somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টুকরো গল্প: তবুও ভালোবাসে মানুষ

২২ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
নিজের সঙ্গে অনেক লড়ইয়ের পর, ক্লান্ত অনিকেত-আয়নায় মুখটা দেখে। চিনতে পারেনা,তার ছায়াছবি। আচ্ছা, মানুষ এত স্বার্থপর হয়? কেমনে!... নিজের কপালটা আলতো করে ছুঁয়ে দেখে; পাড়ার কোন নতুন মা হওয়া নারীর সন্তানকে কোন আত্মীয় যেভাবে ছোঁয়-- ঠিক সে রকম করে । নিজের মধ্যে ফিরে আসতে বেশ সময় লাগে... কানে বাজে সমুদ্রের গর্জন। ছেড়াদ্বীপের জলোৎসব। আহা! সমুদ্র--বইছো! কষ্টে, নাকি সুখে--তাও জানার সুযোগ নেই। বয়েই যাচ্ছে, কারও সুখ আর কারও দুঃখের গল্প নিয়ে।


২.
মাস কয়েক আগের একরাত। মেয়েটা যখন অনিকেতকে ডাকে, নিজের সব সীমাবদ্ধতা ভুলে-- হাত বাড়ায়, সে। নদী ভাঙনের হাহাকার থেকে মুক্তির জন্য-- সব পেছনে রেখে শহরের বসতিতে ছোটা পরিবার প্রধানের মত, তেমনি- সেও। কী অদ্ভূত। অথচ এটা তার স্বভাবের সঙ্গে একেবারেই যায় না। তবুও, নিজের সঙ্গে কিছুটা কমপ্রোমাইজ করে--- নতুন আলো দেখে চোখের সামনে... সেই আলোয় নিজেকে বিশুদ্ধ করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে-- চল্লিশ পেরোনো পুরুষ অনিতেক!

৩.
বহু নারী সঙ্গ উপভোগের পর, তার যখন শেষটা এমন যে-- নারী সঙ্গ মানে দু-চারদিনের কথা, ডেট অতঃপর-- শরীর-কাব্য। এই মেয়ের সঙ্গে তার, তেমন কিছুই হয়নি। মাস দু'য়েকের মত সম্পর্ক হবে, টেনে টুনে। কিন্তু এর মধ্যে, সে একটা স্বর্গীয় অনুভূতি পায়। এ অন্য রকম --বলে কয়ে-- ব্যাখ্যা করে বোঝানো অসম্ভব। সহজ করে বললে, যার ছোঁয়ায় বদলে যায় তার জীবন। দখিনা বাতাসে যেমন রোগ বালাই মাড়িয়ে মানুষের শরীরে সতেজতা ফিরে, তেমনই। বসন্ত বাতাস... মনের দুয়ারে জেগে ওঠা সুর, ফুল সৗরভ-- আচমকা ডাকা কোকিলের কুহুতান। অথবা, শেষ বিকালে শিষ দিতে দিতে যে কিশোর নিজের দিকে চেয়ে মুগ্ধ হয়, নিজের সুরে। সে রকম কিছু্ও হতে পারে।

৪.
বয়সের লম্বা তফাত---সমাজের ভ্রুকূটি; অনাদর -- অবহেলা-- সবই তার ফিরিয়ে দেয়ার যোগ্যতা আছে, সম্ভব হলে তাই করতো .. অনিকেত। কিন্তু আচমকা একটা শব্দ কাব্য তার কান ভারি করে তোলে। প্রাণপণে দু-হাতে সে শব্দ সরাতে গিয়ে, কেবলই তার মনে হতে থাকে--- অনিকেত! তুমি আর কতটা নীচে নামবে। নিজের জন্য। মানুষ-- স্বার্থপর হয়। তাই বলে এতটা!

৫.
...নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর পুরুষ কীভাবে যেন তা ফেরত পায়। এর আগে, আরও দুয়েকবার নিজের স্বার্থের কথা বুঝতে পেরেছিল...তবুও ফিরতে পারেনি। তার কেবলই মনে হচ্ছিলো, জীবনে ভালো থাকার, ভালো হয়ে যাওয়ার সুযোগটা হাতছাড়া হবে! এবার, সে নিজেকে সামলে নিলো। ভালো থাকার ওষুধ তার আগে থেকেই আছে... সতরাং আরেকজনের জীবনে কষ্ট ডেকে, আরেকটা ছেলের স্বপ্ন পুড়ে কেন তাকে পেতে হবে কাউকে! নিজেকে খুব করে বুঝিয়ে ফেরত আনার চেষ্টায় অনিতেক।

৬.
লম্বা একটা নি:শ্বাস নেয়, অনিকেত। কষ্টের না। দম আকটানোর নি:শ্বাসও, না। নিজেকে রিফ্রেশ করার-- নি:শ্বাস। সুন্দরবনের জঙ্গলে গেলে, সে- এ রকম প্রাণভরে নি:শ্বাস নেয়। ঠিক, এ রকমই। যেন, কচিখালীতে বাঘের ডেরায়, আপন মনে সে তার শুদ্ধ জীবনে ফেরার প্রচণ্ড আনন্দ উপভোগ করছে। পেছনে পড়ে থাকে মেয়েটার মুখ, কিছু দিনের স্মৃতি আর তার জন্য তুলে আনা দশক খানেকের পুরনো প্রেমিকের সমুদ্র-কাব্য-ছবি। কী অদ্ভূত! মানুষ তবুও ভালোবাসে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×