somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হায়দারাবাদের ডায়েরী

১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হায়দারাবাদের ডায়েরী….
জার্নি টু হায়দারাবাদ (১১/০৮/২০১৪)
অবশেষে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিপ্লোমা কোর্স করার জন্য ইন্ডিয়ার হায়দারাবাদ যাচ্ছি… এক বছরের জন্য। অনেক অনিশ্চয়তা ছিল, সকল অনিশ্চয়তাকে পাশে ফেলে শেষ পর্যন্ত রওয়ানা হচ্ছি হায়দারাবাদের উদ্দেশ্যে। আজ রাত ৯:৪০ এ ফ্লাইট। এয়ার ইন্ডিয়ায়। প্রথমে কোলকাতা এয়ারপোর্ট। রাতে কোলকাতা থাকতে হবে। পরের দিন কোলকাতা এয়ারপোর্ট থেকে হায়দারাবাদ। দুপুর ১:৩৫ এয়ার ইন্ডিয়ার ডমেস্টিক ফ্লাইট। ১৮০০০ টাকায় ক্রয় করা এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিটে সেরকমই উল্লেখ আছে।
গতকালকে শ্রীপুর থেকে ঢাকা এসেছি। আমি,নাফিউল ও হাস্না।পৌছতে-পৌছতে সন্ধা হয়ে গেল। এসেই শুনলাম আখিকে হসপিটালে নিতে হবে। ওর বেবি হওয়ার জন্য জরুরিভাবে সিজার করতে হবে। ওকে হসপিটালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে ব্যস্ত হয়ে গেলাম হায়দারাবাদ যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য।প্রস্তুতি নেওয়া সেরে আবার দৌড়ালাম হসপিটালে।শুভ সংবাদ।আবার আমি মামা হয়েছি।আখির ছেলে হয়েছে।সবাই খুব খুশি। আব্বা এসেছে ফরিদপুর থেকে….
এয়ারপোর্টে আমাকে বিদায় দেওয়ার জন্য আমার সাথে আসল রুইচ,মিলন,হাস্না ও আমার প্রাণপ্রিয় নাফিউল।ওদের সবাইকে রেখে ঢুকে গেলাম বোডিং পাসের জন্য।বোডিং পাস করে ওদের কাছে ফিরে এলাম বিদায় নেওয়ার জন্য। নাফিউল কোনভাবেই আমাকে ছাড়তে রাজি হচ্ছিল না।সে আমার সাথে বিমানে চড়বে।বারবার সেকথাই বলছিল। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে-শুনিয়ে ওদের নিকট থেকে বিদায় নিলাম।বিদায় নিয়ে ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাড়ালাম। অফিসিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডার হওয়ার জন্য ইমিগ্রেশন ফরমালাটিস খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে গেল…
এয়ার উন্ডিয়ার ফ্লাইট নং০২২৯ এ ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।যাত্রী কম থাকার কারনে বিশ মিনিট আগেই প্লেন ছেড়ে দিল।ইচ্ছামতো জানালার পাশের একটি সিটে বসেছি।জীবনে প্রথমবারের মতো প্লেনে উঠেছি।একটা অন্যরকম অনুভুতি হচ্ছিল।ঘোষনা আসল সিট বেল্ট বাধার জন্য।সিটবেল্ট বাধলাম।রানওয়েতে এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেন দৌড়তে শুরু করল।একসময় উড়তে শুরু করল …. আমি জানালা দিয়ে দেখছিলাম ইট-সিমেন্টের ঢাকা শহরকে….
কোলকাতা (১১/০৮/২০১৪)
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান উড়ছে।আমি জানালার পাশের একটি সিটে বসে আছি।জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি।আকাশে জ্যোস্নার আলো।ভরাট চাঁদ যেন একদম বিমানের পাশে…।বিমান থেকে বেরিয়ে হাত বাড়ালেই ছোয়া যাবে।এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান মাঠ,ঘাট,পথ,প্রান্তর,শহর,গ্রাম সব পেছনে ফেলে উড়ে যাচ্ছিল।মাঝে-মাঝে বিভিন্ন শহরের আলোকিত বিল্ডিং দেখা যাচ্ছিল…
এক ঘন্টার মধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান কোলকাতায় পৌছে গেল।বিমান থেকে নামলাম।কোলকাতা এয়ারপোর্টের সকল ফরমালিটিজ শেষ করলাম।লাগেজ বুঝে নিলাম। এখন কোলকাতা এয়ারপোর্টের আশেপাশে কোন একটা হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। জীবনে প্রথম বারের মতো দেশের বাইরে…।নানারকম শংকা কাজ করছে…। বেড়িয়ে এলাম এয়ারপোর্ট থেকে। একটি ট্যাক্সি নিলাম। ট্যাক্সি ওয়ালাকে বলে এয়ারপোর্টের তিন কিলোমিটারের মধ্যে একটি হোটেল ম্যানেজ করে ফেললাম। হোটেল রিজিন্সি। একরাতের ভাড়া ১০০০ রুপি।ট্যাক্সিওয়ালার ভাড়া পরিশোধ করে রুমে ঢুকে পড়লাম।নন এসি রুম।একদম খারাপ না । এটাচ বাদ, টেলিভিশন, ফোন আছে। বেশ গরম পড়েছে। ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিলাম।রাতের খাবার অর্ডার দিলাম।সবজি ডাল ভাত ২২০ রুপি।
১১:৩০ বেজে গেছে।রাতের খাবার সেরে ফেললাম।প্রথমবারের মতো দেশের বাইরের কোন হোটেলের খাবার খেলাম।খেতে হবে তাই।তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া দরকার।সকালে আবার কোলকাতা এয়ারপোর্টে দৌড়তে হবে।সেখান থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার ডমেস্টিক ফ্লাইটে হায়দারাবাদ।
ঘুমানোর চেষ্টা করছি। ঘুম আসছে না।লাইট বন্ধ করলাম। প্রথমবার পরিবার পরিজন ছেড়ে এতো দূরে দেশের বাইরে পা রেখেছি। নাফিউলের কথা মনে পড়ল।বুকের মধ্যে কেমন একটা চাপা কষ্ট শুরু হয়েছে।মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে যাবে। বিছানা থেকে উঠে পরলাম। লাইট জালালাম।টেলিভিশন ছেড়ে দিলাম।নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। অবশেষে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম….
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×