somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রসাদ নিয়েও এই আধুনিক যুগে রাজনীতি হয়!

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাত ঠিক ১২টায় বাসার সামনের মন্দিরে সাউন্ডবক্স একদম অফ! বাহ! এটাই তো চাই! অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই পুলিশ-প্রশাসনকে। নেশা করে সারারাত নাচানাচিটা কোনো ধর্মই সমর্থন করে না।
.
কিন্তু প্রসাদ নিয়েও রাজনীতিটা ভালো লাগলো না। এবারও আমাদেরকে পূজার মিটিংয়ে রাখা হয়নি। আমাদের মত নেওয়া হয়নি৷ চাঁদাও নেওয়া হয়নি। যাকে বলে একঘরে করে রাখা। মা উপোস থেকে নিজের ভোগ দেওয়া ডাবের জল খেয়েই উপোস ভেঙেছেন। পরশু রাত থেকে না খেয়ে থেকে গতকাল রাত ৩টার দিকে পূজার পর উপোস ভাঙেন। সকালে উঠে স্কুলের বাচ্চাদের ডাকতে যাওয়ার আগে গেটে শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে মা দেখে, কমিটির দুজন সদস্য খিচুড়ি প্রসাদ দিতে এসেছেন। অন্য সব বাড়িতে দিয়েছেন, তাই আমাদের বাসাতেও। কিন্তু এটা নিয়ে আবার কথা হবে জেনেই মা প্রসাদ ফিরিয়ে দিতে চাইলেন, বললেন, 'আমাদের থেকে তো পূজার চাঁদা নেয়নি, খিচুড়ি নিলে এটা নিয়ে কটূকথা হবে। থাক, তোমরাই খাও'।
.
কিন্তু তাঁরা কমিটিতে থাকলেও বিবেকবান মানুষ, বাইরের কেউ আসলেও তো প্রসাদ দেওয়া হয়, তাই অনেক অনুরোধ করে মাকে রাখতে বাধ্য করলেন। তাঁরা হয়তো বুঝতে পারেননি, আমার প্রতিবেশীরা সারাক্ষণ কান পেতেই থাকে। তাদের মাধ্যমে সেটা পূজা উদযাপন কমিটির কানে গেছে। তারপর কমিটির কর্তাব্যাক্তিরা এটা নিয়ে এলাকা মাথায় করে 'লজ্জা করে না চাঁদা না দিয়ে প্রসাদ খায়!' ধরনের কথাবার্তা বলতেও পিছপা হয়নি বলে জেনেছি। সেই দুজন মুরুব্বির সাথে নাকি অনেক কিছু হইছে এবং কমিটির মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমাদেরকে প্রসাদ দেওয়ায় ক্ষমাও চাইতে হয়েছে! অবশ্য যা নিয়ে এতো কথা, ঐ প্রসাদের প্যাকেট মা গিয়ে পরে ফেরৎ দিয়ে এসেছে। তারপর আবার মন্দিরের স্কুলের কর্তাদের সামনে মাকে মিথ্যা কথা বলে আরেকবার অপমান করা হয়েছে। স্বভাবতই মায়ের অপমান সন্তান সইতে না পেরে প্রতিবাদ করেছে।
.
এই সমাজটা একদম পঁচে গেছে। এখানে বসবাস করা খুব কষ্টকর। তারপরেও বাবার স্মৃতি মনে করে থাকি, যাওয়ার আর জায়গাও তো আপাতত নাই। অন্য কোথাও বাড়ি করার সামর্থ নাই। প্লাবণ গাঙ্গুলি নামে আমার এক বছরের বড় বন্ধুসুলভ এক বড় ভাই এখানে ছিলেন, আমরা একসাথে বড় হয়েছি, দেশ সেরা বিতার্কিক ছিলেন। এসএসসিতে তিনি স্ট্যান্ড করেছিলেন। এখন একটা এনজিওতে আছেন। তিনি নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা-মাকে নিয়ে সামনেই হাউজিং এস্টেটে গিয়ে বাড়ি করছেন আর পাশেই ভাড়া থাকেন। এখন আমাকেও এখান থেকে সরাতে পারলে কাদের লাভ? আমাদের মতো মেধাবি ছেলেরা এখানে থাকলে কাদের ক্ষতি? কারা চায় না এটা শিক্ষিত ভদ্রলোকের এলাকা হোক, নেশামুক্ত সুন্দর একটা সমাজ এখানে গড়ে উঠুক?
.
এমন একটা সমাজই তো চাই, যে সমাজ কুসংস্কার নেশা পরশ্রীকাতরতা হিংসা বিদ্বেষ ছেড়ে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ভ্রাতৃত্ব বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানচর্চার উদারপন্থার দিকে হাঁটবে। নতুন প্রজন্মের ছেলেরা পড়ালেখা করবে নেশার আড্ডায় না গিয়ে, নিজের উন্নত ভবিষ্যত নিজেই গড়বে। বাজে কাজে সময় নষ্ট না করে দেশের ও নিজের উন্নয়নে সময় কাটাবে।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×