somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘোড়ার আন্ডার অসাম্প্রদায়িক দেশ ইনডিয়া

১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অযোধ্যার সঙ্ঘাত পরবর্তী ভূমি মালিকানা নিয়ে ইনডিয়ার সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে, সে রায় নিয়ে আমার কোন আক্ষেপ নাই। রায় এমনই হওয়ার কথা ছিল। তাই হইছে। বাবরী মসজিদ প্রায় ৫শ বছরের পুরাকীর্তি। এটা ভাঙ্গা নিয়া ব্যাপাক দাঙ্গা হইছিলো... এটা আমার মনে আছে। আমার তখন কৈশোর শুরু। হাজার দুই মানুষ কেবল মারা গেছেন ইনডিয়ায়। তার আঁচ এ বঙ্গেও লেগেছিল। ১৯৯২ সালের সেই সব উত্তাল বিক্ষুব্ধ দিনে ৩০ টির মত মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। যেটি নিশ্চিতভাবে অন্যায্য এবং অন্যায়।

বাবরী মসজিদ ঘিরে দাঙ্গা উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপ্রে একটা বড় আঘাত ছিল। সে আঘাতের ক্ষত সারতে বেশ সময় নিছে। আমরা চাইনা ধর্ম, ধর্মীয় স্থান নিয়ে এরকম তর্ক হোক... যে মানুষের জন্য ধর্ম এবং তার প্রতিপালক সেই ধর্মের নামে হানাহানি করে মানুষ মরে যাক। সেটি অনভিপ্রেত। অপ্রত্যাশিত। তবুও ধর্ম এবং রাজনীতির মিশেলে উপমহাদেশে এ দাঙ্গা ফিরে ফিরে আসে। এ দাঙ্গা কারো কারো জন্য ফায়দা দেয়, হয়ত। তবে এর অবসান জরুরী এবং হতে হবে।

নতুন প্রজন্মকে আরো উদারভাবে ভাবতে হবে। সব মানুষ আদমের সন্তান। মানুষের মানুষের মতভিন্নতা থাকবে... ধর্মে ধর্মে ভিন্ন বক্তব্য থাকবে--- দিন শেষে আমরা সবাই একজনের পদতলে লুটিয়ে পড়ি। তার কৃপা প্রার্থনা করি। তাঁর সন্তুষ্টির নামে দাঙ্গা অগ্রহণযোগ্য। তাই আমাদের তাঁর উপর আস্থা রেখে ভ্রাতৃবোধ বজায় রেখে বিশ্বকে সুশোভামণ্ডিত করতে হবে।

অযোধ্যা'র রায় নিয়ে এএফপি'র খবর পড়ছিলাম... রায় সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট ইনডিয়ার বয়ানটা... অত্যন্ত নড়বড়ে । যদি রিপোর্টটি সত্য হয়। এমন কি বিবিসির রিপোর্ট যেটি অমিতাভ করেছেন... সেখানেও।

বিবিসি বলছে...''এক হাজার পঁয়তাল্লিশ পাতার ওই রায়ের প্রায় শেষের দিকে আদালত বলেছে: তাদের সিদ্ধান্তের অন্যতম মূল ভিত্তি ছিল পুরাতাত্বিক প্রমাণসমূহ।

রায়ে বলা হয়, যদিও পুরাতাত্বিক জরিপ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী মন্দিরের মতো একটি কাঠামো পাওয়া গেছে, তবে সেই রিপোর্টে এটা স্পষ্ট হয় নি যে ওই পুরনো কাঠামোটি কীভাবে ধ্বংস হয়েছিল।

তা ছাড়া 'ওই কাঠামোটি ভেঙেই মসজিদ তৈরী হয়েছিল কি না', সেই প্রমাণও পাওয়া যায় নি। রিপোর্টটিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ 'টাইম গ্যাপ' রয়েছে বলেও আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়।

আদালত বলেছে, মাটির নীচে থাকা পুরনো কাঠামোটি যদি দ্বাদশ শতাব্দীর হয়, তাহলে ষোড়শ শতাব্দীতে মসজিদ তৈরির সময়ের সঙ্গে চারশো বছরের একটা ফারাক থাকছে।

ওই চারশো বছরে কী হয়েছিল, তা জানা যায় না রিপোর্ট থেকে।''


বিবিসির পুরো রিপোর্টটি পড়তে ক্লিক করতে পারেন- Click This Link

ইনডিয়াকে আমরা সাধারণত মনে করি গণতন্ত্রের বিশাল ঝাণ্ডা বহন করে বিশ্ব ব্রক্ষ্মাণ্ড প্রদক্ষিণ করছে... আদতে সেটা ঘোড়ার আন্ডা। আর ইনডিয়ার আদালত অত্যন্ত ম্যাচিউর বলে আমরা শুনে আসছি। তারাও যে 'সম্ভাবনা' এবং 'ইঙ্গিত' নির্ভর রায়ে মনযোগ দিয়েছে সেটি বিবিসি'র রিপোর্ট যদি সত্য হয় তা থেকে প্রমাণিত।

ইনডিয়ার আরকলজিক্যাল টুরিজমের অলমোস্ট ৮০ শতাংশ দাঁড়ায়া আছে মুসলিমদের বানানো স্থাপত্যকীর্তির উপ্রে। সে দেশে মুসলিম আরকলজি ভেঙ্গে চুরমার-উৎসবকে উস্কে দেওয়া হয়- সফট ওয়ার্ড 'বেআইনি' বলে। কী অদ্ভূত। তারপরেও ইনডিয়া দাবি করে তারা ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের সবচে বড় হেডম।

আদতে এ উপমহাদেশে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক কোন দেশের উদাহরণ টানতে হলে সেটি হবে বাংলাদেশ। এবং হলফ করে বলছি আমাদের মত উদার চিত্ত ইনডিয়ানদের কিছু ব্যতিক্রম বাদে কারো নেই।

বাংলাদেশে যেটা জমাত ইসলাম ইনডিয়ায় সেটা বিজেপি।

ইনডিয়া, মোডি এ সব নিয়ে কথা বলা খুব কঠিন। কারণ তাদের চ্যালা চামুণ্ডা এবং শকুনরা সবখানে দন্ত নখর মেলে রেখেছে। তারপরেও সত্যটা তো বলতে হবে। সত্য শুনতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×