পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন এবং টেকসই প্রতিষ্ঠানের নাম হল পরিবার
বিয়ের মাধ্যমে এই পরিবার সম্প্রসারিত হয়, অথবা নতুন পরিবার গঠিত হয়।
এই পৃথিবীতে যদি কোন স্বর্গ থেকে থাকে তবে তার নাম - পরিবার।
পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে, যে কোন বিশ্বাসে, যে কোন ধর্মমতে একটা বিষয় কমন, আর তা হল বিয়ে।
এক জনপদের সাথে আরেক জনপদের হয়ত কোন ধরণের কৃষ্টিগত মিল নেই, ভাষাগত মিল নেই, খাদ্যাভ্যাসে মিল নেই, সভ্যতায় মিল নেই কিন্তু বিয়ে নিয়ে কোন অমিল নেই।
হয়ত বিয়ের পদ্ধতিগত বিভিন্নতা থাকতে পারে।
পরিবার: পৃথিবীর স্বর্গ।
কিন্তু এই স্বর্গ সবসময় স্বর্গ থাকে না। নরকেও পরিণত হতে পারে। পরিবার প্রথার বিপক্ষে কেউ নেই। তবে পরিবার কাঠামোর বিষয়ে অনেকেরই বিরোধ থাকতে পারে। একান্নবর্তী পরিবার, ছোট পরিবার।
পরিবার কাঠামো যাই হোক না কেন সেখানে স্বর্গ, নরক ডিপেন্ড করে।
একান্তবর্তী পরিবারে দেখা যায়, ভাইয়ে ভাইয়ে অমিল। বাবা ছেলে অমিল। ভাইয়ে বোনে অমিল। অধিকাংশ সময় এই অমিলগুলোর মূলে থাকে সম্পত্তি।
আবার বর্তমানে পরিবার কেন্দ্রিক যে সমস্যাটি সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরী করেছে তা হল স্বামী-স্ত্রীর অমিল।
নতুন পরিবার গঠনের সূত্রপাত করে এই স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক।
বিয়ের বহুল প্রচলিত প্রথার একটা প্রথা হল স্ত্রী স্বামীর বাড়ী থাকবে। এটা সমাজ নির্ধারিত। সেই প্রেক্ষিতে একটা ছেলে একটা মেয়েকে বিয়ে করে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে।
গড়ে বিশ বছর বাবার বাড়ীতে সময় কাটিয়ে বিয়ের পর সম্পূর্ণ নতুন একটা পরিবেশে মেয়েটিকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। এটা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ! এবং ঝুঁকিও বটে।
তবে যে পরিবারগুলোর বন্ধন অটুট থাকে, পরিবারে একটা শৃঙ্খলা থাকে এবং পারিবারিক একটা পরিবেশ থাকে, পরিবারের একে অন্যের প্রতি মান্যতা থাকে, পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকে সে রকম পরিবারে পারতপক্ষে ঝামেলা অনেক কম থাকে।
কারণ, নতুন একটা সম্পর্কে যেতে হলে এই পরিবারের মুরুব্বীরা সবাই মিলে অভিজ্ঞতার আলোকে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। স্বভাবতই এই সিদ্ধান্তগুলো খুবই ফলপ্রসু হয়।
বর্তমানে এই আমাদের মেগাসিটি ঢাকা, চট্টগ্রামে প্রতি মিনিটে একটা করে সম্পর্ক ভাঙ্গে। ডিভোর্স হয়।
কেন হয়? অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে অসম সম্পর্ক এটার একটা উল্লেখযোগ্য কারণ হতে পারে।
দেখা যায় বেশিরভাগ বিয়েই হয় অসাম্য। বিপরীত মুখি। এই বিপরীতমুখীতার কারণে দুই পরিবার খাপ খাইয়ে নিতে পারে না।
তাছাড়া সবার মধ্যেই একটা ধারণা পোক্ত থাকে, ‘আমি কম কিসে?’
এই ধারণা পরিবারের ছেলে, মেয়ে, বউ, পিতা, মাতা, ভাই, বোন, শ্বশুর, শ্বাশুরী ইত্যাদি সবার মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়।
এক কথায় মান্যতা, বিনয়, ছাড় দেয়ার মানসিকতা, পারষ্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ক্ষয়িষ্ণুতা ইত্যাদি একটা পরিবার ভাঙ্গনের জন্য সহায়ক হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৩০