মনটা বড়ই বিষন্ন হয়ে যায়...যতবার এই গান শুনি...ততবারই সারাটা বুক শুধু হু হু করতে থাকে। সেদিন ক্লোজআপ প্রতিযোগিতা দেখছিলাম...এই গানটি গাইছিল (বা গাইতে চেস্টা করছিল বলা চলে) একজন। মুহুর্তে চলে গেলাম ছোটবেলায় – মনে পড়ল বিটিভি তখন অপুর্ব সব মুক্তিযুদ্ধের ‘ইয়ে’ (হারামজাদা আমিনীর ভাষায়) সংক্রান্ত অনুস্ঠানমালা দেখাত...একটা নাটক হয়েছিল, নাম খুব সম্ভবত ‘আলোর পাখিরা’ – সেখানে এক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা, যিনি চোখে দেখতেন না, তার নাতি-নাতনিদের কাছে যুদ্ধের গল্প করতেন আর ঘরের কোন দরজা-জানালা লাগাতে দিতেন না বিজয় দিবসে...তার খোকা ফিরবে সে আসায়......জানালা দিয়ে তাকে ডাকবে – ‘মাগো...আর ভয় নেই...আমরা মুক্ত'। বড়ই কস্টের অনুভুতি হত....আমার পরিবারের কেও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়নি...তবুও ওই অন্ধ, প্রচন্ড আশাবাদী বৃ্দ্ধাকে মনে হত আমার নিজের দাদী অথবা নানী......আমার এই ছোটমানুষী মন তীব্র আশায় আশায় থাকত...ওই বৃ্দ্ধার ছেল যেন ফেরে নাটকের শেষে......আজও হয় যখন এই গান শুনি। বিজয় দিবসের নাটক অনেক হয়েছে...নাটকের ধারাও পাল্টেছে অনেক.. আর...আমিও এখন আর ছোট নই। তবুও ওইসব ‘আগের দিনের নাটক’ এখনও আমার কাছে দামি মনে হয়। মফস্বলের অস্পস্ট সাদা-কালো টিভিতে দেখা ওই অশীতিপর বৃ্দ্ধাকে আমি ভুলতে পারব না।
‘চোখ থেকে মুছে ফেল অশ্রুটুকু...এমন খুশির দিনে কাঁদতে নেই...কেও যেন ভুল করে গেও নাকো মন ভাংগা গান...সব কটা জানালা খুলে দাও না...’ আহা কি অসাধারন সুর...কি রক্তের দামে লেখা এই অসামান্য লিরিক........আমিও ঠিক জানি...ওরা সত্যিই আসবে...আর আমরা বিজয়ের গান গাইতেই থাকব...দেখি কে রুখে!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




