
টাইটেলটা আমাদের দেশের জন্য চরম আত্মঘাতী মূলক। আমরা অনেকেই বুঝি না। ঐ লেখাতে লেখক অনেক কিছুর সাথে একটা কথা লিখেছেনঃ
".............চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা না বাড়ালে বেকারের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। ফলে উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবে হতাশ হয়ে পড়বেন। কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকলে নানা ধরনের অরাজকতার সৃষ্টি হতে পারে। বিপথগামী হতে পারেন অনেকে।"
এ অংশটা পড়ে আমি যার পরনাই টাইপের অবাক হয়েছি। এ্যাতো শ্যালো লেখা কিভাবে প্রথম আলোর মত একটা পত্রিকায় ছাপা হয় সেটা চিন্তার বিষয়। যেখানে বেকারত্বের মত বড় সমস্যা নিয়ে কথা হচ্ছে; সেখানে এত তলানী ছাড়া লেখা আমাদের জন্য বিপদজনক।
উনি লেখার একটা অংশে দেখিয়েছেন যে প্রতি বছর ২০লাখ লোক কর্মবাজারে আসে, ৪লাখ এর থেকে চাকরী পায় না; বাকি ১৬ লাখ পায়।
ধরে নেন যে গত ১০ বছরেই শুধু নতুন বেকার প্রতি বছর ৪লাখ করে বেড়ে ৪০লাখ হয়েছে।
আমাদের দেশে বেকারত্ব বাড়ার অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে সরকারী চাকরীর জন্য অপেক্ষা। বিসিএস ও অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে উচ্চ শিক্ষিতের বড় একটা অংশ অন্য কোন চাকরীতে ঢুকে না, বরং অপেক্ষায় থাকে সরকারী চাকরীর।
আপনার কি মনে হয় যে ৪লাখ লোকের সবাই আগামী দুই বছর বেকার বসে থাকবে? কারণ যে ছেলে আজকে ৩০ পার করলো, সে কিন্তু ভালো করেই জানে যে তার আর সরকারী চাকরী আর পাবে না; সুতরাং সে সরকারী চাকরীর আশা ছেড়ে কোন না কোন একটা কিছুতে জয়েন করবে।
কিন্তু আজকে যদি সরকার ঘোষণা করে যে চাকরীতে প্রবেসের বয়স ৩৫ করা হয়েছে; ওমনি গত ৫ বছরে যে ছেলে-পেলেরা জানতো যে আর সরকারী চাকরী হবে না; তারা হামলে পড়বে! তারা আবার বেকার হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বেশী হবার কারণে একটা বড় এডভান্টেজ আমরা পাই; সেটা হলো, মোটা চাল আর কাপড় নিয়ে কারও চিন্তা করা লাগার কথা না।
শীতকাল চলছে, ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় দেখেন মহিলারা ও পুরুষেরা চুলা নিয়ে বসে গেছে, ভাপা পিঠা বানাচ্ছে; চলছে দেদারসে। গার্মেন্টেসের সামনে ভ্যানে করে ৫/১০/২০/২৫ টাকায় বিক্রি হয় প্লাস্টিকের জিনিষ পত্র; গার্মেন্ট ছুটি হলে ভীড় সামলানো কঠিন।
মফস্বল শহরে বিকালে পাপড় ভাজি করে যে, তার ব্যবসাও একদম খারাপ না। মিরপুরে এক ঝালমুড়ি ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সেই ২০১৫ সালে যে তার ইনকাম মাসে ১৫-২০ হাজার হয় কি না। সে মুখ গম্ভীর করে বলেছিলো তার ইনকাম ৩০এর উপরে!
আমরা প্রতিবছর সার্টিফিকেটধারী উচ্চ শিক্ষিত পাচ্ছি। কিন্তু আসলে শিক্ষিত কয়জনকে পাচ্ছি? শিক্ষার একটা বড় কাজ হচ্ছে মানুষের মন থেকে অহঙ্কার দূর করবে; কিন্তু উচ্চ শিক্ষিতরা কেন যেন "আমি কত শিক্ষিত রে" অহঙ্কারে ভুগছে; তারা ছোট-খাট কাজ করতে পারছে না। কেন?
সরকারী চাকরীতে প্রবেশের বয়স ১৯৭১ এর পর ২৫ থেকে ২৭ করা হয়। ১৯৯০ এ ২৭ থেকে ৩০ করা হয়। আমার হিসাবে বাঁশের শুরু মোটামুটি ১৯৯০ তেই! প্রতি বছর বিসিএস এর পড়া পড়তে হবে এই চিন্তায় যে পরিমান উচ্চ শিক্ষিত বেকার আমরা পাচ্ছি, তার ক্ষতি আমরা কোনদিন কি পূরণ করতে পারবো?
আমাদের পিছনে ফেরা দরকার, ২৭ কিংবা ২৫ হওয়া দরকার। সেই সাথে লেখা পড়া কিভাবে ২৩/২৪ বছরে শেষ না হয়ে ১৭/১৮ বছরে শেষ করা যায় সেটা চিন্তা করা দরকার।
আমাদের সবার অনার্স মাস্টার্সের দরকার নাই। সারা বিশ্ব উচ্চ বিদ্যালয় এর সার্টিফিকেট দিয়ে সব কিছু চালাতে পারলেও আমরা কেন পারছি না?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:০৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




