somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধানমন্ডি ৩২

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সেই ২০০০ সালের ১৫ই আগষ্টের তৎকালীন রাস্ট্রীয় শোক দিবসে একটি ভাষন দিয়েছিলাম শেখ মুজিবের নামে রংপুর ক্যান্টপাবলিক কলেজে। সেই ভাষন প্রিন্সিপাল লেঃ কর্নেল রাশেদ আহমেদ স্যারকে মুগ্ধ করেছিল, আমার অনেক শিক্ষক নিয়েছিল সেই ভাষন কপি করে। আগের রাতে রাত জেঁগে অনেক ভেবে লিখেছিলাম সেই ভাষন, এখনও তার কপি রেখেছি স্বযত্নে। এরপর যেদিন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাই, তা সম্ভবতঃ আমার সিনিয়র মাহমুদ ভাইয়ের সাথে ২০০৩/ ০৪ সালে, সেদিন ভীষন আবেগাপ্লুত হয়েছিলাম সেই কবরের সামনে। আর ৩২ এর বাড়িটিও আমাকে শ্রদ্ধায় টানত। বিএনপির সময়ে অনেক চেষ্টা করেও আমাকে কেউ ছাত্রদল করাতে পারেনি, বরং ছাত্রলীগের প্রতিই ছিল আমার টান ও সম্পর্ক। এর কারণ ছিল দুটি, শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধ। এই শেখ মুজিবই আমার কাছে দেবতার আসন থেকে পড়ে গেল যখন নিবিষ্ট মনে আরো পড়লাম তার ৭২ এর ১০ই জানুয়ারী থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কার্যকলাপ। না উনি মানুষ খারাপ ছিলেন না, ক্ষুদ্রমনা ছিলেন না। কিন্তু দেশ ও দেশের জনগণের চেয়ে উনার বেশি টান লক্ষ্য করা গেল পরিবার, আত্মীয়স্বজন আর তার দল আওয়ামী লীগের প্রতি। স্বজনপ্রীতি লক্ষ্য করা গেল প্রচুর। আর তা করতে গিয়ে উনি হারালেন যোগ্য, ব্যক্তিত্বস্বম্পন্ন আর শিক্ষিতদের। হ্যা, দেশের ভালর জন্য উনি অনেক চেষ্টা করেছেন, ভেবেছেন । কিন্তু উপরিউক্ত দোষ আর অদূরদর্শীতা তাকে ইতিহাসের মহানায়ক থেকে খলনায়ক বানিয়ে ছাড়ল তার নিজ দেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায়। এ অদূরদর্শিতার অকাট্য নিদর্শন হয়ে এতকাল দাড়িয়ে ছিল ৩২ নাম্বারের এই বাড়ি!

৩২ নাম্বারের এই বাড়িতে গিয়েছিলাম গত শুক্রবার। স্বচক্ষে এই ভগ্নদশা দেখে সত্যি বলতে ভাল লাগেনি। সত্যি বলতে এই বাড়ি, এই সংসার তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন বেগম মুজিব আর দশটা বাঙালি বধূর মত। এ বাড়ির সামনে দিয়ে যতবার গিয়েছি, বারবার কল্পনায় ভেসে উঠত ৭৫'র ১৫ আগষ্টের সেই কালরাত্রি।

৬০'র দশকের শেষার্ধে এই রাড়িটাই হয়ে উঠেছিল আমাদের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। এর বাড়ির মালিকের আর যাই হোক বুকে ছিল প্রচন্ড সাহস। যে কারণে সিরাজুল আলম খানরা তাকেই নেতারূপে গ্রহন করলেন তাদের নিউক্লিয়াসের লক্ষ্য পূরনে। পরিকল্পনায়, এলোমেলোতায়, গোঁজামিলে একসময় সে লক্ষ্যও পূরন হল। কিন্তু স্বাধীন বাংলার নৃপতি শেখ মুজিব জনগনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরনে ব্যর্থ হল। যে কারণে তাকে প্রথম মৃত্যুবরণ করতে হল সেনাবাহিনীর বিদ্রোহী অংশের হাতে। কিন্তু বেগম মুজিবের মমতায় গড়া এ বাড়িটি সেনাবাহিনী ও সেনাশাসন স্পর্শ ও ক্ষতি করেনি। তাকে ২য়বার হত্যা করল তার দুই কন্যা, মূলত শেখ হাসিনা। তাকে নিয়ে এতবেশি রাজনীতি করল, তাকে সুস্বাদু খাদ্যের মত নবপ্রজন্মকে এত বেশি গেলানো শুরু করল যে সত্যি বলতে হয়ে গেল বদহজম। অবিস্মরণীয় ৭ই মার্চের ভাষন তার মূর্খ নেতাকর্মী যত্রতত্র এত বেশি বাঁজাতে লাগল যে সে অমীয় বাণী হয়ে গেল ব্যঙ্গ ও বিরক্তির কারণ!
শেখ মুজিবকে কেন্দ্র করে তার কন্যা ও দল এত বেশি ব্যবসা করল যে সেই ব্যবসা হয়ে উঠল পাঁপের মহীরুহ, যার বিষবাস্পে জনগণের উঠল নাভিশ্বাস। যে পাপ শেখ মুজিবও করেনি, বরং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দ্রুত এদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করল; সেই তারই কন্যা ভারতের কাছে মনের দস্তখত দিয়ে চাইল আজীবন ক্ষমতায় থাকতে। কিন্তু পারল না। এদেশের শর্ট টেম্পার জনগন তা হতে দিল না, কাউকে কখনো দেয়ওনি। আর কন্যার সাথে সাথে পিতাকেও করল অপমান। তাই ৩২'র এই বাড়ি ভাঙ্গার দায় শেখ হাসিনার ঠিক তার পিতার মত অদূরদর্শিতায়। পিতা ও কন্যা ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে ভূলেই গিয়েছিল যে এই উশৃংখল জাতির নেতৃত্বের গুরুভার নেয়া প্রকারান্তরে নিজের মৃত্যুদন্ডেতেই স্বাক্ষর করা!!
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×