somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: ভয় -০৪

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১ম পর্ব -  Click This Link

৩য় পর্ব - Click This Link

বীথি তাকিয়ে দেখলো কাজের লোক ছাড়া আর কাউকে দেখা যাচ্ছে না বাড়িতে। আসলাম খান  একজন কাজের লোককে বললেন নাশতা রেডি করতে। চোখ ধাঁধানো বিশাল হলঘর পেরিয়ে আসলাম খান এগিয়ে গেলেন সিঁড়ি দিকে। বীথিও মাথা নিচু করে অনুগত ভৃত্যের মত এগিয়ে চলেছে আসলাম খানের পিছু পিছু। আসলাম খান যথারীতি গাম্ভির্যের চাদরে মোড়া। বীথি নিজ থেকে কিছু যে বলবে তারও সাহস হচ্ছে না। সিঁড়ির বাঁকে  একটা বিশাল পোট্রেটে চোখ আটকে গেলো বীথির। আসলাম খান হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। উনার বাহুলগ্না হয়ে আছেন এক অসম্ভব সুন্দরী মহিলা। আসলাম খানের ডানহাতটা পরম মমতায় জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মহিলা। ছবিটা এতই জীবন্ত আর মহিলা এতই সুন্দরী যে বীথি সেখানেই সম্মোহিতের মত দাঁড়িয়ে পড়লো। মহিলা যে শাড়িটা পড়ে আছেন সেই শাড়িটা যেন ঠিক উনার জন্যই জন্যই তৈরি করা হয়েছে। যে গহনা পড়েছেন সেই গহনা যেন উনি ছাড়া আর কাউকেই মানাতো না। ঘাড় অবধি সিল্কি চুল গুলো যেন আহ্লাদিত ঐ ঘাড়ে পড়ে থাকার সুখে। আল্লাহ যেন অনেক সময় নিয়ে অনেক যত্নের সাথে একটু একটু করে নিখুঁত করে গড়ে তুলেছিলেন এই মানবিকে। আসলাম খান কয়েক সিঁড়ি উপরে উঠে পড়েছিলেন। বীথি যে নিচেই দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটা তিনি খেয়াল করননি। খেয়াল হতেই নিচে ফিরে তাকালেন। বীথিকে এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবার নেমে এলেন বীথির কাছে।

---চলো বীথি।

বীথি যেন সম্বিৎ ফিরে এলো।

---ও আমার প্রথম স্ত্রী সুরভী। চলো এবার।
বলে আবার সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলেন আসলাম খান। বীথি আসলাম খানের মুখে "প্রথম স্ত্রী" শব্দটা শুনে চমকে উঠলো। "প্রথম স্ত্রী" মনে মনে আবার ও আওড়ালো শব্দটা। তারমানে কী বীথি উনার দ্বিতীয় স্ত্রী? ভাবতে ভাবতেই বীথি অনুসরণ করলো আসলাম খানকে। তার মানে কী উনি বীথিকে স্ত্রী মানেন? ঠিক তখনই বীথির সামনে ভেসে উঠল ঘাড়ের উপর আহ্লাদি সিল্কি চুল এলিয়ে পড়ে থাকা সুরভীর মোহনীয় চেহারাটা। নিজের অজান্তেই বীথির হাত চলে যায় ওর তেল চিটচিটে টাইট করে বেঁধে রাখা লম্বা বেণীটায়। কোথায় ঐ সুরভী আর কোথায় ও। ঐ মহিলার পরিচারিকা হওয়ার যোগ্যতাও বোধ হয় ওর নেই। বিদ্রুপের একটা হাসি ফুটে উঠলো বীথির ঠোঁটে। যেন নিজেই নিজেকে বিদ্রুপ করছে ও। ঠিক তখনই সারে সারে  দাঁড়িয়ে থাকা কামরাগুলোর রাজকীয় দরজাগুলো একে একে পেরিয়ে একটা দরজার সামনে এসে থামলেন আসলাম খান এবং ফিরে তাকালেন বীথির দিকে। বীথিকে হাসতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,

---কী ব্যাপার, একা একা হাসছ যে?
বীথি চমকে উঠে আবার নিজেকে সামলে নিয়ে বোকার মত হেসে বলল,
---কই না তো, স্যার।

আসলাম খান কামরার দরজাটা খুলতে খুলতে বললেন,

---স্যার ডাকাটা এবার বন্ধ করা যায় না?
বীথি আবার চমকে উঠে বলল,
---তাহলে কী বলে ডাকবো স্যার।
---এই মেয়ে এভাবে কথায় কথায় চমকে উঠ কেন? আমি বাঘ না ভালুক?
মৃদু ধমকে উঠলেন আসলাম খান। ধমক খেয়ে বীথি কিছুটা লজ্জা পেলো। আসলাম খান আবার বললেন,
---মনে করো আমরা এখন থেকে বন্ধু। আসলাম বলেই ডাকবে। আর যদি এত বয়স্ক মানুষকে নাম ধরে ডাকতে দ্বিধা হয় তবে কিছুই ডাকতে হবে না।

    আবার সেই আন্তরিক কণ্ঠ, আবার ফিরে এসেছে সেই বন্ধুর মত সহানুভূতিশীল মানুষটি। বীথি কিছুতেই বুঝতে পারে না কোন মানুষটা আসল। সেই গাম্ভির্যের চাদরে মোড়া লোকটা নাকি এই আন্তরিক বন্ধুসুলভ মানুষটা।
---এই মেয়ে বার বার কোথায় ডুবে যাও। এত কী ভাবছ বলো তো।

এবার আসলাম খানের মুখে এই মেয়ে সম্মোধনটা মোটেই ভাল লাগলো না বীথির। ও কি ছোট্ট বালিকা নাকি? ওর আঠারো বছর বয়স হয়ে গেছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও এখন। তাছাড়া ছোটখাটো সুন্দর একটা নাম আছে ওর। নামটা ধরে ডাকা যায় না বুঝি! বীথির অভিমান হলো। ও চুপ করে থাকলো। কিছু বলল না। আসলাম খান ওর অভিমানটা ধরতেও পারলেন না।

    কামরাটা অনেক বড়। কী সুন্দর চকচকে পরিপাটি সবকিছু। আসলাম খান বললেন,
---এটা তোমার কামরা। দেখো পছন্দ হয় কী না। না হলে অন্য কোন কামরা বেছে নিতে পারো। অনেকগুলো ঘর খালি পড়ে আছে এ বাড়িতে।
---না না স্যার। লাগবে না। এটাই অনেক সুন্দর।

বীথির মুখে স্যার ডাক শুনে ঠাণ্ডা চোখে তাকালেন আসলাম খান। বীথি নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি বলে উঠলো,

---একটু সময় লাগবে।
আসলাম  খান একটু  হেসে বললেন,
---আচ্ছা, ঠিক আছে। কিন্তু বেশি সময় দেয়া যাবে না।
বীথি হেসে মাথা নেড়ে সায় দিলো।

---ফ্রেশ হয়ে নাও। নাশতা খাওয়ার জন্য আবার নিচে যেতে হবে।
বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন আসলাম খান। বীথি বাথরুমে ঢুকে দেখলো বাথরুমটাও বিশাল। সবকিছু বড় বেশি চকচকে এখানে। এত চাকচিক্যের মাঝে নিজেকে বড় মলিন লাগছিল ওর। তাই ভাল করে শ্যাম্পু করে গোসলটা সেরে নিলো। গোসলের পর অনেকটাই ফ্রেস লাগছিল। ভেজা চুল ছেড়ে দিয়ে ফ্যানের নিচে শুকানোর চেষ্টা করছিল বীথি। অনেক লম্বা চুল ওর শুকাতে অনেক সময় লাগবে। মনে মনে চুলটা কেটে ফেলার চিন্তা করলো ও। একদম ঘাড় অবধি। আজকাল এত লম্বা চুল কেউ রাখে নাকি? দরজায় কেউ নক করতেই ভাবনায় ছেদ পড়লো বীথির। ভেজা ছড়ানো চুলগুলোকে  এক পাশে নিয়ে এসে দরজাটা খুলে দিলো ও। আসলাম খান ভেতরে আসলেন। বীথির ডানপাশে এলিয়ে রাখা চুলগুলোর দিকে সপ্রশংস দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
---এত সুন্দর লম্বা চুল তোমার? আজকাল তো এমন চুল দেখাই যায় না।

বীথি ভীষণ লজ্জা পেলো। কিছু না বলে মুখটা নামিয়ে নিলো ও। আসলাম খান বললেন,
---হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুলটা শুকিয়ে নাও।
---আমার তো হেয়ার ড্রায়ার নেই।
---তাতে কী?

বলে আসলাম খান ড্রেসিং টেবিলটার দিকে চলে গেলেন। তারপর ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা হেয়ার ড্রায়ার বের করে এনে বীথির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,
---এই নাও।
বীথি ইতস্ততভাবে হেয়ার ড্রায়ারটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আসলাম খান জিজ্ঞেস করলেন,
---কী ব্যাপার? চুলটা শুকিয়ে তাড়াতাড়ি চলো নিচে।
---হেয়ার ড্রায়ার কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তাই তো জানি না।
বীথি মাথা নিচু করে আস্তে করে বলল। আসলাম খান নিজের ভুল বুঝতে পেরে বললেন,
---ওহ তাই তো। আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। এসো।
বীথি বিস্মিত হয়ে বলল,
---আপনি?
---হ্যাঁ আমি। কোন সমস্যা নেই তো তোমার।
বীথি মাথা নেড়ে না বলল। আসলাম খান একটা চেয়ার এনে তাতে বীথিকে বসতে বললেন। তারপর কী করে হেয়ার ড্রায়ার অন অফ করতে হয় দেখিয়ে দিলেন। তারপর আলতো করে বীথির চুলগুলো একহাতে ধরে অন্য হাতে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল গুলো শুকোতে লাগলেন। মনে হচ্ছিল খুব যত্নের সাথে তিনি কাজটা করছেন। বীথি এক রাশ লজ্জা আর একরাশ ভালো লাগা বুকে নিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে রইলো। চোখ দুটো খুলতে ওর ভয় হতে লাগলো। ওর মনে হল চোখ খুললে এখনই এই ভাল লাগাটা মিলিয়ে যাবে। এই সুখটা ও হারিয়ে যেতে দিতে চায় না কোনমতেই। আসলাম খান চুল শুকানো হয়ে গেলে বললেন,
---এই তো হয়ে গেলো।
বীথি চোখদুটো বন্ধ করেই রেখেছিল কোন কথা না বলে। আসলাম খান আবার বললেন,
---বীথি হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করে রেখেছ কেন, পাগল মেয়ে। চোখ খোল। বীথি চোখ খুলল। সেই অভিমান আবার এসে ভর করল ওর মনে। আসলাম খানের কাছে ও শুধুই একটা বাচ্চা মেয়ে। আর কিছু না। ওর চোখের কোণে জল জমলো। ও মুখটা নিচু করে রাখলো। জলটা মুছতে পারছিল না বীথি, জল মুছতে গেলেই আসলাম খান সেটা দেখে ফেলবেন। সেটা ভিষণ লজ্জার ব্যপার হবে ওর জন্য। চোখর জলটা বাতাসে শুকিয়ে যেতেই বীথি মুখ তুলে তাকালো। তাকিয়ে দেখলো আসলাম খান মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছেন ওর দিকে। বীথি লজ্জা পেয়ে মুখটা ঘুরাতেই আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে পেল। একরাশ ফুলানো ফাঁপানো লম্বা রেশমি চুল ওর সমস্ত শরীর ঢেকে ফেলেছে। ও নিজেও নিজেকে দেখে চিনতে পারলো না। আসলাম খান মুগ্ধ কণ্ঠে বললেন,

---দেখ, তোমাকে দেখতে ঠিক মেঘ বালিকার মত লাগছে।
এই কথা শুনে বীথির মনে রিমঝিম রিমঝিম নূপুর বাজতে লাগলো। আসলাম খান বীথির মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন কী না বুঝা গেলো না। তিনি স্বাভাবিক কণ্ঠেই বললেন,
---শোন বীথি, যখন তোমার যাওয়ার সময় হবে তখন চলে যাবে। কিন্তু এই মুহূর্তে এই বাড়ির সব কিছুতে তোমার অধিকার রয়েছে। তোমার যখন যা প্রয়োজন নিয়ে নিবে। কাউকে জিজ্ঞেস করারও প্রয়োজন নেই। মনে করো এই বাড়িটা এখন তোমারই। কোন দ্বিধা রাখবে না মনে।

“যখন তোমার যাওয়ার সময় হবে তখন চলে যাবে।" কথাটা যেন প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো বিথির কানে। মনে হল কেউ যেন ওর দুই গালে দুইটা কষে থাপ্পড় মারলো। ও পাগলের মত কী সব ভাবতে শুরু করেছিল। কী করে ভুলে গেলো বীথি এখানে ও মাত্র কদিনের অতিথি। এই লোকটার সাথে ওর আকাশপাতাল তফাত। উনি কেবল দয়া করে ওকে এখানে নিয়ে এসেছেন। এসব কিছু শুধুই করুণা। এই লোকটা ওকে দুটো ভাল কথা বলেছে। এতেই ও আকাশকুসুম কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতে বসেছিল। নিজের মনের এই লাগামহীণ কল্পনায় নিজেকে তিরস্কার করতে লাগলো বীথি অবিরত।

      ওরা খাবার টেবিলে এসে বসলো। বিশাল টেবিলে নাশতার আয়োজন দেখে চোখ চড়ক গাছ হয়ে গেলো বীথির। শুধু নাশতায়ই এত খাবার, তাহলে দুপুরের খাবারে কত খাবার দেয়া হবে। অন্তত পাঁচ ছয় জাতের  ফল, নানান রকমের জুস, পরোটা, বিরিয়ানি, ব্রেড-বাটার আরো কত কী যা বীথি কোনদিন চোখেও দেখেনি!

টেবিলের দুই পাশে  দুজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজন পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের ছেলে। নাম সফিক। যখন যেটা লাগে সেটা এগিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু কোনদিনই তার কোনকিছু এগিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হয় না। আসলাম খান যা দরকার তা নিজেই নিয়ে নেন। তবু এই দাঁড়িয়ে থাকাটা তার চাকরির অংশ।  আরেকজন বয়স্ক লোক, নাম বদরুল মিয়া। উনি প্রধান বাবুর্চি। তিনিও খাবার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। এখানে তার তেমন কোন কাজ নেই তবু এটা তারও এটা কাজের অংশ, এই দাঁড়িয়ে থাকাটা। বীথির কাছে ব্যাপারটা হাস্যকর মনে হল। মনিবেরা খেয়ে যাবে আর কাজের লোকেরা পাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে এটা কোন ধরণের বড়লোকী ব্যাপার কে জানে? বীথির ব্যাপারটা মোটেই ভাল লাগছিল না। ও দেখলো আসলাম খান নির্লিপ্তভাবে এক পিস ব্রেড হাতে নিয়ে তাতে বাটার লাগিয়ে খেতে লাগলেন। হয়তো ছেলেবেলা থেকেই এই ব্যাপারগুলোতে তিনি অভ্যস্ত। বরং এরা পাশে দাঁড়িয়ে না থাকলে হয়তো তিনি খেতেই পারেন না। বীথি হাত গুটিয়ে বসে রইল। কিছুক্ষণ পর আসলাম খান লক্ষ্য করলেন বীথি কিছুই খাচ্ছে না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
---কী ব্যাপার? খাচ্ছ না যে।
---আমার খিদে নেই। আপনি খান।
আসলাম খান ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। উনি ইশারায় বদরুল মিয়া আর সফিককে চলে যেতে বললেন। ওরা চলে গেল। বীথির আসলে খিদা লেগেছিল খুব। সকাল থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। ও আসলাম খানের প্রতি কৃতজ্ঞবোধ করলো। আসলাম খান এই অল্প সময়ে ওকে অনেকটাই বুঝে গেছেন।
---কী হল? এবার খাও তোমার যা ইচ্ছা। ওরা চলে গেছে।
বীথি সকালে ভাত খেয়ে অভ্যস্ত। ঐসব ব্রেডট্রেড এ ওর পেট ভরবে না। ও তাই বিরিয়ানির ডিশ থেকে দুই চামচ বিরিয়ানি নিলো। কিন্তু বেশি খেতে পারলো না। ওর মনে হল এসব রাজকীয় খাবার যতই মজাদার হোক না কেন সাদা মোটা চালের ভাতের মত মজার খাবার বোধ হয় এই পৃথিবীতে আর একটাও নেই।

খাওয়া শেষে আসলাম খান সারা বাড়ি হেঁটে হেঁটে দেখাচ্ছিলেন বীথিকে।  তিন চারজন কাজের লোক ঘর দোর পরিষ্কার করছিল। কিন্তু সবই পুরুষ। কোন মহিলা কাজের লোক এই বাড়িতে নেই। বীথির কাছে ব্যাপারটা বড় বিচিত্র মনে হল। ও আসলাম খানকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন, এই নিয়মই চলে আসছে অনেকদিন ধরে। মেয়েদের এ বাড়িতে কাজে রাখা হয় না। 

বীথি গুণে দেখলো এই বাড়িটাতে প্রায় তেইশ চব্বিশটা রুম আছে। এত বিশাল একটা বাড়িতে থাকার লোক মাত্র একজন। শুধু আসলাম খান। এখন বীথিকে নিয়ে হল দুজন। কাজের লোকেরা কেউই এ বাড়িতে থাকে না। বাড়িটির পাশেই একটা বড় সার্ভেন্ট কোয়ার্টার আছে। ওরা সবাই ওখানেই থাকে। রাত হলে ওরা ওখানে চলে যায়। সবকটা রুমের ভেতর খুলে খুলে দেখালেন আসলাম খান। শুধু একটি রুম না দেখিয়েই চলে যাচ্ছিলেন। বীথি তখন রুমটা দেখতে চাইলো। আসলাম খান সাথে সাথে সেই গাম্ভির্যের চাদরে নিজেকে মোড়ে নিলেন। গম্ভীর কণ্ঠে কিছুটা উদাসভাবে  বললেন,
---এই রুমটা তালাবদ্ধ থাকে। এটা খোলা যাবে না।
বীথি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো,
---এটা কার রুম?
গম্ভীর কণ্ঠে অন্যদিকে তাকিয়ে আসলাম খান উত্তর দিলেন, "সুরভীর"।

চলবে

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৪২
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×