রাত আর নির্জনতার একধরনের অতীত প্রীতি আছে। মনের সামান্য আশকারায় মুহুর্তে সে সময়কে পেছনে নিয়ে যায়। আচমকাই আমরা নিজেকে আবিষ্কার করি আমাদেরই যাপিত জীবনের কোন এক মুহূর্তে,কাটতে থাকি স্মৃতির জাবর। আর অদ্ভুত বিষয় হল বিষণ্ণতার বা মন খারাপের দিনে বেছে বেছে মন খারাপ করা অতীতগুলিই সামনে আসে।
অতীত বিষয়টা তার নামের মতই রুক্ষ, কঠিন এবং মমতাহীন। তাকে ভাবনার দৃশ্যপটে দেখা যায়, অনুভব করা যায় কিন্তু পরিবর্তন করা যায়না। তাকে ভাঙ্গা যায়না, অপরদিকে মোচড়ানোও যায় না; সে চন্দ্র সূর্যের মতই ধ্রুব - গলায় আটকে যাওয়া কাটার মতই সত্য।
মন খারাপ করা অতীত এর কঠোরতায় যখন দমবন্ধ অবস্থা হয় তখনই ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হয় অবুঝ মন। সে হাজির হয় হাজার চলক এর পসরা নিয়ে। সে একটির পর একটি চলকে বিভিন্ন মান প্রয়োগ করতে থাকে আমাদেরই অতি পরিচিত স্মৃতির সমীকরণ এর উপর, যেমন আমরা উচ্চতর গণিতের সরল অংকে শুদ্ধি পরীক্ষা চালাই। চিন্তার জগৎ তখন শাখা প্রশাখা মেলে; এটা হলে ওটা হত – ওটা হলে সেটা হত। উদ্দেশ্য একটাই – মনঃপুত ফলাফল এ পৌঁছান, যা কিছু ভুল ত্রুটি ছিল সব ঠিকঠাক করে নেওয়া। এই চেষ্টা মুহূর্তেই মুখ থুবড়ে পরে অতীত এর একগুঁয়েমির কাছে; সে যে অপরিবর্তনীয়,অনড়। হাজার চলক এর মাধ্যমে খুঁজতে যাওয়া সমীকরণ হঠাৎ যেন উত্তরহীন গোলক ধাঁধা রূপে দেখা দেয়। ভাবনার পা জোড়া ভারী হয়ে আসে, গতি কমে আসে তার; হার মেনে নেয় সে। তার রাজ্য ভেঙ্গে পরে। তখন সমস্ত মনোজগৎ পূর্ণ হয় হতাশায়,নৈরাশ্যে; আফসোসে।
হতাশার মুহূর্তে সান্ত্বনাই আশ্রয়। ওসব হতাশা, নৈরাশ্যকে পাশ কাটিয়ে তার চেয়ে বরং একটু সান্ত্বনা নেওয়া যাক আইয়ুব বাচ্চুর সাথে গলা মিলিয়ে –
“সুখেরই পৃথিবী, সুখেরই অভিনয়
যতই আড়ালে রাখ
আসলে কেউ সুখী নয়
.........”
আহ! কি ভালই না লাগছে শুনতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫৭