বৃথা। পরদিন আবার সে একই পথে হাঁটতে হাঁটতে রাজকন্যাকে দেখতে পেল। এবারো রাজকন্যা মাথা উঁচু করে সেই আকাশপানেই তাকিয়ে। যাযাবর খুব চাইল যেন রাজকন্যা একবার যেন তার দিকে তাকায়। অনেক রকম কসরতও করল কিন্তু রাজকন্যার চোখ যেন নিচে নামতেই চায় না। যাযাবর কখনো প্রার্থনা করত না। ঈশ্বরে তার বিশ্বাস নেই কিন্তু তবুও যেন আনমনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল রাজকন্যা একবার হলেও যেন তার দিকে ফিরে চায়। ঈশ্বর তার প্রার্থনা শুনল পরদিন সেই পথ দিয়ে হেঁটে যেতেই রাজকন্যা তার দিকে তাকাল। যাযাবরের আনন্দের আর সীমা রইল না। তারপরদিন রাজকন্যা শুধু তাকালই না তার দিকে তাকিয়ে সুন্দর একটি হাসিও দিল। তারপর আবার আবার আবার... যাযাবরের মনে হোল তার মতো সুখী পৃথিবীতে আর কেউ নেই। সে স্বপ্নের জাল বুনে পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চড়ে রাজকন্যাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগল, কখনো হিমালয়ের চুড়ায় কখনো উত্তাল সাগরের শীতল বাতাসে কখনোবা সবুজ গহীন অরন্যে।
এইভাবে কিছুদিন কাটার পর যাযাবরের মনে হল রাজকন্যাও কি তার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করে থাকে? তাকে নিয়ে একই ভাবে স্বপ্ন দেখে। যদি তাই না হবে তাহলে প্রতিদিন কেন তার দিকে তাকাবে, কেন তাকে দেখে এত সুন্দর করে হাসবে। যাযাবর ভাবল এভাবে স্বপ্ন দেখে আর না, রাজকন্যাকে তার চাইই চাই। পরদিন আবার সেই একই পথে রাজকন্যার সাথে দেখা। রাজকন্যাও আগের মতোই তার দিকে তাকিয়ে সুন্দর করে হাসল। যাযাবর হাত ইশারা করে রাজকন্যাকে বলল নিচে নামতে, তাকে জানালো তাকে নিয়ে এই উঁচু নিচু রাস্তা দিয়ে হাঁটতে চায়। কিন্তু রাজকন্যা ছিল নিরুত্তর। পরদিন আবার যখন যাযাবর সেই পথে আসল তখন দেখল রাজকন্যা সেই আগের মতো মাথা উঁচু করে আকাশের দিকে তাকিয়ে। তারপর আবার আবার আবার... যাযাবরের হৃদয় যেন চুর্ন-বিচুর্ন হয়ে যাচ্ছিল। সে তার ভুল বুঝতে পারল। সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করল যেন সেই আগের মুহুর্তটুকু ফিরিয়ে দেয়।কিন্তু এবার আর ঈশ্বর তার কথা রাখল না। সবকিছুই আগেরমতই চলছিল শুধু একজন সুখী যাযাবর পরিণত হোল একজন দুখী যাযাবরে।
আলোচিত ব্লগ
লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?
মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়
প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন
যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।
আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?
আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন