বর্তমান বিশ্বে এ পর্যন্ত যা কিছু মহত কাজ সম্পন্ন হয়েছে তার অধিকাংশ কৃতিত্ব হচ্ছে যৌবন শক্তির। স্মরণীয় বরণীয় সেই সব মহাপুরুষদের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে তার সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জিত সাফল্য যৌবনের এসেছে।
আমাদের বাংলা সাহিত্যের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজীনজরুল ইসলাম, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, সুকান্ত ভট্টাচার্য, বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্রমিত্র, জসিম উদ্দিন, সুফিয়া কামাল প্রমুখ কবি-সাহিত্যিকদের সৃষ্ট সম্ভারের শ্রেষ্ঠ ফসল যৌবন জীবনেই এসেছিল। রবীন্দ্র সাহিত্যের মহত্তম লেখাগুলি রচিত হয়েছিল তাঁর যৌবন কালে। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে নজরুল বাকশক্তি হারিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাঁর সম্পূর্ন সৃজনশীল সৃষ্টিকাল ভরা যৌবনে। ছন্দের যাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ৪২ বছর বয়ছে আর সুকান্ত ভট্টাচার্য ২২ বছর বয়সে মারা যান। সুতরাং তাদের যৌবনকালে রচিত সাহিত্য সমৃদ্ধ করেছে আমাদের বাংলা সাহিত্য।
সকল প্রকার সংকীর্ণতা, জীর্ণতা, আবিলতা, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে যৌবন শক্তি বিভিন্ন সময়ে সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। দু’শো বছরের নিষ্ঠুর শাসন, সেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে ফাঁসীর মঞ্চে যাঁরা ঝাপিয়ে পরেছিলেন তাঁদের অধিকাংশ ছিল ছাত্র-যুব সমাজ। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের বুকে মায়ের ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে যে কজন বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীতে এবং সৈরাচার বিরোধী আন্দলনের অগ্রসেনানী সবাই কিন্তু যুব সমাজের প্রতিনিধি।
সেই সব শহীদের সেই সব যৌবন উদ্দিপ্ত যুবকদের আত্নত্যাগ কি বিফলে গেছে? অবশ্যই না। জাতি শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মৃতির প্রতি অর্ঘ দিয়ে স্মরণ করে।
যৌবনের জয়গানে আমরা যেমন বিভোর, তেমনি বর্তমনে শংকিতো বটে। আজকের বিশ্বজুরে যৌবন যেন ধুকে ধুকে মরছে। এখনকার যৌবন যেন বিকারগ্রস্থ, বিপদক্লিষ্ট তারুণ্যের বিপদগামী স্রোত এখন প্রবল আকার ধারন করেছে। সময় এসেছে এখনই এই পথ রুদ্ধ করার। সাম্প্রতিক সময়ে খুন , সন্ত্রাস, ধর্ষণ, ইভটিজিং, চাঁদাবাজী, ছিনতাই, চুরী-ডাকাতি, সর্বনাশা ড্রাগ নেশায় আসক্তি হয়ে অতলান্ত চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের আজকের যুবসমাজ।
এখন মনে হয় যৌবনের গৌরব যেন রুপকথার গল্প। মাদক দ্রব্যের বিষাক্ত ছোবলের বিষে নীল হয়ে আসছে পুরো যুব সমাজ। শহরের অলি-গলি থেকে গ্রামগঞ্জের হাটবাজারেও পৌছে গেছে সেই সব নেশাদ্রব্য মদ, গাঁজা, হেরইন, ফেন্সিডিল, আফিম, সরস, মারিজুয়ানা ইত্যাদি। সমাজের প্রায় পরিবারের যুবকেরা এসব নেহায় আসক্ত। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য সকারী, বেসরকারী, সামাজিক-সংস্কৃতিক সংগঠন সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাধঁন ব্লগ স্বপ্ন দেখে যৌবনের সেই গৌরবজ্জল সময় ফিরে পাওয়া। তাই বাধঁন ব্লগের আহবান
“সুন্দর, মহত্ত মানুষ চাই। আলোকিত মানুষ, আলোকিত জীবন যৌবন………”

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



