নৌ-পথে ঢাকা সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়া তমরুদ্দি অথবা নলচিরা লঞ্চ ঘাট। এটা সারারাতের জার্নি। পরের দিন সকাল বেলা হাতিয়া থেকে নৌ পথে অথবা সড়ক পথে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায়। তবে নৌপথ অনেকটা ঝক্কি ঝামেলামুক্ত। হাতিয়ার তমরুদ্দি ঘাট থেকে ট্রলারে নিঝুম দ্বীপে নামার বাজার পৌঁছাতে মোটামুটি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়াও ঢাকা থেকে সড়ক/ট্রেন পথে নোয়াখালী-চেয়ারম্যানঘাট/চরবাটা হয়ে সি ট্রাকে হাতিয়া তার পর একইভাবে নিঝুম দ্বীপ।
মাথা গোজার ঠাঁই
নিঝুম দ্বীপে পর্যটনের নিঝুম রিসোর্টই একমাত্র ভাল মানের থাকার ঠিকানা। এই রিসোর্টে ডাবল ও ট্রিপল বেডের রুমসহ ৩টি ডরমিটরি রয়েছে। সব মিলিয়ে নিঝুম রিসোর্টে ৬০ জনেরও অধিক সংখ্যক পর্যটক এক সঙ্গে অবস্থান করতে পারেন। নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে রিসোর্ট কর্র্তৃপক্ষ সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা করে থাকে। এরপর হারিকেনের টিমটিমে আলোয় রাত্রি বাস। ঢাকা থেকে নিঝুম রিসোর্ট বুকিং করা যায়। অবকাশ পর্যটন লি:, আলহাজ সামসুদ্দিন ম্যানসন (নবম তলা), ১৭ নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা। ফোন: ৮৩৫৮৪৮৫, ৯৩৪২৩৫১, ৯৩৫৯২৩০, ০১৫৫২৩৭২২৬৯। এছাড়াও, নামার বাজার মসজিদ কর্তৃপক্ষের নির্মিত মসজিদ বোর্ডিংয়েও থাকার ব্যবস্থা আছে। মসজিদ বোর্ডিংয়ে দুটি সিঙ্গেল ও ছয়টি ডাবল রুম আছে। তবে কোন রুমে এটাচ্ট বাথ রুম নেই। এমনকি জেনারেটরের ব্যবস্থাও নেই। রুম ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম। এই বোর্ডিং বুকিং এর জন্য ফোন: ০১৭২৭৯৫৮৮৭৯।
সূর্যের আলো কমতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা ফিরতে থাকে ঘরে। ঘর মানে পাশের বনে। এমনই অল্প আলোয় বন থেকে দলে দলে বেরিয়ে আসে হরিণের দল। এখানে হরিণ শিকারও নিষেধ। তারপরও হরিণেরা সাহসী না। তাই দল বেঁধে হরিণের ঘাস খাওয়া এবং নদীর পানিতে সামান্য পা ডুবিয়ে হরিণ-হরিণীর জল পানের দৃশ্য আপনাকে উপভোগ করতে হবে একটু চুপি চুপি। আপনার উপস্থিতি টের পেলেই দে’ছুট। দৌড়ে পালাবে। চোখের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে ভয় পাওয়া হরিণের দল। তাদের লম্বা লম্বা পা আর গাছের শাখা প্রশাখার মতো শিং। নিরাশ হওয়ার কিছু নেই আবার আসবে, এই দলটি অথবা অন্য কোন নতুন দল নতুন চমক নিয়ে। ততক্ষণে সন্ধ্যা প্রায় হয় হয়। শিয়ালেরা জেগে উঠেছে স্বগৌরবে। দিগ্বিদিগ তাদের গলা ফাটানো চিৎকার। মনে হয় সমস্ত বনব্যাপী চলে সমবেত শিয়ালের ডাক প্রতিযোগিতা। কেউ কেউ প্রতিযোগিতায় ইস্তফা দিয়ে ইতিমধ্যে চলে এসেছে নদীর ধারে কাঁকড়া অথবা মাছের সন্ধানে। আগেই বলেছি, হরিণেরা আবার ফিরবে- নতুন চমক নিয়ে। এবার একটু অন্ধকারে অপনাকে উপভোগ করতে হবে সে দৃশ্য। আর এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটু শক্তিশালী টর্চ লাইট। লাইট সামনের দিকে তুলে ধরলেই দেখতে পাবেন হরিণের দল। ডানে বামে সব দিকে। ছুটে যাচ্ছে চোখে তীক্ষ্ন আলোর ঝিলিক নিয়ে। কেউ কেউ হয়তো আপনার টর্চের আলোকে তোয়াক্কা না করে তখনো নির্বিকার। দাঁড়িয়ে আছে আপনার দিকে তাকিয়ে অথবা পানি খাচ্ছে আপন মনে। বন বিভাগের সূত্র মতে, নিঝুম দ্বীপে হিংস্র কোন প্রাণীর বসবাস নেই তারপরও সন্ধ্যার একটু পরেই আপনাকে ফিরতে হবে নিঝুম রিসোর্টে, পেছনে ফেলে অস্তপ্রায় সূর্যের আলোয় শোভিত পাখিময় বিকাল এবং মায়া হরিণের সন্ধ্যা।
যারা মনপুরা গিয়ে থাকা খাওয়ার চিন্তা করছেন, তাদের জন্য
মনপুরা গিয়ে বাচ্চু চৌধুরীর বাংলোতে থাকা খাওয়া সহ খরচ দিলাম।
(ঢাকার সদরঘাট থেকে টিপু-৫ / পানামা নামে একটি লঞ্চ ছেড়ে যায় সন্ধে সাড়ে ৫ টার সময়। এটি মনপুরা হয়ে হাতিয়ে যায়। মনপুরা পৌছাবে সকাল ৭ টার সময়।
ভাড়া- ২০০ টাকা (ডেক), ৮০০/১৫০০ (কেবিন), ফোন : পানামা ০১৭৪০৯৫১৭২০। টিপুর নম্বর এখান থেকেই নিতে পারবেন কারন মালিক একজনই।
কোন কারনে এটা মিস করলে সাড়ে ছয়টার সময় ছেড়ে যাওয়া ভোলার চরফ্যাশনগামী টিপু-৪/ফারহান লঞ্চে উঠে পড়বেন। এতে উঠে তজুমুদ্দিন এ নেমে পড়বেন ভোর ৪ টার দিকে। তারপর ট্রলারে/লঞ্চে ১ ঘন্টার পথ মনপুরা যাবেন। বোনাস হবে তজুমুদ্দিন র্দশন)
+ জনপ্রতি প্রতিদিন ১৫০০/= টাকা হিসাবে যতদিন থাকতে চান, সেই খরচ।
বাচ্চু চৌধুরীর ম্যানেজার মুনাফের মোবাইল ০১৭১-৯৯৪০১১০ নাম্বারে আপনাদের বুকিং দিতে হবে।
সবাই ভালো থাকুন।
ঈদ মুবারক
আপনাদের মনপুরা ভ্রমন শুভ হউক।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:১৯