২ বলে ৪ রান দরকার। ৫০তম ওভারের ৫ম বলে রাজ্জাক আউট। তখনি মনে মনে আমি প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেলাম না আমরা আর পারলাম না
ব্যবধান যেহেতু মাত্র ২ রানের তাই ম্যাচ শেষে হাজার ক্রিকেটীয় ফ্যাক্ট বের হয়ে গেল যার একটি আমাদের পক্ষে থাকলে হয়ত ম্যাচটি আমরাই জিততাম। ম্যান অব দি সিরিজ সাকিব এসেও বলে গেল, “ইসস!!!! আমি যদি আরও দুটি রান বেশি করতাম তাহলে ম্যাচ এর ফল আমাদের দিকেই আসত”। তবে একটি বিষয় তেমন একটা আলোচনায় আসেনি আমি সেটি একটু বলতে চাই।
ম্যাচ অফিসিয়ালদের সিদ্ধান্ত যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের বিপক্ষে যায় সেখানে গত ম্যাচে ৪টি ভুল সিদ্ধান্তের মধ্যে ৩ টি ইউনিস,আকমল এর আউট দেওয়া & নাজিম এর আউট না দেওয়া আমাদের পক্ষে ; আর হাফিজ এর আউট না দেওয়াটা আমাদের বিপক্ষে গেছে। এর কারন হিসেবে এই সিরিজে আমাদের ভাল খেলাকে আমি একটি কারন বলব। ভবিষ্যতে আমরা যদি এই ধারাবাহিক পারফর্মেন্স ধরে রাখতে পারি তাহলে এই ভুল সিদ্ধান্তের বলি হওয়া থেকে আমরা অনেকটাই মুক্ত থাকতে পারব। আর আম্পায়াররাও আমাদের সময় সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে ২য়বার ভাববেন বলে মনে করি।
এবার পুরো সিরিজ নিয়ে কিছু বলি।
তামিম ইকবাল তার সাথে যা হয়েছে তার জবাব ব্যাট দিয়েই দিয়েছেন। আর তা আরও পরিষ্কার করার জন্যই হয়ত ১ম ম্যাচ এ হাফ সেঞ্চুরি করার পর সে তার ব্যাট নির্দিষ্ট একদিকে উত্তলন করে তা বুঝিয়েও দিল। কিন্তু তার ২ ম্যাচ পড়ে ফাইনালে বিশেষ অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে সেই একই জিনিষ বুঝানোর ব্যাপারটা আমার কাছে মোটেও প্রফেশনাল মনে হয়নি। ফাইনাল এর মত একটি ম্যাচ এ নিজের সম্পূর্ণ মনোযোগ খেলার মধ্যেই থাকা উচিত ছিল। আর বিশেষ করে ফাইনাল এ যেখানে লাইট এফেক্ট এর ফলে পিচ কিন্তু ফ্রেশ না হয়ে আরও স্লো এবং লো ই হয়েছে। ফলে ক্রিজে গিয়েই একজনের পক্ষে হিট করা কষ্টকর ছিল। তাই ফাইনালে আমার মনে হয় তামিম এর আরেক টু বেশি সময় ক্রিজে থাকা উচিত ছিল।
দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই সিরিজটি আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে। একাদশে সুযোগ পাওয়া প্রতিটি খেলোয়াড়কে তার যোগ্যতা প্রমানের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদিও শাহাদাৎ এবং নাজিম প্রায় কোন ম্যাচ এই ভাল কোন পারফর্মেন্স দেখাতে পারেনি। কিন্তু তারপরও শেষ পর্যন্ত ফাইনাল পর্যন্ত যে তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তা আমি আমাদের নির্বাচক কমিটির ইতিবাচক সিদ্ধান্তই বলব। এখন পরবর্তী আমাদের কোন সিরিজ এ যদি তারা নাও থাকেন তাহলেও কারও উপর দোষ দেওয়া যাবেনা। আর একজন খেলোয়াড় এর দিক থেকেও জিনিষটি ইতিবাচক। সে সহজেই তখন এভাবে ভাবতে পারবে যে আমাকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আমি তা কাজে লাগাতে পারিনি। এখন দলে আমাকে আবার ফেরত আসতে হলে ঘরোয়া লীগে ভাল খেলে আসতে হবে। এখানে আমার নিজের একটা ক্ষোভ এর কথা বলতে চাই। গত ২-৩ বছরে আমার এমন একটি সিরিজ এর কথা মনে আসেনা যেখানে আশরাফুল সেই সংশ্লিষ্ট সিরিজ এর প্রতিটি ম্যাচ খেলেছে। ( যে প্রতি সিরিজ এর একটি ম্যাচ যে খেলার চান্স পায় এটা জেনে যে তুমি আজকে বের্থ মানে তুমি দল থেকে বাদ। এরকম অবস্থায় যে কারোপক্ষেই পারফরম করা কঠিন বলেই আমি মনে করি।)
আমাদের শেষ টেস্ট সিরিজেও তামিম এর দলে থাকা নিয়ে ব্লগ, ফেইসবুক এ আমাদের অনেকেরই আপত্তি ছিল। সে সময় আমাদের অনেকেই আমাদের নিকৃষ্টমানের গালগুলি তামিম এর উপর ব্যবহার করেছি। এমনকি এই সিরিজেও মোস্তফা কামাল এর মত অনেকেই ছিল যারা তামিম এর দল্ভুক্তি এর পক্ষে ছিল না। এশিয়া কাপের ১ম ম্যাচ শেষে কিছু ব্লগ আর নোট পড়ে তো মেজাজ খারাপ
সবশেষে এশিয়া কাপে আমরাই হলাম সবচেয়ে ধারাবাহিক দল। সেটা আমাদের পারফর্মেন্স, আমাদের বডি লেঙ্গুয়েজ, আমাদের দল নির্বাচন সব দিক থেকেই। ফাইনালে প্রতিপক্ষের চেয়ে ২ রান কম করা ছাড়া এই সিরিজ পুরোটাই আমাদের সাফল্যগাথাই বর্ণনা করবে। এই সিরিজ আমাদের দলের নির্বাচক, আমরা যারা সাধারন দর্শক, আমাদের খেলোয়াড় সকলের জন্যই একটি “টনিক ” সিরিজ। আমাদের ক্রিকেটের খারাপ অথবা ভাল যে কোন সময় এই সিরিজটি হবে আমাদের দর্শক এবং খেলোয়াড়দের অনুপ্রেরণার উৎস। এই সিরিজ আমাদের মনে করিয়ে দেবে আমরা আসলে কি করতে পারি। শুভ কামনা আমাদের দলের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১২:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



