somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম মানুষকে বড় করে না, মানুষের কর্মই বড় করে মানুষকে

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সকাল ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যদি অন্য ধর্মের কেউ উদার হয়, বেশ আনন্দিত হই আমরা। আহলাদে উচ্ছসিত হয়ে তার গুনগান গাইতে গাইতে সে উদারতার সুযোগ গ্রহন করি। কিন্তু নিজের বেলায় লবডঙ্কা। নিজের অবস্থান ছেড়ে এক পা ও নড়তে চাই না। অর্থাৎ আমাদের নিজেদের যা করার নেই, তার প্রত্যাশা অন্যদের কাছে আমাদের রয়েছে। যদি তারা তা করেন, তাহলে আমরা খুশী, নাহলে বেজার হই।

জার্মানীতে একসময় ছিল হেলমুট কোলের রক্ষনশীল সরকার। তখন ফ্রান্সে ছিল মিতেরার সোস্যালিষ্টদের আধিপত্য। তখন দুদেশের রক্ষনশীল আর সোস্যালিষ্টদের মাঝে ভাল সম্পর্ক। জার্মানীর সত্যিকারের রাজনৈতিক তখন ফরাসীদের সাথেই। কোল থাকাকালীন সময়েই মিতেরা বিদায় নিলেন, ফ্রান্সেও রক্ষনশীল দল সরকার গঠন করলো। যদিও জার্মানী ও ফ্রান্সের দুটো রক্ষনশীল দলই ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টে একই জোটের ভেতরে, তারপরও দু'দেশের ভালো সম্পর্কে অনেকখানিই ভাটা পড়লো। তার কয়েক বছর পর জার্মানীতে এলো গেরহার্ড শ্রোডার এর সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক সরকার। তখন আবার দু'দেশের রাজনৈতিক ও বানিজ্যিক সম্পর্ক আগের মতোই ভাল। ইরাক প্রশ্নে এই দু'দেশ রাশিয়ার সাথে মিলে আমেরিকার বিপক্ষে নীতিগতভাবে হলেও, প্রতিপ দাঁড় করাতে পারলো।

এটা একটা উদাহরণ মাত্র। মোদ্দা কথা হচ্ছে, আমরা নিজেদের দিকে কেউ তাকাতে চাই না, বরং সবসময় অন্যদের কাছে প্রত্যাশার চোখ আমাদের। আমরা দেশের বাইরে এসে বৃটিশদের, জার্মানদের বা অন্য দেশগুলোতে অন্যদের রক্ষনশীল, জাতীয়তাবাদী, বিদেশীদের প্রতি শত্রুতাভাবাপন্ন চরিত্র দেখে সমালোচনায় মুখর হই, অথচ আমরা নিজেরা হলে কি করতাম, ভাবতে চাই না। আমেরিকায় দেখেছি, ভারতীয় ও আমাদের দেশীয়রা কালোদের প্রতি সাদাদের মতোই বর্ণবিদ্বেষী। জার্মানীতে দেখেছি, ইউনি ক্যাফেতে আমারই বাংলাদেশী বন্ধুরা কালোদেরকে কিভাবে এড়িয়ে চলে। পুর্ব ইউরোপে সমাজতন্ত্রের অবসানের পর যখন ওখানকার নাগরিকরাও জার্মানীতে আসা শুরু করলো, তখর আমাদের দেশী ভাইদের যেসব মন্তব্য শুনেছি, তাতে আমার ভেতরে এই বিশ্বাস তৈরী হয়েছে যে, আমরা বাংগালীরা যদি জার্মান হতাম, তাহলে প্রত্যেকেই নাজীই হতাম।

ধর্মের কথা বলতে গেলেও একই কথা বলতে হয়। আমরা নিজেদের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ মনে করি। অন্য ধর্মের মানুষকে খারাপ বলতে তাই এক মুহুর্তও দ্বিধা করি না। অন্য ধর্মের লোকদের কাছে আমাদের ধর্মান্ধদের প্রত্যক্ষ বা নিদেপক্ষে পরোক্ষ প্রত্যাশাও রয়েছে, যাতে তারা আমাদের ধর্মের শ্রেষ্ঠত্বকে মেনে নেন। একই দাবী অন্যধর্মাপন্থীদেরও আমাদের কাছে। যুগ যুগ ধরে এ দাবীর প্রচন্ডতায় পৃথিবীব্যাপী বিধংসী যুদ্ধ। আমরা ভুলে যাই, "ধর্ম মানুষকে বড় করে না, মানুষের কর্মই বড় করে মানুষকে"। হয়তো এ চাওয়ার পরিমান অনেক বেশী বিস্তারিত ও কিছু কিছু লোকের বোধ, বুদ্ধি ও শিক্ষার বাইরে হবার কারণেই তারা ধর্মকে আকড়ে ধরে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে প্রয়াসী হয়। এদেরকে পৃখিবীতে অরাজকতা, হত্যা ও যুদ্ধের কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করলে ভুল করা হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আমরা ইতিহাস থেকে শিখি না, ররং ইতিহাসকে আরো বেশী কলঙ্কিত করাতেই বেশী সচেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোকাকোলা সহ সকল কোমল পানীয় বর্জন করুন। তবে সেটা নিজের স্বাস্থ্যের জন্য, অন্য ব্যবসায়ীর মার্কেটিং কৌশলের শিকার হয়ে না।

লিখেছেন নতুন, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

মার্কেটিং এর ম্যাডাম একবার বলেছিলেন, "No publicity is bad publicity." প্রচারের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের মনে ব্র্যান্ডের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া। কিছুদিন পরে মানুষ ভালো কি মন্দ সেটা মনে রাখে না,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেইন্ট মার্টিন ও কোক ইস্যু

লিখেছেন নিবারণ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪

বিগত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে চর্চিত বিষয়, কোকের বয়কট ও গত দুই দিন ধরে সেইন্ট মার্টিন মায়ানমার দখল করে নেয়ার খবর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্রিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, মায়ানমার সেইন্ট মার্টিন দখল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে গান গাইলাম (সাময়িক)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৪:০৮

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে আমি আদর করে 'আই' ডাকি। আইকে দিয়ে অনেক কাজই করাতে হয়। এবারে, আমাদের ৫ ভাইদের নিয়ে একটি গান বুনেছি। আমরা ৫ ভাই অনেক দিন একসাথে হই না। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×