ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেনের মত নামকরা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্কুল কলেজের অনেক ছাত্রী সর্বনাশা মাদকে আসক্ত। তারা ইয়াবা, ফেনসিডিল ও হেরোইনে আসক্ত বেশি। সবচেয়ে বেশি আসক্ত ইয়াবাতে। ঘুমের ওষুধের সঙ্গে নেশার নানা উপকরণ মিশিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট, হেরোইন ও ফেনসিডিল বানিয়ে দেদারসে বেচাকেনা চলছে। এসব মাদক ও উত্তেজক সেবনে শুধু যে কিডনি, লিভার ও ব্রেন নষ্ট হয় তা নয়। নারীদের বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে আসে। মাদকাসক্তদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সংখ্যা সর্বাধিক এবং বিকলাঙ্গ ও প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদানের হারও এদের মধ্যে বেশি বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এছাড়া তাদের গর্ভপাতের আশংকাও অত্যধিক। মাদকাসক্ত নারী ধূমপায়ীদের সংখ্যাও কম নয়। ধূমপানেও একই ধরনের কুফল হয় বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অভিমত ব্যক্ত করেন। মাদকাসক্ত নারী-পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা দ্রুত কমে যায়। তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকে।
তরুণী থেকে ৩০ বছর বয়সের নারীদের মধ্যে মাদকাসক্তের হার বেশি। এদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছাত্রী। মাদকাসক্তির কারণে মেয়েদের সংসার ভাঙ্গার ঘটনা বাড়ছে বলে মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে জানা যায়। মাদক সেবনের ফলে দাম্পত্য কলহ বাড়ে এবং এর অনিবার্য পরিণতি সংসারে ভাঙ্গন। সংসার ভাঙ্গার পিছনে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই রয়েছে মাদক।
চর্ম ও যৌন রোগের বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এমএন হুদা বলেন, প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রী মাদকাসক্ত রোগী তার নিকট চিকিৎসা নিতে আসছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের মাদকাসক্ত প্রচুর ছাত্রী চিকিৎসার জন্য আসে। এদের অধিকাংশ ইয়াবা ও ফেনসিডিলে আসক্ত। তাদের স্থায়ীভাবে যৌন ক্ষমতা থাকে না। মাদকাসক্ত পুরুষের অনুরূপ অবস্থা। মাদকাসক্ত নারী-পুরুষের বিয়ে হলেও দাম্পত্য কলহ লেগে থাকে। তাদের বাচ্চা হলে প্রতিবন্ধী হওয়ার আশংকা বেশি। প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধির জন্য মাদকই দায়ী বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
গাইনী রোগ ও টেস্ট টিউব বেবি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. রাশিদা বেগম বলেন, মাদকাসক্ত মহিলার বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা থাকে কম। তাদের অসময়ে গর্ভপাত ঘটে। বাচ্চা হলেও তাদের বিকলাঙ্গ হওয়ার আশংকা থাকে বেশি। মাদকাসক্ত নারীদের বাচ্চার শারীরিক বৃদ্ধিও হয় না। মাদকাসক্ত নারীদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের হার সর্বাধিক। দেশে মাদকাসক্ত মহিলা ও পুরুষের সংখ্যা ব্যাপক বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে প্রতিবন্ধী ও মেধাহীন শিশুদের সংখ্যা। এটা জাতির জন্য ভয়ংকর অভিশাপ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশ বাহিনীর এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা মাদক সেবন এবং ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত থাকায় মাদক ব্যবসা ও সেবন আশংকাজনক হারে বাড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, সর্বনাশা মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ইংলিশ মিডিয়াম কার্যক্রমের পাশাপাশি অন্যান্য পেশার লোকজনকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। প্রতিটি স্পটে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। তবে সীমান্ত পথে মাদক আসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে তারা মনে করেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



