somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হায়দারাবাদের ডায়েরী….

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হায়দারাবাদের ডায়েরী….
নবীনবরন উৎসব(১৪/০৮/২০১৪)
এনআইআরডি ক্যাম্পাসে পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিপ্লমা ইন রুরাল ডেভলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর উপরে একই সাথে তিনটা ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ৬ষ্ঠ ব্যাচ, ৭ম ব্যাচ ও ৮ম ব্যাচ। আমি ৮ম ব্যাচের একজন স্টুডেন্ট। ৬ষ্ঠ ব্যাচ আমরা জয়েন করার কয়েকদিন আগে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছে। ৭ম ব্যাচের লেখাপড়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ইন্টার্ণশিপ করতে সমগ্র ভারতের নাম করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলে যাবে…
৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এমটেকের শিক্ষার্থীদের বরন করার জন্য বিকেলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এনআইআরডি ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের তুলনা হয় না…. মনে হচ্ছিল কয়েক ঘন্টার জন্য সমগ্র ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশের সংস্কৃতি এক সাথে মিলে-মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল…
আসনের প্রথম দিকের সারিতে বসেছে এনআইআরডি’র শিক্ষক সহ অন্যান্য স্টাফরা। তারপরে বসেছে ৭ম ব্যাচ, ৮ম ব্যাচ ও এম টেকের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করল ৭ম ব্যাচের দুই বড় ভাই। সাবলীল ইংরেজীতে কি অসাধারন উপস্থাপনা…
বলে রাখা দরকার। এই কোর্সে ভারতীয়দের জন্য মোট ৫০ টি আসন এবং অন্যান্য বিভিন্ন দেশ থেকে আশা ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ১০টি আসন বরাদ্দ। সব মিলিয়ে মোট ৬০ টি আসন। সমগ্র ভারতের বিভিন্ন স্টেট থেকে স্টুডেন্ট এসেছে.. আরও বলে রাখা দরকার ভারতে এই কোর্সটি অসম্ভব ডিমান্ডেবল। কোর্স সফলভাবে শেষ করা মানেই নিশ্চিত ভালো চাকরি। গুজরাট, মহারাষ্ট. নাগাল্যান্ড, হিমাচল, আসাম, পশ্চিম বঙ্গ, কেরালা, তেলেঙ্গনা, অন্ধ্রপদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ সহ আরও বিভিন্ন প্রদেশের শিক্ষার্থী এই কোর্সে ভর্তি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক-তৃতিয়াংশ আবার মেয়ে শিক্ষার্থী। ১৪০০-১৫০০ কি:মি: দূর থেকে এক বছরের জন্য চলে এসেছে লেখাপড়া করার জন্য্।
ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ১০টি আসন বরাদ্দ থাকলেও ভিসা ও অন্যান্য জটিলতার কারনে আসতে পেরেছে মাত্র ৬ জন। ৬ জনের মধ্যে ফিজি থেকে এসেছে একটি মেয়ে নাম মেলেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছে একটি মেয়ে, নাম লুকি, ঘানা থেকে এসেছ মি: জন, শ্রীলংকা থেকে এসেছে মি: তিলকারত্নে, ভিয়েতনাম থেকে মি: কুয়ান এবং বাংলাদেশ থেকে আমি। সবাই যার যার দেশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সিভিল সার্ভিস অফিসার…
যা হোক, নবীনবরন অনুস্ঠানের শুরুতে এই কোর্সের প্রধান সমন্বয়ক সংক্ষিপ্ত ভাষন দিলেন। সংক্ষিপ্ত ভাষনের পরেই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। প্রথমে হলো একটি হিন্দি গান। ৭ম ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী গাইল। তারপর হলো একটি তেলেগু গান। তারপর আরও একটি জনপ্রিয় হিন্দি গান। তারপরে একটি গুজরাটি গান। তারপরে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় একটি নাচ…
তারপর শুরু হলো ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পরিচয় পর্ব। নিয়ম হলো- যার নাম ঘোষনা করা হবে, তাকে স্টেজে যেয়ে পরিচয় দিতে হবে এবং তারপর অবশ্যই কিছু না কিছু একটা পারফরম করতে হবে। পারফরম না করা পর্যন্ত নিস্তার নেই। পারফরম করা শেষ হবে তারপর তাকে একটি গিফট দিয়ে বরন করে নেওয়া হবে। অনেকটা ওপেন র্যা গ দেওয়ার মতো।
নাগাল্যান্ড স্টেটের একটা মেয় ভাঙ্গা-ভাঙ্গা ইংরেজীতে নিজের পরিচয় দিলো। তারপর যেই তাকে বলা হলো কিছু একটা পারফরম করার জন্য তখন দেখলাম লজ্জায় চোখ-মুখ লাল হয়ে গিয়েছে… যতই বলছে সে কিছু জানেনা ততই তাকে আরও জোর করা হচ্ছে। অবশেষে মেয়েটি হিন্দি গানের মিউজিকের সাথে নেচে তারপরে নিস্তার পেল। হাততালিতে সমগ্র অডিটোরিয়াম যেন ফেটে যাবে মনে হলো.. কারও নিস্তার নেই্। সবাই কিছু না কিছু একটা পারফরম করছে। কেউ ব্রেক ড্যান্স দিচ্ছে। কেউ গান করছে। কেউ সিনেমার ডায়ালগ আওরাচ্ছে… কেউ বা পারফরম করার সময় তাদের বন্ধুদের ইনভাইট করছে, তারপর একসাথে পাফরম করছে… গুজরাটের একটি ছেলে অন্য বন্ধুদের স্টেজে নিয়ে হিন্দি গানের সাথে দারুন এক ড্যান্স উপহার দিলো….
এক সময় সাউন্ড সিস্টেমে ঘোষনা এল আমার নাম। আমি মাইক্রোফোন হাতে স্টেজে উঠে গেলাম। পরিচয় দিলাম, তারপর আমার বন্ধুর লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করলাম….
“ যদি মরে যাই, ভেসে যাই,
কালের স্রোতে;
একটি হাস্নাহেনা, আর একটুকরো চাঁদ,
যেন শিয়রে জেগে থাকে……”

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×